হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের চান্দুলিয়া বিলের দেড়’শ বিঘা সরকারি খাস-খাল বিভিন্ন ভূমিদূস্যুরা নিজেরদের নামে রেকর্ড করে দখলে রাখলেও দেখার কেহ নাই। জনসাধারণের ব্যবর্হায্য বর্তমান ঐ সমস্ত সরকারি খাস- খালে বাঁধ দিয়ে মৎস্য ঘেরের নামে দখল করে বছরের পর বছর লক্ষ লক্ষ টাকা হারি হিসাবে আদায় করলেও সরকারি রাজস্ব খাতে রয়েছে শূন্য। তবে দেড়’শ বিঘা সরকারি খাস-খাল শ্রেণী পরিবর্তন করে কৃষি জমির নামে ব্যাক্তি মালিকানায় রেকর্ড প্রকাশ হলেও উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা এবং চাম্পাফুল ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা প্রশান্ত সরকার কিছুই জানেন না বলে এ প্রতিনিধিকে জানান। এযেন সরকারি মাল দরিয়ায় ফেল। সেটেলমেন্ট ভূমি জরিপ চালাকালিন কালিগঞ্জ উপজেলায় র্দীঘ প্রায় এক যুগ সহকারি কমিশনার ভূমি না থাকার সুযোগে উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তহশীলদারদের ভূমি দূস্যুরা মোটা অঙ্কের টাকায় ম্যানেজ করে ও সেটেলমেন্ট কর্মকর্তাকে উৎকোচ দিয়ে চলমান সরকারি খাস-খাল শ্রেণী পরিবর্তন করে কৃষি জমি হিসাবে দখলে নিয়ে খন্ড খন্ড বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে বহাল তবিয়াদে। বর্তমান মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশে সরকারি খাল থেকে অবৈধ্য দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস.এম. মোস্তফা কামাল মহোদয় যখন উদ্ধারের জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছে তখন সরকারি খাস-খাল ভূমি দূস্যুদের দখলে থাকায় এলকাসী হতাশা প্রকাশ করেছে। সোমবার বেলা ১১টার সময় সরোজমিনে চান্দুলিয়া বিলে গেলে মশরকাটি গ্রামের নুরুল ইসলাম, হানিফ, মোসলেম, আহম্মদ আলী, আনছার গাজী, শোয়েব মাষ্টার, সিদ্দিক, চান্দুলিয়া গ্রামের ভবেশ সরকার, পরিতোষ, দুলাল, নিরাঞ্জন, আব্দুল্লা, হাশেম আলী সহ শতাধিক ব্যাক্তি জানান কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের চান্দুলিয়া মৌজার ১/১ খতিয়ানের সাবেক ৩৬১, ৪০১, ৫৬৬, ৬৩১, ৩৮৩, ৯৮৫ দাগ যা বর্তমান জরিপে ২০৫৩, ২১৮৫, ২০১৫০, ৩৫১৬, ৩৩৫০, ৩৩১৬, ৩৩১৭, ৩৩১৮, ৩০১০,৩৩৯৪ সহ একাধিক দাগে এবং বর্তমান ডি.পি- ৭৩৯, ৫১১, ২২৪১, ১০৬৬, ২৩৫, ১৩৭, ৩৯৩, ২৪৮, ৩৯৭, ৮২৮, ৩০৬, ৭৩৩, ৭৬২, ১২২ সহ একাধিক পৃথক সৃষ্টিকারি খতিয়ানের মোট ৪৬.৯৩ একর সম্পত্তি জন সাধারণের ব্যবহার্য্য মশরকাটি স্লুইচগেট দিয়ে পানি সরানোর কাজে র্দীঘ শত বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছিল। উক্ত সম্পত্তি ১৯৯০ সালে নতুন করে বাংলাদেশ সেট্রেলমেন্ট জরিপ শুরু হলে আশাশুনি থানার মৃত ফজলুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন তার পুত্র জামায়াত নেতা রফিকুল হাসান ওরফে সাদ্দাম বাহিনী, মোস্তফা মাহবুব আলম, আব্দুল মান্নানের পুত্র খাজা মাহমুদ ইমাম হোসেন, নজরুল ইসলামের পুত্র ফারুখ হোসেন, আব্দুল আজিজের স্ত্রী রহিমা খাতুন, আয়জুদ্দিনের পুত্র নবাব আলী, কালিগঞ্জ থানার বাজারগ্রাম রহিমপুর গ্রামের শামছুদ্দিনের পুত্র লুৎফর রহমান, কুরবান আলীর পুত্র শামছুর রহমান, কাঁকশিয়ালী গ্রামের রেজাউল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, চান্দুলিয়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী বিশ্বাসের পুত্র সোবহান বিশ্বাস, শাহাদাত বিশ্বাস, শাহিদুল বিশ্বাস, মফিজুল বিশ্বাস, সাহিদুল বিশ্বাস, মৃত পয়মল গাজীর পুত্র এমান আলী গাজী পারুলগাছা গ্রামের কাওছার গাজীর স্ত্রী আনজুয়ারা বেগম এবং শ্রীউলা শাহা সিদ্দিকিয়া জামে মসজিদ, নবিনগর জামে মসজিদ, সাতক্ষীরা সদর থানার চাঁদপুর গ্রামের আবুল কাশের চৌধুরির পুত্র রবিউল ইসলাম, খুলনা জেলার ৪/১ পশ্চিম বানিয়া খামার আমতলা মোড় এলকার মমিনুল হকের স্ত্রী শিরিনা আক্তার সহ একাধিক ব্যাক্তি নামে উক্ত সরকারি খাস-খাল প্রায় দেড়’শ বিঘা ব্যাক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে নেয়। বিষয়টি প্রকাশ হলে তৎকালীন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিনের নিকট এলকাবাসী শরনাপন্ন হলে মশরকাটি গ্রামের এলাহী বক্স গাজীর পুত্র হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে এলকাসীর পক্ষে সরকারি খাস-খাল খাস করানোর জন্য আবেদন করেন। উক্ত আবেদনে জেলা প্রশাসক মহোদয় খাস করানোর জন্য তৎকালীন কালিগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শাহাবুদ্দিন মুন্সীকে নির্দেশ দেন। উক্ত নির্দেশ মোতাবেক তদন্ত পূর্বক বঙ্গীয় প্রজাতন্ত্রের আইনে মিস ১/২০০০ মোতাবেক ২০(২) ধারায় উক্ত সম্পত্তি খাস ঘোষনা করে। এরপর হতে উক্ত ভূমি দূস্যুরা দেওয়ানী আদালতে নিজেদের কৃষি জমি এবং সরকারি খাস-খাল নিয়ে একাধিক মামলা রুজু করলে উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত আংশিক রায় প্রদান করেন। পরবর্তীতে উক্ত রায়কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি না থাকায় উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং চাম্পাফুল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তৎকালীন তহশীলদারকে ম্যানেজ করে পুনঃরায় ৩১ ধারায় আবারও ব্যাক্তি মালিকানায় ভূমি দূস্যুরা রেকর্ড করে নেয়। সেই থেকে উক্ত খাল গুলোতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহের বাঁধা সৃষ্টি করে মৎস্য চাষ করে আসছে। বর্তমান পানি সরানোর কোন পথ না থাকায় এলাকাবাসীর ভোগান্তি চরমে। সেট্রেলমেন্ট জরিপের চুড়ান্ত রেকর্ড প্রকাশিত হলেও এ ব্যাপারে চাম্পাফুল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার প্রশান্ত সরকার কিছু জানেন না বলে জানান। এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিফাত উল্লাহ নিকট জিঞ্জসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। তবে বিষয়টি তহশীলদারের সঙ্গে কথা বলে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান। সরকারি খাস-খাল উদ্ধারের জন্য চাম্পাফুল ইউনিয়ন বাসী জেলা প্রশাসক মহোদয়ের আশুহস্তক্ষেপ কমনা করেছে।