
হাফিজুর রহমান: আজ রবিবার হতে সারা দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকিতে সকাল ১০টা হতে ৫টা পর্যন্ত আচারণ বিধি মেনে সীমিত আকারের দোকান এবং বিপনী বিতান/শপিং মহলগুলো খুলতে সরকারী নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে সকাল হতে করোনার মধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলার বাজার গুলোতে লক্ষ করা গেছে উপছে পড়া ভীঁড়। সংক্রমন ঠেকাতে সরকারের বিধি নিষেধ ও আচারণ বিধি মানছে না দোকান মালিক, ব্যবসায়ীগণ।
সকাল ৯টা হতে কালিগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নাজিমগঞ্জ বাজারে গেলে দেখা যায় কোন দোকান মালিক বা ক্রেতা সাধারণ অধিকাংশই মানছে না করোনা বিধি। সকাল ১০টা বাজার দুই ঘন্টা আগে দোকান মালিকরা যেমন দোকান খুলে বসে আছে, তেমনি ক্রেতারা ভোর হওয়ার আগেই কেনাকাটা করার জন্য বাজারগুলোতে ভিড় জমাতে দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ দোকানে ছিলনা হাত ধোয়ার পানি, বালতি বা স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা। দোকানের মধ্যে সামাজিক দুরত্ব না মেনে এক অপরের গায়ে চড়ে বসে আছে ক্রেতা সাধারণ। একইভাবে দেখা গেছে ইদের বেচা কেনার স্বার্থে দোকানের কর্মচারী বেশী নেওয়ায় তারাও সামাজিক দুরত্ব না মেনে একে অপরের পাশাপাশি বসে বেচা কেনা করছে। দেখে মনে হচ্ছে শুধু দায়িত্বটা উপজেলা প্রশাসন, সেনা, পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের। বাঁচার জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন দায়িত্ববোধ নাই।
ঘুরে ঘুরে দেখা যায় ভি,আই,পি ক্লথ স্টোর, মায়ের দোয়া বস্ত্র ভান্ডার, সমিতা বস্ত্রালয়, মেসার্স দাশ বস্ত্রালয়, আহছানিয়া, বস্ত্রালয়, গাইন বস্ত্রালয়, গাইন লিঃ, ওয়ার্ছি গার্মেন্স সহ একাধিক দোকান মালিক জানে না যে, দোকান কখন খুলতে হবে এবং কয়টা থেকে কয়টা পর্যন্ত তাদেরকে বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে এ বিষয়ে তাদের কে নাকি কেউ কিছু জানায়নি।
প্রথম দিন নাজিমগঞ্জ বাজার, নলতা বাজারের সরেজমিনে যেয়ে দেখা গেছে ক্রেতা বিক্রেতার পদচারনায় স্বরগরম। একই ধরনের চিত্র উপজেলার রতনপুর, মৌতলা, বাসতলা, উজিরপুর, তারালী, কদমতলা বাজার গুলোতে। দোকান গুলোতে শারীরিক দুরত্ব, হ্যান্ড গ্লাবস, মাস্ক না পরে কাজ করছে দোকান মালিক, কর্মচারী ও সামনে বসে আছে অধিকাংশ ক্রেতা সাধারণগণ। তবে লক্ষ করা গেছে গ্লাবস পরাতো দুরের কথা মাস্ক পরতে অনিহা লোকজনের। মাঝে মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, সেনা, পুলিশের গাড়ির শব্দ শুনলে বা দেখলে বাজার গুলোতে দৌড়া-দৌড়ী হিড়িক পড়ে যায়। প্রশাসনের উপস্থিতির সময় টুকু বাধ্যবাধগতা মেনে চললেও পরে তা আবার যেমন ছিল আকার রূপ ধারন করে। বিষয়টি দ্রুত উপজেলা প্রশাসনের নজরে এবং মনিটরিংয়ে আনার দাবী জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী।
তবে এ ব্যাপারে বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি ব্যবসায়িক ফিরোজ কবির কাজলের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, প্রত্যেক দোকান এবং ব্যবসায়ীকে জানানো হয়েছে। তারা যদি সরকারী করোনা বিধি না মেনে চলে তবে বাধ্য হয়ে বাজার বন্ধ করে দিতে হবে। এভাবে বাজার খুলে করোনার বিস্তার ঘটানো যাবে না।
এ ব্যাপারে বর্তমান বাজারের ভারপাপ্ত সভাপতি ও মথুরেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গাইন, এর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান বিষয়টি আমার মনে ছিল না। আগামীতে আমি বিষয়টি নিয়ে ব্যবাসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডাঃ সৈয়দ তৈয়বুর রহমানের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে অনেকেই আমাকে বলেছে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার পদক্ষেপ নেব।