
ইয়ারব হোসেন: কলারোয়ায় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিত্যজিৎ বিশ্বাস বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, কলারোয়া উপজেলার খোরদো মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির আওয়াতায় স্থানীয় বাওড় লীজ নিয়ে তাতে মাছ চাষ করা হয়। এ বিষয়ে গত ০৫/১২/১৮ তারিখে সমিতির সদস্যের নিয়ে এক সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, সামিতির সম্পাদকই সকল দার্য়িত্ব পালন করবেন। সে মোতাবেক সমিতির সাধারণ সদস্য ও শেয়ার হোল্ডালের নিকট থেকে গৃহীত সর্বমোট ৩৩ লাখ ৫১ হাজার টাকার মাছ ছাড়া হয়। সম্প্রতি একটি মিথ্যা মারামারি কেন্দ্রিক মামলা দায়ের হয়। এ মামলায় কলারোয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা আনোয়ার ময়নাকে আসামী করা হয়।
এই সুযোগে সমিতির সভাপতি বাবুল বিশ্বাস সমিতির আইন অমান্য করে গত ২৯/০৯/১৯ তারিখে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে নিয়ে বাওড়ের মাছ ধরা শুরু করে। এ সময় সমিতির সাধারণ সদস্যরা বাঁধা দিতে এলে স্থানীয় খোরদো পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মামুনুর রশীদ ও এ এস আই ওয়াজেদ আলী বাবুলের পক্ষ নিয়ে সাধারণ সদস্যদের গ্রেপ্তার ও ধরে নিয়ে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
মৎস্যজীবি সমিতির বাওড় রক্ষানাবেক্ষ উপ-কমিটির আহবায়ক ইয়াকুব আলী জানান, সমিতির সভাপতি উপ-কমিটি বা কোন সদস্যকে না জানিয়েই বাওড়ের প্রায় ৩০০ মন মাছ ধরে বিক্রি করে দিয়েছে। যার মূল্য ২৫ লাখ টাকা।
সমিতির সদস্য অমল বিশ্বাস ও রনজিত বিশ্বাস জানান, বাবুল বিশ্বাস স্থানীয় ক্যাম্পের পুলিশকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে দিবালোকে বাওড়ের মাছ ধরে বিক্রি করে দিয়েছে। তারা বাধা দিতে গেলে পুলিশ তাদের মারপিট করতে যায়। সদস্য খায়রুল বাশার জানায়, বাওড়ের পাশে ঘর বাড়ি সামিতির এমন সব নারী সদস্যরা বেআইনিভাবে মাছ ধরতে নিশেধ করলে তাকেসহ মহিলাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ফাঁড়ির পুলিশ।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিত্যজিৎ বিশ্বাস জানান, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার নির্দেশনা মেনে তিনি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিটি পরিচালনা করে আসছেন। তার সমিতিতে শতাধিক সদস্য আছে। অর্থদাতা সদস্যসহ সকল সদস্যদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে বাওড়ে মাছ ছাড়া হয়। সেই মাছ আইন অমান্য করে সভাপতি বাবুল বিশ্বাস ধরে নিয়ে বিক্রি করে আত্মসাত করেছে। এতে সমিতির সাকল সদস্যরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা আনোয়ার ময়না বলেন, বাবুল বিশ্বাস গংরা তার নামে থানায় একটি মিথ্যা মারামারির মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় তিনি জামিনে আছেন। বাবুল, সচিনসহ স্থানীয় কয়েক মাদক ও নাশকাতা মামলার আসামীরা এক জোট হয়ে বাওড়ের মাছ লুট করে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা সামিতির সাধারণ সদস্যদের বঞ্চিত করে ফায়দা লুটতে চায়। বিষয়টি সুষ্ঠ সমাধানের জন্য তিনি জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
জানতে চাইলে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মনির-উল-গীয়াস বলেন, বাওড়ে জাল দিয়ে মাছ ধরে নেয়ার ঘটনা শুনেছি। এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।