নিজস্ব প্রতিবেদক: বেড়াতে গিয়ে চাপাতির কোপে মাথায় ৬টি সেলাই নিয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন আব্দুল কাদের। এদিকে পেটে লাথি দিয়ে তারই ফুফু আসিয়া নামের এক অন্তঃস্বত্তার ভ্রুন হত্যারও অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় পূর্ব শত্রুতার জেরে শ্যমনগরের প‚র্ব কৈখালীতে শরিফুল ইসলামের বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত আব্দুল কাদের শহরের ইটাগাছার ন‚র ইসলামের ছেলে। কাদের সাতনদীকে জানান, গতকাল (শুক্রবার) আমার ফুফুর বাড়িতে দাওয়াত ছিলো। তাই শ্যমনগরের পূর্ব কৈখালীতে আমার ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে যাই। দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষে আমরা সুন্দরবন দেখতে যাই। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখি কিছু লোকজন আমার ফুফুকে মারধোর করছে। এসময় আমি ঠেকাতে গেলে তাদের মধ্য থেকে ইস্রাফিল কয়াল নামের এক ব্যক্তি চাপাতি দিয়ে আমার মাথায় কোপ মারে। আরো কয়েকজন আমাকে লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। আমার ফুফু আসিয়াকেও বেধরড় মারপিট করে তারা। আমার মালিকানাধীন সাতক্ষীরা ল-১২৭৮৮০ নং মোটরসাইকেল (Yamaha FZ- V3) ভাংচুর করে। পরে তারা আমার মোটর সাইকেলটি নিয়ে যায়। আমাদের হাসপাতালে যেতে না দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে ইস্রাফিলের নেতৃত্বে ওই সন্ত্রাসী বাহিনী। পরে আমার বাবা ট্রিপল নাইনে ফোন দিলে পুলিশ সদস্যরা যেয়ে আমাদের উদ্ধার করে। এসময় তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় মোটরসাইকেলটি উদ্ধার হয়।
নির্যাতিতা আসিয়া বেগমের স্বামী শরিফুল ইসলাম সাতনদীকে জানান, প‚র্বের কিছু বিষয় নিয়ে আমার মামা অজিবর সরদারের সাথে ই¯্রাফিল কয়াল ও জাহাঙ্গির কয়ালদের সাথে বিরোধ আছে। তাদের অপকর্মের বিষয়ে আমি নানা ভাবে আজিবর সরদারকে সহায়তা করার অপরাধে একাধিক মিথ্যা মামলায় আমাকে জড়িয়েছে পর্যন্ত। অথচ তাদের সাথে আমার কোন বিরোধ ছিলো না। শুক্রবার কোনরকম উষ্কানি ছাড়াই আমার বাড়িতে হামলা করে প‚র্ব কৈখালীর হোসেন কয়ালের ছেলে ইস্রাফিলের নেতৃত্বে তার ছেলে আশিক কয়াল, জলিল সরদার ও তার ছেলে জাহিদুল সরদার, রহমত উল্লাহ সরদার, হোসেন কয়ালের ছেলে জাহাঙ্গীর কয়াল ও মিকাইল কয়াল, মোরশেদ কয়ালের ছেলে মিজান কয়াল, আবুল হোসেনের ছেলে মিয়ারাজ, আনোয়ার হোসেন, আনারুল, আজাদ গাজী। এসময় ইস্রাফিল কায়ল আমার অন্তঃস্বত্ত¡া স্ত্রীকে লাথি দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। বাকিরা সবাই মিলে আমার স্ত্রীর পেটে ও বুকে লাথি মারতে থাকে। এসময় আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা আমার স্ত্রীর ভাগ্নে আব্দুল কাদের ঘটনাস্থলে পৌছে তার ফুফুকে বাচাতে গেলে তাকেও সন্ত্রাসী বাহিনীর সবাই মিলে মারতে থাকে। একপর্যায়ে ইস্রাফিল বাড়ি থেকে চাপাতি নিয়ে এসে কাদেরর মাথায় কোপ দেয়। কাদেরের মাথা কেটে রক্ত ঝরতে থাকে। খবর পেয়ে আজিবর মামা আমাদের বাঁচাতে গেলে তাকেও মারপিট করে তারা। তাদের লাঠির বারিতে মামার ডান হাত ফুলে গেছে, ভেঙ্গেও যেতে পারে। পরে পুলিশ যেয়ে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়।
শ্যামনগরের প‚র্ব কৈখালী গ্রামের রহমতুল্লাহ সরদারের ছেলে আজিবর সরদার সাতনদীকে জানান, আমি খবর পাই শরিফুলদের বাড়িতে ইস্রাফিলরা হামলা করেছে। তারাতাড়ি তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখি শরিফুলের স্ত্রীকে মাটিতে ফেলে লাথি মারছে ইস্রাফিল, আশিক, জলিল, জাহিদুল, জাহাঙ্গীর, মিকাইল, মিজানুর সহ বেশ কয়েকজন তাদের মারছে। ইস্রাফিল চাপাতি দিয়ে কোপ দিলে শরিফুলদের বাড়িতে বেড়াতে আসা আব্দুল কাদের আহত হয়। তাকে উদ্ধার করতে গেলে আমাকেও বেধরক মারপিট করে তারা।
গুরুতর আহত থাকায় এ বিষয়ে অন্তঃস্বত্ত্বা আছিয়ার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আহতদের উদ্ধারকারী পুলিশ কর্মকর্তা রাব্বি সাতনদীকে জানান, ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করি। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত আছে। তবে কোন পক্ষ থেকে এখনো কোন অভিযোগ করা হয়নি।