অনলাইন ডেস্ক: বিশ্বের ১৮টি দেশের সরকারপ্রধান নারী। প্রায় সাড়ে ৫০ কোটি মানুষের বসবাস এসব দেশে। এটি বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৭ শতাংশ। বাংলাদেশ থেকে ইথিওপিয়া, জর্জিয়া থেকে সিঙ্গাপুর—নারীর রাজনৈতিক নেতৃত্ব জেগে উঠেছে। আর এই নেতৃত্ব এখন বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছে।
বিশ্বের জনপ্রিয় ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে করোনা মোকাবিলায় নারী নেতৃত্বের এ লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বিশ্বের আট নারী সরকারপ্রধানের নাম আছে, যাঁরা তাঁদের দক্ষতা দিয়ে পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন। এই আটজনের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও আছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের এই ম্যাগাজিন দাবি করেছে, বিশ্বের যেসব দেশ করোনার লাগাম টেনে ধরতে পেরেছে, সেগুলোর নেতৃত্বে রয়েছেন নারীরা। ম্যাগাজিনটিতে উদাহরণ হিসেবে জার্মানি, তাইওয়ান, আইসল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের কথা বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রায় ১৬ কোটির বেশি মানুষের বসবাস বাংলাদেশে। সেখানে দুর্যোগ কোনো নতুন ঘটনা নয়। আর এই করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন তিনি (শেখ হাসিনা)। তাঁর এই ত্বরিত সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (উই ফোরাম) বিষয়টিকে “প্রশংসনীয়” বলে উল্লেখ করেছে।’
প্রতিবেদনে সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট হালিম ইয়াকুব ও হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যামের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, করোনার সংক্রমণ রোধে এই দুই নারীর ত্বরিত এবং ব্যাপকভিত্তিক তৎপরতা সারা বিশ্বে প্রশংসা পেয়েছে। সিঙ্গাপুরে এখন দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। কিন্তু হংকং শুরু থেকেই এর লাগাম টেনে রাখতে পেরেছে। দেশের ভিন্নতায়, সংস্কৃতির ভিন্নতায় গৃহীত ব্যবস্থা ভিন্ন হতে বাধ্য। তাই সব ব্যবস্থা সব দেশে এক রকমভাবে উপযোগী না–ও হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জর্জিয়া ইউরোপের প্রথম দেশগুলোর একটি, যারা করোনা মোকাবিলায় প্রথম কার্যকর ব্যবস্থা নেয়। দেশটির নারী প্রেসিডেন্ট সালোমে জওরাবিচভিলি দ্রুত এই ব্যবস্থা নেন। যেসব অঞ্চল করোনার ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছিল, সেসব জায়গার সঙ্গে আকাশপথের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। জনগণের জন্য করোনাসংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন ব্যাপকভাবে। স্কুল বন্ধ করে দেন, সুনির্দিষ্ট এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করেন। এ দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা মাত্র তিন।
ফোর্বস-এর প্রতিবেদনে এসেছে নামিবিয়ার সারা কুগংগেলোয়ার নাম। গত বছরই জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবা তৈরিতে মনোযোগ দেন। যখন কোভিড নিয়ে জোরদার আলোচনা শুরু হয়নি, তখনই এ সিদ্ধান্ত নেন তিনি। নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি তাঁর দেশের করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা তহবিলে নিজের দুই মাসের বেতন দিয়ে দিয়েছেন।
বলিভিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট জেনাইন অ্যানেজ শুরুতেই লকডাউন ঘোষণা করেন। ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা এতে নাজুক হলেও সংক্রমণ রোধ করা গেছে দ্রুত লয়ে।
ইথিওপিয়ার প্রেসিডেন্ট সাহলে ওর্ক জেওডে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে করোনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন। (সূত্র: প্রথম আলো )