
হাফিজুর রহমান, কালীগঞ্জ থেকে: কাজ না করে প্রকল্পের সমুদয় টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য নিরঞ্জন কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে। নন ওয়েজ কষ্ট এর ১ লক্ষ ৯২ হাজার টাকার প্রকল্পে ৩০ টি সিমেন্টের পিলার পাঁচটি বাঁশ দিয়ে প্লেসাইডিং তৈরী ও কর্মসৃজন প্রকল্পের লোক দিয়ে কাজ করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করলেও দেখার কেউ নেই। ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের চালতে তলা দুর্গা মন্দিরের পাশে মনোরঞ্জন ঘোষ এর পুকুর পাড়ে। অত্র প্রকল্পের পুকুর চুরির ঘটনায় এলাকাবাসী একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রকল্পের তথ্য চেয়ে আবেদন করলেও কোন সাড়া মেলেনি বরং উল্টো হয়রানি হতে হয়েছে। অভিযোগের সূত্র থেকে জানা যায় উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পূর্ব নারায়নপুর ফুটবল খেলার মাঠ,শ্মশান ঘাট পর্যন্ত ড্রেন ও রাস্তার সংস্কার বাবদ নন ওয়েজ প্রকল্পে ১ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত ১৫-১০-২০২১ইং তারিখে অত্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। উক্ত প্রকল্পের সভাপতি সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড এর ইউপি সদস্য নিরঞ্জন কুমার ঘোষ কে সভাপতি করে দায়িত্ব দেওয়া হয়। অত্র প্রকল্পের বাকি সদস্যরা হলেন ইউপি সদস্য মৌসুমী খাতুন, মসজিদের ইমাম আহমদ আলী, মহিলা প্রতিনিধি শোভারানী ঘোষ এবং মৌসুমি খাতুন। উক্ত প্রকল্পের সভাপতি নিরঞ্জন কুমার ঘোষ কমিটির সদস্যদের না জানিয়ে ২শত টাকা করে ৩০ সিমেন্টের পিলার এবং ৫ বাঁশ কিনে কর্মসৃজন প্রকল্পের লোক দিয়ে প্লেসাইডিং করে চালতেতলা দুর্গা মন্দিরের পাশে মনোরঞ্জন ঘোষ এর পুকুরের পাড় বেড়া দিয়ে প্রকল্পের সমুদয় টাকা তুলে আত্মসাৎ করে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন এবং সহকারী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রকল্প সভাপতি এর পরস্পর যোগসাজসে প্রকল্প কমিটির সদস্যদের অবগত না করে টাকা তুলে আত্মসাৎ করলেও কমিটির অন্যান্য সদস্যরা কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য নিরঞ্জন কুমার ঘোষ এর নিকট ঘটনার সত্যতা জানার জন্য জিজ্ঞাসা করলে তিনি প্রকল্প সম্বন্ধে কিছু জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। প্রকল্প সম্বন্ধে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবই জানেন বলে তিনি জানান। অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর মহাম্মদ বিশ্বাস এর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন আমি অসুস্থ ইউনিয়ন পরিষদের মিটিং রেজুলেশন করে নিরঞ্জন ঘোষকে সভাপতি করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট প্রকল্প কমিটি করে দিয়েছি এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি এবং অফিস ভালো বলতে পারবে। উপজেলা প্রকল্প পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসের সহকারী প্রকৌশলী প্রকল্প তদারককারী আশরাফুল ইসলাম এর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান কাজ হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে কোথায় কাজ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন লেখালেখি করে কি হবে আমি মেম্বারকে দেখা করতে বলবো। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন এর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি কাজ দেখার দায়িত্ব প্রকৌশলী আশরাফুল কে দিয়েছিল তারপরও আমি মেম্বারকে চিঠি দিয়ে জানাবো তবে অত্র প্রকল্পের একটি টাকার কাজ হয়েছে কিনা এমন সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নের উত্তরে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নাই বা প্রকল্পের কাজ দেখাতে ব্যর্থ হয়। মঙ্গলবার বেলা দশটার সময় সরেজমিনে মনোরঞ্জন ঘোষ এর পুকুরপাড়ে গেলে দেখা যায় ৩০ টি সিমেন্টের সীমানা পিলার যার সর্বোচ্চ দাম দুইশত টাকা করে ৬ হাজার টাকা এবং ৫টি বাঁশ তিনশত টাকা করে ধরলেও ৭৫০০ টাকা হয়। বাকি কাজ কর্মসৃজন প্রকল্পের লোক দ্বারা করানো হয়েছে বলে কর্মসৃজন প্রকল্পের সরদার জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান। অত্র প্রকল্পে সর্বোচ্চ ৭৫০০ টাকা বাদ দিলে ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা হতে ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৫শত টাকা টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে স্থানীয়রা জানান। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের তদন্তপূর্বক আইনানুগ আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকা বাসী।