নজরুল ইসলাম তালা থেকে:
তালায় ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনে ফলাফল প‚র্ণ গণনার মামলায় আদালতে ব্যালট তলবের আদেশে বেকায়দায় পড়েছে তালার নির্বাচন কমিশন।
স‚ত্র মতে, সদ্য সমাপ্ত ১ম ধাপের ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ৩নং সরুলিয়া ইউনিয়নের নির্বাচনে ফলাফলে ক্ষুব্ধ হয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করা পরাজিত প্রার্থী আব্দুর রব পলাশ এর দাখিল করা, নি: ট্রাই : ২/২১(তালা) নং মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা জেলা নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল আদালত উক্ত ইউনিয়নের পাঁচ কেন্দ্রের ভোট সরঞ্জাম তলব করেন।
বিজ্ঞ আদালতের আদেশ মোতাবেক ২০ জানুয়ারি সকালে ব্যালট পেপার আদালতে নেওয়ার জন্য তালা উপজেলা নির্বাচন কমিশন এর গোডাউন খুলে কয়েকটি ব্যালট ভর্তি বস্তা খোলা পরিলক্ষিত হয় । বিষয়টি দৃষ্টিকটু হওয়ার পরেও খোলা বস্তাবন্দি ব্যালট আদালতে নেওয়া হয়। আদালতে বস্তার মুখ খোলা দেখে বাদি পক্ষ তার নিযুক্ত আইনজীবী বিজ্ঞ আদালত কে অবগত করেন।
বিষয়টি বিজ্ঞ আদালত, উভয় পক্ষের আইনজীবী ও আদালতের উপস্থিতির নজরে আসলে বিজ্ঞ আদালত তলব কৃত ব্যালট পেপার গ্রহন না করে ফেরৎ নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। গত ২০ শে নভেম্বর নির্বাচনে সরুলিয়া ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতিক নিয়ে বিজয়ী প্রার্থী মাষ্টার আব্দুল হাই ৫৬৪৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরায় শপথ গ্রহনের মাধ্যমে ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান হিসাবে তার নিজ দায়িত্ব পালন করছেন। পথিমধ্যে পরাজিত প্রার্থী ৫২৯৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়ে, ফলাফলে ক্ষুব্ধ হয়ে বিজ্ঞ নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল আদালত সাতক্ষীরায় উক্ত মামলা আনায়ণ করেন।
তালা নির্বাচন কমিশন এর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির গন্ধ ছড়াচ্ছে উপজেলা জুড়ে। আদালতের আদেশের চার পাঁচ দিন আগে ভোট ব্যালট তলবের খবর আসলেও এভাবে অগোছালো ভাবে ব্যালট ছিল কেন ?। তালা উপজেলা নির্বাচন কমিশন ও তার অফিসের কর্মচারী দের দুই রকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। তালা নির্বাচন কমিশন জানান, ব্যালট ভর্তি বস্তা নাড়াচাড়া করতে খুলে গেছে, পক্ষান্তরে কর্মচারী জানান, তারা গোডাউন খুলে দেখেন বস্তার মুখ খোলা। এই দু রকম বক্তব্যের ফলে প্রাথমিক ভাবে কোন যোগসাজশের কারণ উদ্ভব হয়েছে।
এ বিষয়ে বিজয়ী প্রার্থী মাষ্টার আব্দুল হায় জানান, তিনি জনগণের বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন এবং প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তালা উপজেলা নির্বাচন কমিশন তার ভোট ব্যালট সরিয়ে ফেলেছেন।
নির্বাচন কমিশনের অভিযোগকারী আব্দুল রব পলাশ জানান, তিনি নির্বাচনের পরেই মামলা করেন। উক্ত মামলায় বিবাদী জবাব দিতে কালবিলম্ব করতে থাকেন। ২০ শে জানুয়ারী ধার্য তারিখে বিজ্ঞ আদালতে আদেশ মোতাবেক নির্বাচনী সকল সরঞ্জাম তলবের জন্য দিন দিলো। তিনি তার মতো করে আদালতে হাজির হন। পরবর্তীতে জানতে পারেন যে তালা থেকে আদালতে আনা ব্যালট পেপার রক্ষিত বস্তার মুখ খোলা।
বিষয়টি তার আইনজীবী মারফত বিজ্ঞ আদালত কে অবগত করলে বিজ্ঞ আদালত তলব কৃত ব্যালট ফেরৎ প্রদান করেন। তিনি আরো জানান যে, ভোট প‚র্ণ গণনা হলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। তালা নির্বাচন কমিশন অবৈধভাবে বিজয়ী প্রার্থীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তার ভোটের ব্যালট সরিয়ে ফেলেছেন।
তালা নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী কর্মচারী কবির হোসেন ও ইমন জানান, সকালে স্যারের নির্দেশ অনুযায়ী তারা গোডাউন খুলে দেখেন বস্তার মুখ খোলা। প্রয়োজনের তাগিদে তারা মাঝে মধ্যে গোডাউন খুলে থাকেন। এছাড়া গোডাউনে চাবি স্যারের কাছে থাকে মর্মে জানান।
তালা উপজেলা নির্বাচন কমিশনার রাহুল রায় জানান, তিনি সমস্ত ব্যালট বস্তা বন্দি করে রেখেছিলেন নাড়াচাড়া করতে গিয়ে খুলে গিয়েছেন। সিলগালা করা হয়নি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সিলগালা করা প্রয়োজন ছিল কিন্তু তিনি করেন নি। কোন পক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বস্তা খুলে ভোট ব্যালট সরিয়ে ফেলেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান এটা মিথ্যা ভিত্তিহীন।
তবে তিনি ভুলের সত্যতা স্বীকার করে জানান তিনি ভুল করেছেন ব্যালট গুলো সঠিক ভাবে সংরক্ষন করা হয়নি । উচিৎ ছিল ব্যালট গুলো ভালো ভাবে রাখা বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি আরো জানান বিজ্ঞ আদালত ব্যালট গ্রহন করেন নাই। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করা হবে।