নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র ও দু্স্থ পরিবারের তালিকা তৈরি এবং খাদ্য সহায়তা ও নগদ অর্থ বিতরণে ইউপি সদস্য আহম্মদ আলী ও নিরঞ্জনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত (১৪ জুলাই) বুধবার ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন পরিষদে চত্তরে চাউল ও অর্থ বিতরণের সময় উপস্থিত জনসাধারণ ও গ্রামবাসীদের প্রতিবাদ ও তোপের মুখে পড়লে বেগতিক দেখে তার পেটুয়া বাহিনী দিয়ে পিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বিষয়টি নিয়ে ভাড়াশিমলা ইউনিয়নে চলছে মেম্বার আহম্মদ আলী ও নিরাঞ্জনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বিরাজ করছে। গরিবের অর্থ আত্মসাৎ, প্রকল্পের টাকা নয়ছয় দুর্নীতির অভিযোগে মেম্বার ও ৮ নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আহম্মদ আলী দু-দুবার সাসপেন্ড হলেও থেমে নেই তার দুর্নীতি।
অন্যদিকে ৯ নাম্বার ওয়ার্ড মেম্বার নিরঞ্জনের বিরুদ্ধে ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত, দুস্থ, অসহায় পরিবারের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়ম,স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অর্থ সহায়তা ও নগদ অর্থ বিতরণ এর তালিকায় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, অসহায় ব্যক্তিদের নামে বরাদ্দ না দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা তাঁর স্ত্রী একই পরিবারের বাবা-ছেলেসহ একাধিক ব্যক্তির নাম, ৪০/৫০ বিঘা জমি আছে এমন ব্যক্তি ছাড়াও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী দের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তাদের মাঝে নগদ অর্থ খাদ্য সহায়তা বিতরণ করলেও প্রকৃত অসহায় ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হয়নি সরকারি কোন সহায়তা।
যেমন তার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নার্গিস সুলতানা সহ পূর্ব নারায়ণ পুর গ্রামের এক পরিবারেরর মিজান, মশিউর,অধিকারী অধিকারী, অমল অধিকারি,অসিত অধিকারী, ৪০ বিঘা জমির মালিক জিল্লু, মেম্বার প্রার্থী হরো প্রসাদ মন্ডল ছাড়াও একই পরিবারের তিন ভাই শফিকুল, রবিউল,শরিফুলসহ এইভাবে বহুলোক তালিকায় স্থান পেয়ে নগদ অর্থ সহায়তা পেলে ও প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, অসহায়, দুস্থদের নামের দেওয়া হয়নি কোনো অর্থ সহায়তা।
৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আহম্মদ আলী তার ৩ পুত্র রফিকুল, তারিকুল, শহিদুল এর নাম দিয়ে নগদ অর্থ সহায়তা ও খাদ্য সহায়তা চাউল উত্তোলন করে নিয়েছে। বিতরণ কালে ইউনিয়ন পরিষদ চত্তরে এর প্রতিবাদ করলেও উল্টো তার পেটুয়া বাহিনী দিয়ে লাঠিপেটা করে তাড়িয়ে দেয়।
এইভাবে স্বজনপ্রীতি করে দলীয় লোক নিজেদের পছন্দমতো একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিদের সহ বড়লোকদের নাম স্থান পেলেও প্রকৃত অসহায় গরীব ক্ষতিগ্রস্তদের নামে দেওয়া হয়নি কোনো অর্থ ও খাদ্য সহায়তা।
এর আগে এর আগে বিধবা ভাতা ভোগীদের কার্ডের চাউল আত্মসাতের অভিযোগে দু-দুবার সাময়িক বরখাস্ত হয়। বর্তমানে কর্মসৃজন প্রকল্পের সাদপুর গ্রামের বাবর আলীর পুত্র জিন্নাত আলী, এবং খামার পাড়া গ্রামের রেজাউল মামুনের নাম দেখিয়ে টাকা তুলে আত্মসাৎ করলেও ভুক্তভোগীরা কোন কিছুই জানেন না।
তার ওয়াডে প্রকৃত শ্রমিকদের নাম বাদ দিয়ে ও অ-শ্রমিকদের নামে অর্থ সহায়তা ও চাউল দিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে।
যে কারণে ২০০ জনের অধিক শ্রমিক পাওয়ার যোগ্য হলেও ১০০ জন ১০ কেজি করে চাউল এবং ৭০ জনকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে চাউল কিনে দিতে যেয়ে বাকি শ্রমিকরা বঞ্চিত হওয়ায় কেনা চাউল বিতরণ নিয়ে বিরোধে ও বিশৃঙ্খলা বাঁধে। অথচ টাকার বিনিময়ে চাউল কিনে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই বলে উপজেলা প্রকল্প ও বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান।
এত বিশৃংখলার মধ্যে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ কর্মকর্তা সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেনএ প্রতিনিধিকে বলেন সব ঠিক আছে।
৯ নম্বার ওডারের ট্যাগ কর্মকর্তা শিক্ষক মহিদুল ইসলাম না থাকলেও তার নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি সবকিছু ঠিকঠাক আছে বলে সাংবাদিকদের জানান।
ঘটনার সত্যতা জানার জন্য ৮ নম্বার ইউপি সদস্য আহম্মদের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আপনারা সবকিছু এত বড় করে দেখেন কেন। কাজ করতে গেলে ভুল ত্রুটি হয়। তার ছেলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা কালে বলেন, আমার দুই ছেলে করোনা হয়েছিল আর একজন শ্রমিক।
৯নং ইউপি ওয়ার্ড সদস্য নিরঞ্জন কুমার ঘোষ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, দাদা আমার ওয়াডে কাজ করা খুবই কঠিন। নেতাদের কথা শুনতে হয় তবে চেষ্টা করেছি ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়ার জন্য আমি পরে আপনার সঙ্গে দেখা করে কথা বলব।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিরাজ হোসেনের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান এ ব্যাপারে ট্যাগ কর্মকর্তারা আমাকে কিছু জানায়নি। তবে নগদ অর্থের বদলে চাউল কিনে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই বিষয়টা আমি তদন্ত করে দেখছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট দাবী জানিয়েছে ইউনিয়ন বাসী।