আব্রাহাম লিংকন/জি.এম আমিনুর রহমান শ্যামনগর থেকে:
করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসনের কার্য্যক্রম। বিভিন্ন উপজেলায় যখন করোনা ভাইরাসের ছড়াছড়ি প্রানঘাতি এই মহামারির সংক্রমন রোধে শ্যামনগর উপজেলার প্রশাসন মাঠে মাঠে জনগণকে সচেতন করতে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে চলেছেন।
এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা ভাইস্ চেয়ারম্যান সাঈদুজ্জামান সাইদ বলেন, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী শ্যামনগরে হোম কোরেন্টাইন ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আনুমানিক ৩শ’ মানুষ আছে। তাদের খাদ্য পাঠাচ্ছি আমরা। এখন যতটুকু পাচ্ছি ততটুকু বন্টন করা হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত পরিমান এখনো আশা শুরু হয়নি। তবে তালিকা হচ্ছে আমরা প্রতিটি পরিবারে খাদ্য পাঠাতে সক্ষম হবো।
উপজেলা মহিলা ভাইস্ চেয়ারম্যান খালেদা আয়ুব ডলি বলেন, শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ থেকে মানুষের দোরগোড়ায় এই বার্তা পৌছে দিয়েছি যে, ভয় না করে সচেতন হই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাদের সাথে সব সময় যোগাযোগ রেখে চলেছি। এমন ধরনের প্রচারের মাধ্যমে মানুষ যখন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে এর মধ্য দিয়ে যেটুকু খাদ্য সমগ্রী আসছে আমরা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি মেম্বারদের মাধ্যমে সঠিক বন্টন করছি। তবে বাংলাদেশের সব থেকে বড় উপজেলা শ্যামনগর। আর বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি শ্রমজীবি বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ করে। এখন তারা এলাকায় ফিরছে এতে করে আমরা উপজেলা প্রশাসন বসে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। আর ত্রানের বিষয়ে কোন ইউপি চেয়ারম্যান বা ইউপি সদস্য অনিয়ম করলে আমাদের অবহিত করবেন আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন বলেন, ১২টি ইউনিয়নে ২৪টি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন তৈরী করা হয়েছে। বাহির থেকে আসা ব্যাক্তিরা বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে অবস্থান নিয়েছে। অঅর এ সংখ্যা ২শ থেকে ৩শ হতে পারে। বিদেশ ফেরতদের বাড়ীতে লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়ন ঘুরে চেয়াম্যানদের সাথে বিভিন্ন কার্যক্রম বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে যারা আছে আমরা প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে খাদ্য পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। ত্রানগুলো স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদে পৌছে যাচ্ছে। চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে সঠিক ভাবে বিতরণ করা হচ্ছে বা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজার গিফারী বলেন, শ্যামনগর থানায় এখনো পর্যন্ত করোনা ভাইরাস্ সনাক্ত হয়নি। সরকারী যে সিদ্ধান্তগুলো আসছে আমরা সেগুলো বাস্তাবয়ন করছি। সম্প্রতি যে সমস্যা, সেটি হলো- বিভিন্ন জেলা থেকে বিশেষ করে করোনা আক্রান্ত জেলাগুলো যেমন, নারায়নগঞ্জ, ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমজীবিরা নিজ এলাকায় ফিরছেন। আমরা তাদের জন্য চেকপোস্ট বসাচ্ছি এবং তাদের তালিকা করা হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ইউ পি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিশেষ করে যাদের বাড়ীতে ঐ ধরনের হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা নেই তাদেরকে বিভিন্ন স্কুলে প্রাতিষ্ঠানিক কোঢারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রধান মন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে যে সহায়তা পাচ্ছি তাদের খাওয়ার জন্য চাউল, আলু, সাবান, সুপেয় পানি পাঠিয়ে দিচ্ছি এবং তাদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় সেদিকে আমরা র্খেয়াল রাখছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সেনাবাহিনী, র্যাব, থানা পুলিশ সহ উপজেলা প্রশাসন টহল দিচ্ছে এবং আইন ভঙ্গ করে যারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে না তাদেরকে সচেতন এবং জরিমানা করছি। ৫ হাজার ৫শ’ মানুষের জন সরকারী ত্রান পেয়েছি সেগুলো ১২টি ইউনিয়নের বিতরণ করেছি। এমপি মহোদয়ের উদ্যোগ্যে একটি ভ্রাম্যমাণ টিম চালু করা হয়েছে। যেটার শ্লোগান “ডাক্তারের কাছে রুগী নয়, রুগীর কাছে ডাক্তার।” যদি কোন এলাকায় কোন প্রকার অক্রান্ত হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায় তাহলে এই ভ্রাম্যমান টিম সেখানে চলে যাবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হটলাইনে ফোন দিলেই ডাক্তার এবং নার্স প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে সেখানে অ্যাম্বুলেন্সে চলে যাবে।