আহাদুর রহমান জনি / লুৎফর রহমান মন্টু: বিশেষ গোয়েন্দা ইউনিটের তৎপরতায় গমের ভূষির ঘোষণায় আনা ৪০টন বাসমতি চাল আটক করেছে বিজিবি ও শুল্ক গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে ভোমরা স্থলবন্দর ট্রাক ইয়ার্ড থেকে বের হওয়ার পর শুল্ক ফাঁকি দেওয়া এ মালামাল আটকের ঘটনা ঘটে। পরে শুল্ক গোয়েন্দাদের অভিযানে আরও এক ট্রাক চাল আটক করা হলেও বাকি ৭টি বন্দর ছেড়ে গন্তব্যস্থলে রওয়ানা হয়।
সরজমিন ও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ভূষি আমদানির ঘোষণা দিয়ে বাসমতি চাল আমাদানি করে সাব্বির এন্টারপ্রাইজ। যার মূল আমদানিকারক হারু ঘোষ। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেট্রো ট-১৮-৫৮২৯ নং গাড়ি ট্রাক ইয়ার্ড থেকে বের হওয়ার পর বিশেষ গোয়েন্দা ইউনিটের তৎপরতায় আটক করা হয়। ট্রাকটি তল্লাশী করে ২৩,৯০,০৫২/- (তেইশ লক্ষ নব্বই হাজার বায়ান্ন) টাকা মুল্যের ৭৬৯ বস্তা ২৫.৯০০ = ১৯,৯১৭.১০০ কেজি ভারতীয় চাউল আটক করে বিজিবি। আরও একটি ট্রাক ইয়ার্ডের ভেতরে থাকায় সেটি আটক করে শুল্ক গোয়েন্দারা। বিজিবি কর্তৃক আটককৃত ভারতীয় চাউল সাতক্ষীরা কাষ্টমে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে গমের ভূষির ঘোষণায় কাস্টমের ট্রাক ইয়ার্ড থেকে বের হওয়া চালের একটি ট্রাক আটক হলেও এর ২৪টি সিরিয়ালের পূর্বের আরও একটি গাড়ি যার নং ঢাকা ১৮-৫৮২৯ সাব্বির এন্টারপ্রাইজের কথিত ভূষির ঘোষণায় বের হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে সেই ট্রাকেও ভুষির ঘোষণায় চাল বের হয়েছে। সাব্বির এন্টারপ্রাইজের কনসাইনমেন্টে ৯ট্রাক ভূষি আনা হয়। যার মধ্যেমাত্র দুইটি আটক হয়। যার দুুিটতেই চাল ছিলো। বাকি সাত ট্রাক চাল বন্দর ছেড়ে আগেই চলে যয়।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান সাতনদীকে জানান, ‘সাব্বির এন্টারপ্রাইজের কনসাইনমেন্টে ৯ট্রাক ভুসি আনা হয়। পরে গোয়েন্দারা জানতে পারে ৯ ট্রাক ভুসির বদলে ৯ট্রাক চাল আমদানি হয়েছে। কিন্তু ততক্ষনে বন্দর থেকে ৭টি ট্রাক চাল নিয়ে বের হয়ে যায়।’
বিশ্বস্ত একটি সূত্র থেকে জানা যায় গোয়েন্দাদের চাপের মুখে শুল্ক গোয়েন্দারা বন্দরে অবস্থানকৃত ট্রাকটি আটক করে।
অনুসন্ধানে জানা যায়,
ভারতীয় ট্রাকে পণ্য বন্দরের ট্রাক ইয়ার্ডে ঢোকার পর কাস্টম কর্তৃপক্ষ সেটি পরীক্ষা নীরিক্ষা করার পর ইয়ার্ড থেকে বের হয়। কিন্তু কাস্টম কর্তৃপক্ষ ভূষির ঘোষণায় আনা চাল পাওয়ার পরও ভূষি বলেই ছাড় করে। কাস্টম কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সহায়তা ছাড়া ৯ট্রাক চাল ভুসির ঘোষণায় আমদানি করা অসম্ভব। ভুষি প্রতি কেজি শুল্কসহ কাস্টম খরচ ১.৮টাকা। অন্যদিকে বাসমতি চালের কেজি প্রতি কাস্টম খরচ দাঁড়ায় প্রায় ২০টাকা। সে হিসেবে ৯ট্রাক চালে শুল্ক ফাঁকির পরিমান প্রায় ৩৪লক্ষটাকা। যার অর্ধেকেরও বেশি কাস্টম কর্মকর্তাদের মাঝে ভাগ বাটোয়ারা হয়। এ চিত্র শুধু একদিনের নয়। প্রতিদিনই এরকমটি ঘটছে। গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্যে একটি চালান আটকানো গেলেও এরকম রাজস্ব ফাঁকি দেয়া অনেক চালানই প্রতিদিন বের হয়ে যায়। কাস্টমের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের এহেন আচরণে দিন দিন ভোমরা বন্দর থেকে সরকারের রাজস্ব আহরণ কমছে। যা প্রভাব ফেলবে জাতীয় উন্নয়নে।