হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ: বাড়ির পাশে নিজ উপজেলায় বছরের পর বছর চাকরি করার সুবাদে বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানের দোহাই ও কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে সাবেক অফিস সুপারভাইজার (ও এস) শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে উপজেলা জুড়ে বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি সহ নানা বিধ ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৬ এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতিবাজ শফিকুল ইসলাম তদন্ত ঢাকতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। বর্তমান শফিকুল ইসলাম সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কর্মরত থাকায় দুর্নীতি চাঁদাবাজির ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এ খবর জানতে পেরে সাবেক সুপারভাইজার শফিকুল ইসলাম প্রতিনিয়ত অভিযোগকারী উপজেলার মুকুন্দ মধুসূদন পুর গ্রামের আবু তালেব সরদারের বাড়িতে প্রতিনিয়ত ধরনা দিতে দেখা গেছে। তারপরও দুর্নীতি চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করে এ প্রতিনিধিকে জানান আমি যাহা করেছি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে করেছি। বিষয়টি পত্রিকায় না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। অফিস সুপারভাইজার শফিকুল ইসলামের বাবা উপজেলার কাক শিয়ালি গ্রামের হতদরিদ্র আবুল কাশেম গাজীর পুত্র এই সুবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে দীর্ঘদিনএকই জায়গায় চাকরি করার সুযোগে সরকারি অনুষ্ঠান যেমন ১৬ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, পহেলা বৈশাখ, ১৫ আগস্টসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের দোহাই দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গাইয়া উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, ব্যবসায়ী, ইটভাটা, ক্লিনিক, মৎসসেট, মদেরদোকান, সমিল, পেট্রোল পাম, ব্যাংক, এনজিওসহ বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নির্বাহী কর্মকর্তার ভয় দেখিয়ে লক্ষ, লক্ষ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় আঙুল ফুলে কোটিপতি গাড়ি, বাড়ি প্লট এর মালিক। সেই সুবাদ নামে বেনামে একাধিক বাড়ি গাড়ি সরকারি জমিতে দোকান, বাসা বাড়ি প্রাইভেট, মাইক্রোসহ উপজেলার নলতার মত জায়গায় রুপা এনজিওর মালিক মামা মনিরুলের যোগসাজোকে স্ত্রীর নামে অর্ধ কোটি টাকার প্লট কিনে রুপা এনজিও সাইনবোর্ড লাগিয়ে রেখেছে। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের সামনে একেবারে নাকের ডগায় সরকারি জায়গা দখল করে দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছে। তারালি বাজারে পেরিপেরিভুক্ত জায়গায় বেনামে জায়গা বরাদ্দ নিয়ে পাকা ঘর নির্মাণ করেভাড়া দিয়েছে। ২০২৩ সালে ১৬ ডিসেম্বর পালনেঅফিস সুপারভাইজার শফিকুল ইসলামের নিজ হাতের লেখা চাঁদার তালিকা হতে দেখা যায় ইটভাটা সমিতি ১ লক্ষ, সাগর সাহেব ৫ হাজার, দলিল লেখক সমিতি ৫ হাজার, রেজিস্ট্রি অফিস ৫ হাজার, কৃষি অফিস ২৫ হাজার, উন্নয়ন এনজিও ১ হাজার, কৃষ্ণনগর বাজার ৫ হাজার, মৌতলা বাজার ৫ হাজার, জাগরণী চক্র ১ হাজার, ফুলতলা সেট ৩ হাজার, ঠিকাদার সমিতি ১৬ হাজার, টিসিবি ডিলার ১০ হাজার, জনতা ব্যাংকসহ সকল ব্যাংক ১৩ হাজার, করাত কল ৯ হাজার, খেজুরতলা সেট ২৫ হাজার, হেলথ কেয়ার ১ হাজার, আনারুল ৫ হাজার, বরুণ ঘোষ ১ হাজার, বাঁশতলা বাজার ৫ হাজার, মদ ইয়াসিন ১ হাজার, উজিরপুর সেট ৪ হাজার, দাদপুর ভাটা ১০ হাজারসহ এইভাবে আরো একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধনাঢ্য ব্যক্তিদের হতে প্রতি অনুষ্ঠানের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করলেও রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এইভাবে বছরের পর বছর একই জায়গায়চাকুরী করার সুবাদে চাঁদাবাজি করে গেলেও প্রশাসনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। বিষয়টি তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে উপজেলাবাসী।