হাফিজুর রহমান: আম্পান ও করোনাকালীন সংকটের সময় ক্ষতিগ্রস্থ, দুস্থ, ক্ষুদ্র খামারী ও মৎস্য চাষীদের আর্থিক সহায়তা প্রনোদনার অংশ হিসাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তহবিল হতে কালিগঞ্জ উপজেলায় প্রণি সম্পদ অফিসে ১০ কোটি এবং মৎস্য অফিসে ৫ কোটি টাকা প্রদান করেন। উক্ত টাকা উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মনোজ কুমার এবং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম তার নিজিস্ব লোক দিয়ে খামারী না, জমি মৎস্য ঘের নাই ভারতে বসবাস করে এমন ব্যক্তিদের নাম মোটা অংকের টাকায় ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে তালিকা করে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে নাম সর্বস্ব তালিকা করে বিকাশ নাম্বারে টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ফুসে উঠেছে প্রকৃত পশু খামারী ও মৎস্য চাষীরা। উক্ত ঘটনায় উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা এবং মৎস্য কর্মকর্তার ১৫ কোটি টাকার দূর্নীতির ও অপসারনের দাবীতে রবিবার বেলা ১১টার সময় উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে প্রায় ২ হাজার খামারীর মৎস্য চাষী ঘের মালিকরা প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন পালন করে। কর্মসূচী শেষে মৎস্য চাষী, ঘের মালিক ও খামারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর গণস্বাক্ষরিত এক অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও মৎস্য চাষী শাহ আলম, মৎস্য চাষী মাহামুদুল হোসেন, আব্দুল জলিল, শেখ আহাদ আলী, নূর ইসলাম, ইসমাইল গাজী, খায়রুল ইসলাম, মহিউদ্দীন, জাহাঙ্গীর, আব্দুল কাদের, আশিক ইকবাল পাপ্পি প্রমূখ। কর্মসূচীর সাথে একত্বা ঘোষনা করে বক্তব্য রাখেন কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইচ চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম। তিনি তার বক্তব্যে বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুস্থ, অসহায়, মৎস্য চাষী ও পল্ট্রি খামার ও পশু খামারীদের করোনাকালীন এবং আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য হিসাবে ১৫ কোটি টাকার প্রনোদনা দিয়েছেন। সেই টাকা নিয়ে প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা এবং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে দালাল নিয়োগ করে মেম্বর এবং চেয়ারম্যানদের দেওয়া তালিকায় মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে এ প্রনোদনা দিয়েছেন। আমি থাকতে যে কোনো সরকারি প্রকল্পে দূর্নীতি ও অনিয়ম করতে দেবো না। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সঠিক তালিকা এবং হিসাব দিতে না পারলে এই সমস্ত দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন করে অপসারণ করাইতে বাধ্য হবো। এসময় সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার নিয়োগকৃত দালাল এবং প্রাণি সম্পদ কর্মকতার দালালদের নিযুক্ত করে খামার নেই, গরু নেই, জমি নেই, ঘের নেই, প্রাপ্ত, অপ্রাপ্ত নারী পুরুষ শিশুদের সহ ভারতে বসবাসকারী ব্যক্তিদের নাম তালিকা দিয়ে প্রত্যেকে বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে ১২ হাজার থেকে ২০/২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এভাবে উপজেলা জুড়ে ৫হাজার ব্যক্তিকে দেওয়া হলেও প্রকৃত চাষী ও খামারীদের কোনো স্থান হয়নি। বক্তব্যের সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের নিকট যাদের জমি, মৎস্য ঘের, পশু খামার নেই, ভারতে বসবাসকারীদের নামের তালিকা দেন। তালিকা অনুযায়ী যাদের জমি, ঘের নাই তারা হলো কুশুলিয়া ইউনিয়নের মহৎপুর গ্রামের আমজেদ আলী মোড়ল, রবিউল ইসলাম, জি.এম. সোয়েব আক্তার, মুসলিমা সুলতানা, অনিল মিস্ত্রি, গাজী আশরাফুজ্জামান, শেখ শহিদুল ইসলাম, ছাবিনা বেগম, গীতা আর্শ্চায্য, শেখ ওবায়দুর, তারক চন্দ্র আশ্চার্য্য, মহব্বত হোসেন, ঠেকরা গ্রামের আফছার আলী সরদার, নূর ইসলাম পাড়, হাফিজুর রহমান, রওশানারা, সুশীলা মিস্ত্রি, গোলাম রব্বানী, তুলাকাটী গ্রামের ভারতে বসবাসকারী নিতাই সরকার, সন্তোষ সরকার, কলিযোগা গ্রামের ফতেমা খাতুন, কুলিয়াদূর্গাপুর গ্রামের ঊষা রানী, আমেনা খাতুন, সখিনা খাতুন, বাবর আলী শেখ, ইব্রাহীম, হাসেম আলী, ঘোজাডাঙ্গা গ্রামের শ্রীমতি স্বপ্না রানী বৈদ্য, ফরিদা খাতুন, শ্রীমতি বেলমতি বৈদ্য, ভদ্রখালী গ্রামের আমেনা, খাদিজা খাতুন, সারমিন আক্তার, মহৎপুর গ্রামের রাশিদা, আমেনা, রেহেনা, পারভীন এইভাবে ১২টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার নাম তুলে ধরেন। এসমস্ত নারী পুরুষদের ভোটার আইডিকার্ড মোবাইল নাম্বার এবং বিকাশ একাউন্ট খুলে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ঘটনার সত্যতা জানানোর জন্য উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার অফিসে গেলে মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম ছুটিতে থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার অফিস সুপারভাইজার উজ্জল জানান প্রত্যেক ইউনিয়নে তাদের নিয়োগকৃত একজন লোক ছিলো এবং প্রতিটি ইউনিয়নে মেম্বর, চেয়ারম্যানরা যেভাবে তালিকা দিয়েছে আমরা সেভাবে তালিকা দিয়ে প্রনোদনা তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এর চেয়ে বেশি জানতে হলে স্যার ছুটি থেকে আসলে জেনে নেবেন।