
পৌর মেয়র চিশতিসহ ২৬ জন করোনাক্রান্ত
নমুনার বিপরিতে আক্রান্তের হার ৫৪%
আহাদুর রহমান:
খোদ পৌর মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতি স্বাস্থ্যবিধি মানলেন না। করোনা পজিটিভ অবস্থায় তিনি ৭ দিন চুটিয়ে কাজকর্ম করেছেন। পৌরসভার ৩৫জন কর্মকর্তা ও কাউন্সিলরের করোনাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গতকাল ৭ জুলাই জেলা সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্য মতে ২৬ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এদের মধ্যে জেলা বিএনপির নেতা ও পৌর মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতিও আছেন।
সিভিল সার্জন সাতনদীকে জানান, গত ১ জুলাই তাসকিন আহমেদ চিশতির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা দেয়ার পর মেয়রের স্বাস্থ্যবিধি মেনে আইসোলেশনে থাকার কথা রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত। কিন্তু তিনি তা না মেনে নিয়মিত অফিস করেছেন। সভা-সমাবেশেও গেছেন যা খুবই দুঃখজনক। এখন তার অফিসের যে সব কাউন্সিলর-কর্মকর্তা ও কর্মচারী তার সংষ্পর্শে এসেছেন সবাই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। এসব মানুষের বাড়ী এখন লকডাউন না করলে সাতক্ষীরা পৌরসভা করোনার হটস্পট হয়ে যেতে পারে।
এদিকে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন, পৌরমেয়র তিনদিন অফিস করেছেন। টেন্ডার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জটিলতা থাকায় তাকে নিয়মিত অফিস করতে হয়েছে। গত তিনদিন পৌরসভায় যেতে দেখা গেছে কাউন্সিলর ফারহা দিবা সাথী, শাহিন, আব্দুস সেলিম, কাজী ফিরোজ হাসান, শফিকুল আলম বাবু ও অনিমা রায়। এছাড়াও অফিসের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়মিত অফিস করেছেন।
এ ব্যপারে পৌর মেয়রকে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে পৌরসভার সচিব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
এ দিকে ৭ জুলাই ২৬ জনের তালিকা দিয়ে সিভিল সার্জন জানিয়েছেন তারা সবাই করোনা পজিটিভ। নমুনা পাঠানো হয়েছিল ৫৬ জনের।
গতকাল পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ২৪২ জন। যশোর ও খুলনার ল্যাব থেকে গতকাল মঙ্গলবার পাওয়া নমুনা রিপোর্টে ২৬ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য বিভাগ। আক্রান্তদের মধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলার ২ জন, সাতক্ষীরা শহর ও সদরের ১০ জন, কলারোয়া উপজেলার ৬ জন এবং শ্যামনগর উপজেলার ৯ জনের নাম রয়েছে। নমুনা প্রেরণ থেকে করোনা শনাক্তের হার প্রায় ৫৪%।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস থেকে পাওয়া তথ্যা মতে নতুন করে করোনা আক্রান্তরা হলেন কালিগঞ্জ উপজেলার নলতার ফজলুর রহমান ও কুশখালির শাহিন।
সাতক্ষীরার শহরের কামালনগরে মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতি ও হাফিজুর রহমান, সুলতানপুরের আমির হোসেন, সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনের গোলাম আজম, রাজারবাগানের ফাতেমা, সুলতানপুরের আবুল বাশার, সদরের সিআইডি আনামুল হক ও নাজমা খাতুন, কাটিয়ার ডাঃ নাজিয়া মুজাহিদ এবং খুলনা রোড মোড়ের মাসুম বিল্লাহ।
কলারোয়া উপজেলার মুরারিকাটির আব্দুল মজিদ ও শেখ ইমরান হোসেন, নকিলার আফরোজা বিলকিস, তুলশিডাঙ্গার মামুন ইসলাম, কলারোয়া পৌরসভার মিসেস লিপিয়া খাতুন, দেয়াড়ার আজিজুল ইসলাম।
শ্যামনগর উপজেলার শ্যামনগর সদরের মিজানুর রহমান, মনিরুজ্জামান, রাজু ও চান্নু মিয়া, পিরকাবনের মফিজুর রহমান, বংশিপুরের রমজান আলি ও আব্দুল হান্নান, বাধঘাটার আবু হেনা ও নকিপুরের মনিরুল ইসলাম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি লক ডাউন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের ডাঃ জয়ন্ত সরকার।