মো.হাবিবুর রহমান, সাতক্ষীরা: কলারোয়া থানা পুলিশের অভিযানে দ্বিতীয় দফায় জেল হাজতে গেলেন পৌরসদরের গদখালী গ্রামের নিয়ামত আলী সরদারের ছেলে ছিফাতুল্লাহ সরদার। গেল বছরের নভেম্বর মাসে সিআর ৭১/২১ মামলায় তার স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন ও থানা পুলিশের হাতে আটক হয়। মামলা গ্রেফতারের বিষয়ে ছিফাতুল্লাহর ভগ্নীপতি ইদ্রিস ঢালী জানান- ছিফাতুল্লাহ একজন ভূমিদস্যূ ও সন্ত্রাসী ২০২১ সালে আমার স্ত্রী আমার শশুরের জমিতে ঘর করতে গেলে সে কিছু সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে আমাদের নির্মানকৃত ঘরটি ভেঙে ফেলে আমার স্ত্রী ফাতেমা, আমার শালী আমিরন নেছা ও আমি বাধা দিতে গেলে ছিফাতুল্লা সরদার ও তার স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন এবং কিছু সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রের সাহায্যে আমাদের কুপিয়ে আহত করে আমরা দীর্ঘ ১০ দিন আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম, পরবর্তীতে এ ঘটনায় আমরা কোর্টে মামলা দায়ের করি বর্তমানে সেটি চলমান। এছাড়াও আমাদের জমি জালিয়াতির মাধ্যমে তারা বিক্রি করেছে জমি ফেরতের দাবীতে তাদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আদালতে কয়েকটি মামলা করা থাকলেও এই ভূমিদস্যু ছিফাতুল্লাহ সরদারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনও শাস্তি না হওয়ায় সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আমাদের আরও জমি বিক্রয় করবে এবং আমাদেরকে মারপিট করবে বলে আশফালন করে বেড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন ছিফাতুল্লার বাবা নিয়ামত সরদারের মোট ভিটে সম্পত্তি ৬০ শতাংশ ৩ ভাই ও দুই বোন থাকা সত্তেও কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে সে একা ভিটেবাড়ীর ২৩ শতাংশ জমি একই গ্রামের দোস্তী মাহমুদের কাছে ১৮ শতাংশ এবং আনোয়ার মাষ্টারের কাছে ০৫ শতাংশ জমি বিক্রয় করে দিয়েছেন। যেখানে তার জমির ভাগ হবে ১৫শতাংশ সেখানে ২৩ শতাংশ বিক্রির পরেও অবৈধভাবে ঘরবাড়ী করে আরও ৫ শতাংশ জমির ভিটেমাটি ভাইবোনদের ফাকি দিয়ে দখল করে রেখেছেন। কলারোয়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পৌরসদরের গদখালী গ্রামের আবু স্দ্দিীক। পেশায় একজন ব্যবসায়ী ২ ছেলে দুজনেই সরকারী চাকরী করেন ঢাকাতে তারা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত। তিনি কলারোয়ার বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব উপাধ্যক্ষ ফারুক আহম্মেদ এর নিকট হতে ঝিকরা মৌজার গদখালীতে ০৫শতাংশ জমি খরিদ করেন। এই জমি খরিদ কে কেন্দ্র করে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পৌরসদরের গদখালী গ্রামের আবু স্দ্দিীকের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছেন ভূমিদস্যূ ছিফাতুল্লাহ সরদার। এ বিষয়ে আবু স্দ্দিীক জানান- ০২ বছর পূর্বে তিনি বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের তৎকালীন সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা উপাধ্যক্ষ ফারুক আহম্মেদ এর নিকট হতে গদখালীতে ০৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। যে জমিটা ফারুক আহম্মেদ ছিফাতুল্লাহ সরদারের মাতার নিকট থেকে ক্রয় করেন। তিনি বলেন জমি ক্রয় করার পরে আমি জমিতে নির্মান কাজ শুরু করলে ছিফাতুল্লাহ সরদার গদখালী ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতাকে সঙ্গে নিয়ে নিজেকে ০৩নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা দাবী করে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আমার কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। তিনি নিজেকে সঠিক দাবী করে ছিফাতুল্লাহ সরদার কে কোনও চাঁদা দিতে পারবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন। দাবীকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে উক্ত ছিফাতুল্লাহ সরদার আমার নামে থানা, পৌরসভা সহ ০৬ জায়গায় মিথ্যা দরখাস্ত দেই। এখানেই শেষ নয় পরবর্তীতে সে কোর্টে ও মামলা করে সবগুলো দরখাস্ত মিথ্যা প্রমান হয় কোর্টের মামলার রায় ও আমার পক্ষে আসে সেজন্য সে বেপরোয়া হয়ে আমার বাড়ীতে কাজ করতে আসা মিস্ত্রীদের মারপিট করে কিছু স্থানীয় সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে। তার বাড়ীর পাশ দিয়ে পৌরসভার রাস্তা দিয়ে আমার বাড়ীতে আসতে হয় এখনো অনবরত সে ও তার পরিবারের লোকজন কয়েকবার আমার ওপরে হামলা করেছে আমার বাসাবাড়ীর মালামাল আনতে গেলে আমার ভ্যানওয়ালাদের ও তারা মারপিট করে। তার দাবীকৃত টাকা না পেলে সে যে কোনও সময় আমার সামাজিক, ব্যাবসায়িক এমনকি আমার ঘরবাড়ীর পর্যন্ত সে ও তার পরিবারের লোক ক্ষতিসাধন করতে পারে। সে মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা এবং নিজেকে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতা দাবী করে সে বিভিন্ন সামাজিক ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে চাঁদাবাজি এবং ভূমিদস্যুতার মতো অপকর্ম ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে বেড়াচ্ছে। তাকে তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি প্রশাসনের নিকট বিনীত আবেদন করেন। তিনি বলেন প্রকৃতপক্ষে এই ছিফাতুল্লাহ একজন ভূমিদস্যু ও রংবাজ সে কোনও ব্যবসা কিম্বা কোনও কাজ তার বয়সকালে করে নাই, সারাজীবন আমরা দেখছি সে মানুষের নামে কোর্টে ও বিভিন্ন অফিস আদালতে মিথ্য দরখাস্ত করে হয়রানী করে এবং টাকার বিনিময়ে সে বিভিন্ন লোকজনের মামলায় সাক্ষ্য প্রদান করে। কিছুদিন পূর্বে তিনি কুশোডাঙ্গা পানিকাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হুসাইন আক্তারের নিকট থেকে কিছু সন্ত্রাসী আর সিফাতুল্লা মিলে ১০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছে। এই সিফাতুল্ল্হা রাঙামাটি তে কিছুদিন আত্নগোপেনে ছিলেন সেখান থেকে এক ব্যবসায়ীর ৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আবার কলারোয়া তে পালিয়ে আসে। এ্ সিফাতুল্লাহ নিজেকে কখনো জমি বিক্রির দালাল, কখনো বিদেশে লোক তোলা দালাল, কখনো মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার নাম করে মানুষের কাছ থেকে প্রতারনা করে। প্রতিদিন সকালে তার কাজ হলো কোর্টের বারান্দায় মিথ্যা সাক্ষীর জন্য দাড়িয়ে থাকা। তার বিরুদ্ধে জেল ছাড়া আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু সিদ্দীক, ভাই মোনায়েম সরদার, ভগ্নীপতি ইদ্রিস ঢালী, বোন ফাতেমা খাতুন ও আমেরুননেছা। একইসঙ্গে তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট সকল কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এ বিষয়ে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুল আরেফিন জানান- আটককৃত আসামী পৌরসদরের গদখালী নিয়ামত আলী সরদারের ছেলে ছিফাতুল্লাহ সরদার কে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি ওয়াারেন্টভুক্ত অবস্থায় পলাতক ছিলেন। থানা পুলিশের চৌকস দল নজরদারির মাধ্যমে আটক করতে সক্ষম হয়। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান আছে বিজ্ঞ আদালতে।