
হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ থেকে:
রাস্তার পুরাতন লক্ষ লক্ষ ইট বিক্রি নিয়ে চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য এবং সাধারণ জনগণ মুখোমুখি হয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়ে চলেছে। এলাকার সাধারণ ভুক্তভোগী জনগণের বক্তব্য রাস্তার লক্ষ, লক্ষ টাকার লক্ষ, লক্ষ পুরাতন ইট চেয়ারম্যান মেম্বাররা মিলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্যরা বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেরি বাঁধ সংস্কার কাজ চলছে। এখানে ইট উঠানোর ব্যাপারে উপজেলা জেলা প্রশাসন থেকে আমাদেরকে কোন নির্দেশনা ও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। যে কারণে ইট বিক্রি করে জনগণের মজুরির টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
এমনই ঘটনা ঘটতে থাকলেও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন কিছুই জানে না বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে প্রায় মাসব্যাপী সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের একেবারে সীমান্তবর্তী কালিন্দী নদী তীর ঘেঁষে বাগমারী, শিবপুর, সাতহালিয়া ৫/৬ মাইল এই এলাকা জুড়ে এমনই উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শুক্রবার বেলা ১১ টার সময় সরে জমিনে গেলে দেখা যায় উপক‚ল এলাকায় সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে কালিগঞ্জ, শ্যামনগর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থাৎ ওয়াবদার ভেরিবাঁধের সংস্কার কাজ চালাচ্ছে। উক্ত বাঁধের উপরে মানুষের চলাচলের জন্য এ,ডি,পি, কাবিখা, কাবি টা, সহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহায়তার প্রকল্প নিয়ে এই সমস্ত ভেড়িবাদের উপর মানুষের চলাচলের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকার প্রকল্প দিয়ে ইটের সলিং করা হয়। যে কারণে সীমান্তবর্তী রতনপুর ইউনিয়নে ৫/৭ কিলোমিটার ওয়াবদা ভেড়ি বাঁধে এর উপর দিয়ে ইটের সোলিং করন রাস্তা ছিল। রাস্তার উপরে ইট না সরিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাঁধ সংস্কার কাজ শুরু করলে ওয়াপদার রাস্তার ইট গুলো নেওয়ার জন্য দাবি তুলে এলাকার জনগণ। এর মধ্যে কিছু সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তি বাঁধ এলাকায় বসবাস করার সুযোগে রাস্তার ইট গোপনে তুলে নিয়ে লোপাট করে দেয়। পরবর্তীতে কোন নির্দেশনা ছাড়াই চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্যরা মিলে ৫/৬ কিলোমিটার মজুরি দিয়ে ইট তুলে নেয়। ইউনিয়ন পরিষদে মজুরির টাকা বরাদ্দ না থাকায় ইট বিক্রি করে মজুরিদের টাকা পরিশোধ করা হয়। এছাড়াও ওই সময় ওয়াপদার পাশে লক্ষ, লক্ষ টাকার গাছ বিক্রি করার টাকা বন বিভাগ নিয়ে গেলেও সব দোষ চেয়ারম্যানের ঘাড়ে চাপে। তবে সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় রাস্তার পাশে পুরাতন ইট স্তুপ করা থাকলেও বিক্রি করা ইট নিয়ে নানান বিতর্ক ও মুখোমুখি অবস্থানে ইউনিয়ন পরিষদ এবং জনগণ। স্থানীয় ইউপি সদস্য দিদার এবং মহিলা ইউপি সদস্য ললিতা রানের জামাতা, পবিত্র এর বাড়িতে বিক্রি করা ইট নিয়ে নানান অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাগমারি গ্রামের মিহির, হরিপদ, আব্দুস সামাদ, শহিদুল, গোবিন্দ, রশিদ নুরুজ্জামান, কেনারাম ও এলাকার অধিকাংশ লোক অভিযোগ করে জানান চেয়ারম্যান আলিম আল রাজি টোকন এবং ইউপি সদস্য দিদার, ললিতা রানী পরস্পর জোকসাজশে লক্ষ লক্ষ ইট বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছে এমনই অভিযোগ জনসাধারণের। তবে এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য ললিতা রাণী জানান ইট বিক্রি করে মুজুরি বাবদ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান্ আলিম আল রাজি এর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নির্মাণে ইট সরানোর জন্য কোন বরাদ্দ নাই। জনগণের দাবির মুখে মজুরি দিয়ে ইট গুলো আলাদা করে রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র মজুরি বাবদ কিছু ইট বিক্রি করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে আমাকে কোন নির্দেশনা না দেওয়ায় আমার কিছু করার নাই। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরার নিকট জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।