নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বন্দকাটি গ্রামের লেদমিস্ত্রী মিলন হোসেন। বাবা পিয়ার আলী পেশায় দিনমজুর। মিলন লেদমিস্ত্রীর কাজ করে চলছিল টেনে টুনে সংসার। অনলাইন জুয়া এসে সর্বশান্ত করেছে মিলনকে। বিভিন্ন মানুষের থেকে বিল্ডিংয়ের গ্রিল, দরজা,স্যাটার তৈরি করার এ্যাডভান্স টাকা নিয়ে অনালইন জুয়ায় সর্বশান্ত হয়েছে। বর্তমানে তার কাছে ১০-১২জন ব্যক্তি কয়েক লক্ষ টাকা পাবে। মিলন অনলাইন জুয়ার পাশাপাশি মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ে। দিনরাত মাদক সেবন আর অনলাইন জুয়ায় চলমান ব্যবসা আজ বন্ধ হয়ে গেছে। পাওনাদারদের টাকার চাপে ব্যবসা করতে পারছে না। ব্যবসার মূলধন অনলাইন জুয়া ও মাদক সেবনে উড়িয়েছে এলাকাবাসীর দাবি। বর্তমানে সে এলাকাছেড়ে পালিয়ে যশোরে শুশুর বাড়ি লুকিয়ে আছে।
সরজমিনে দেখা যায়, কালিগঞ্জের বন্দকাটি গণ গোরস্থান মোড়ে মিলনের লেদের একটি দোকান রয়েছে। ২-৩ জন কর্মাচারী নিয়ে বিভিন্ন দোকান, বিল্ডিংয়ের দরজা গ্রিল সার্টার তৈরি করে চলছিল মিলনের সংসার। বন্দকাটি অনলাইন জুয়া ও মাদকের অভয়ারণ্যে। কালিগঞ্জ উপজেলার মাদকের একটি বড় পয়েন্ট বন্দকাটি অবস্থিত যেখানে হাত বাড়ালে মেলে মাদক। খুচরা ব্যবসায়ীরা ঘুরে ঘুরে মাদক বিক্রি করে। সেই সাথে অনলাইন জুয়ার এজেন্ট রয়েছে। যারা বাকিতে অনলাইন জুয়ায় টাকা দিয়ে থাকে। পরে কিস্তিতে সেই টাকা জুয়াড়িদের থেকে পরিশোধ করে নেয়। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে অবৈধ কার্যক্রম।
মিলন প্রথমে অল্প কিছু টাকা দিয়ে অনালাইন জুয়ার একাউন্টে ভরে টাকা নষ্ট করে ফেলে । পরে সেই টাকা উঠাতে গিয়ে ধাপে ধাপে ৪-৫ লক্ষ টাকা অনলাইন জুয়ায় উড়িয়ে দেয়। ক্লিকে ডলার অথবা টাকার স্বপ্নে বিভোর লেদ মিস্ত্রী মিলন এখন দেনারদায়ে এলাকাছাড়া। কখনো সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর পালিয়ে থেকে জীবন যাপন করছে।
পাওনারদার ভুক্তভোগী বন্দকাটি গ্রামের ফজর আলী মোড়ল বলেন, লেদ মিস্ত্রী মিলন একসময় রমরমা ব্যবসা ছিল। আমার কাছ থেকে ব্যবসা সম্প্রসারণ করার জন্য টাকা ধার নিয়েছি। টাকা না দিয়ে মাসের পর মাস ঘুরাচ্ছে। পরে শুনলাম অনলাইন জুয়া খেলে টাকা নষ্ট করছে। বহু মানুষ ওর কাছে টাকা পাবে সে এখন এলাকছেড়ে শুশুরবাড়ি পলাতক রয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দকাটি গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, অনলাইন জুয়া ও মাদক সেবনে মিলন আজ ধ্বংস হয়ে গেছে। চলমান ব্যবসা ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ দোকান বন্ধ রেখে পালিয়ে থাকে। পাওনাদের খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারি সে কয়েকজন থেকে ব্যবসার কথা বলে টাকা নিয়ে অনালাইন জুয়ায় হেরে এখন পলাতক রয়েছে। অনলাইন জুয়া এই এালাকার মানুষকে সর্বাশান্ত করেছে। গ্রামের শতাধিক মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা হেরে আজ নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছেড়েছে। তবুও থামছে না অনলাইন জুয়া।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ওসি নিজাম উদ্দীন মোল্যা গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারের নির্দেশনা রয়েছে অনলাইন জুয়াড়ী ও এজেন্টদের অভিযানের মাধ্যমে ধরার। আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছেি। অনলাইন জুয়া অঞ্জল গুলো আমরা চিহ্নিত করে অভিযান পরিচালনা করব।আমাদের তথ্য দিয়ে সহয়তা করবেন। আমরা অনলাইন এজেন্টদের তথ্য সংগ্রহ করছি মোটামুটি তালিকা প্রস্তুত হয়েছে। আমরা শ্রীঘ্রই বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করব।