নিজস্ব প্রতিবেদক: তাঁকে বলা হয়ে থাকে মাদকের ‘গডফাদার’। এক নামেই পরিচিত। কলারোয়া উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের কারিগর পাড়ার মোকছেদের ছেলে। মাত্র ১৫ বছর বয়সে মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়া সেই কিশোরটি এখন কলারোয়ার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। নাম ইনতাজ (৩৫) ওরফে ফেন্সি ইনতাজ ওরফে ভাগ্নে ইনতাজ। উপজেলার ভারত সীমান্তে তার গড়ে তোলা সিন্ডিকেটের সদস্যরা সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করেন মাদক চোরাচালান। সীমান্তের ওপারেও আছে তার ব্যবসায়ীক অংশিদার। ওপার (ভারত) নিয়ন্ত্রণ করে ওরা, আর এপার নিয়ন্ত্রণ করেন ইনতাজ ও সীমান্তের ভাদিয়ালী গ্রামের ইয়ার আলীর মাদক ব্যবসায়ী সাংগীরসহ (৩৫) একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের গ্রামবাসীরা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, এক সময়ে কলারোয়ার মাদকের (ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবা) রাজধানীখ্যাত লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের কারিগর পাড়াসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামেরজেলা পুলিশ সুপারের কাছে আতœসমর্পন করেন এবং মাদক ব্যবসায় ছেড়ে দিয়ে কৃষিসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আছেন। এলাকার পরিস্থিতিও ভালো হয়েছিলো। তাদের দাবি, এই সুযোগে কারিগর পাড়ার ইনতাজ সীমান্তের বহিরাগত কয়েকজন সাথে নিয়ে শুরু করেন রমরমা মাদকের ব্যবসা। প্রথম দিকে পুলিশ প্রশাসনের বাধা পেলেও পরবর্তীতে শীর্ষ এই মাদক ব্যবসায়ী থানার অসাধু কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করেন একইসাথে সখ্যতাও তৈরি করেন। ফলে অসাধু এসব পুলিশ সদস্যদের ভয়ে গ্রামবাসীরা ইনতাজের বিরুদ্ধে কথা বলনে না। স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করেন ইনতাজ। মাদক ক্রয়-বিক্রয়ে রয়েছে তার নিজস্ব (ভাড়া ভিত্তিক) ৫ জনের একটি দল। গ্রামের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করা এসব সহযোগীরা (জোন) অবস্থান করেন এবং মাদকসেবীদের কাছে পৌছে দেন। এছাড়া পুলিশ প্রশাসনের কোন সদস্য গ্রামে প্রবেশ করলেই ইনতাজের কাছে খবর পৌছে দেয়া মুলত এদের প্রধান কাজ। স‚ত্র আরো জানায়, অসাধু পুলিশ
সদস্যদের সরাসরি নিয়ন্ত্রন বা দেখা করেন ইনতাজ নিজেই। এদের অর্থ প্রদান ছাড়াও অনেক অসাধু পুলিশ সদস্য মাদক সেবন করেন এমনটি দাবি স্থানীয় এলাকাবাসীর। আর এসব ঘটনাবেশির ভাগ সময় গ্রামের দেবদার বাগান সংলগ্ন ও মাছের ঘেরে দেখা যায় বলে জানান। এছাড়া প্রতিদিনই বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কারিগর পাড়া সংলগ্ন নুরানী কম্পিউটারে বসে থাকেন মুক্তার হোসেন ও থানার দুই কনেস্টবল। দোকানে বসে তাদের বিরুদ্ধে বিনামুল্যে ইনতাজের দেয়া মাদক সেবনের অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, মুলত এসব অসাধু পুলিশ সদস্য থানার অসাধু কিছু পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মাদক ব্যবসার বিস্তাএমনকি তারা মাদকসেবীদের আটক করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। যদিও মাদক স¤্রাট ইনতাজ দিনভর ঘোরাঘুরি করলেও তাকে আটক করা হচ্ছে না।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক গ্রামবাসী জানান, এলাকায় মাদক ব্যবসা বন্দের বিষয়ে হয়রানির ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। এরআগে নিজ বাড়ীর সামনে মাদক বিক্রি ও সেবন াধু ২/৩জন পুলিশ সদস্য তার বাড়িতে যেয়ে এসব বিষয়ে নির এছাড়াও একই এলাকায় এক মহিলাসহ আরও দুই ব্যাক্তিকে বাড়ি থেকে আটক করে পরে ফেনসিডিল উদ্ধারের মামলা দিয়ে জেল তারা জানান, পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতায় এধরনের হয়রানি ভয়ে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হলেও নিরব থাকছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তারা দাবি করেন, কলারোয়া উপজেলায় সবচেয়ে বড় মাদকের চিহ্নিত এলাকা লাঙ্গলঝাড়া ও শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ইনতাজের ’া না নেয়ায় চিন্তিত এলাকার অবিভাবকসহ সচেতন মহল। এলাভয়ে কথা বলতে না চাইলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনতাজের এক সহযোগী (জোন) বলেন, পাইকারি মাদক বিক্রির বিষসহযোগীতা করি। অনেক সময় দুরে (গ্রামের বিভিন্ন রাস্তায়) অবস্থান করা মাদক সেবীদের ইনতাজের বিকাশ নম্বরে টাকা পরিশোধের পর আমরা সেখানে মাদক পৌছে দিয়ে আসি। খুচরা মাদক বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, প্রতিদিন কলারোয়া, কেশবপুর, মনিরামপুর, সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ১৩০ থেকে ১৫০ বোতল ফেনসিডিল বিক্রি হয়। অন্য মাদকের বিষয়ে তিনি কিছু জানেনা বলে জানান। তবে মাদকসেবীদের কলারোয়া উপজে এই সহযোগী আরও জানান, বর্তমানে প্রতি বোতল ফেনসিডিল প্রকার ভেদে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। কারন বর্তমানে ভারত থেকে তিন প্রকার ফেনসিডিলের বোতলের সীমান্ত পেরিয়ে দেশে প্রবেশ করছে। যার কারনে দামের পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া কলারোয়া থানা পুলিশের ৩/৪জন সদস্য (নাম জানেন না) মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আটককৃত ফেনসিডিল ইনতাজের কাছে বিক্রি করেন। এগুলি ২১০০ টাকরা হয়। পুলিশ সদস্যদের মাদক বিক্রি ও সেবনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের নাম জানিনা। এছাড় এসব ফেনসিডিলগুলি রাতে ইনতাজের কাছে দিয়ে যায়। তবে ২/৩জন মাদক সেবন করেন জানিয়ে এবিষয়ে তিনি আর কোন তথ্য দিতে রাজি হননি।এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার সচেতন মহল অসাধু ও জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাদকসেবীদের অবাধ বিচরন, ইনতাজের প্রকাশ্যে মাদকের ব্যবসা এবং অসাধু পলিশনয়ন মাদক মুক্ত হতে পারবে না। এলাকার সাধারণ মানুষের দকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রাজিব ও মোস্তফা নামে দুই কর্মকর্তা ইনতাজকে কিছু না বলে বরং যারা মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে কৃষিসহ অন্য পেশায় জড়িত এমন মানুষদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে যার ফলে মাদক স¤্রাট ইনতাজ অপতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। এসব মানুষেরা এলাকায় মাদক নিমুর্লে থানা পুলিশের প্রতি আস্থা হারিয়ে র্যাব কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ইনতাজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার পরিবার থেকে বলা হয় তিনি জরুরী কাজে বাইরে আছেন। তার তবে ইনতাজের এক সহযোগী বলেন, রিপোর্ট করে কোন লাভ হবে না। বরং আমনার ক্ষতি হবে। যারাই আটক করতে আসবে তারাই ইনতাজের লোক! বরং আপনি ভায়ের সাথে কথা বলেন কিছু টাকার ব্যবস্থা করে দিবো কাজে ব্যাস্তার কারনে থানায় না থাকায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও কনেষ্টবলদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাছির উদ্দীন মৃধার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও মোবাইল ফোন ব্যস্থ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
কলারোয়ায় মাদকের ‘গডফাদার’ ইনতাজ প্রতিদিন প্রকাশ্যে ৩ লাখ টাকার ফেনসিডিল বিক্রি করছে
পূর্ববর্তী পোস্ট