এস.এম মজনু, পাটকেলঘাটা (সাতক্ষীরা) থেকে: দীর্ঘদিনের দাবীর মুখে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা বাজারের কপোতাক্ষ নদের উপর ব্রিজ নির্মানের কাজ শুরু হলেও বর্তমানে সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। নদের এক পাশে মাগুরা ইউনিয়ন ও অপর পাশে ইসলামকাটি ইউনিয়ন অবস্থিত। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের লাখো মানুষ প্রতিদিন এই নদের উপর নির্মিত একমাত্র বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। এর আগে তারা খেয়া পারাপার হতো। যার কারনে সাধারন মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করার। তাদের সেই দাবী পূরণ করার জন্য ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর কপোতাক্ষ নদের উপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য তৎকালীন সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুতফুল্লাহ উদ্বোধন করেন। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ১১ কোটি ৮০ লাখ ৫৬ হাজার ১৬৮ টাকা বরাদ্দ দেয়। তালা এলজিইিডি অফিস সুত্রে জানা যায়, খুলনার জেড টি নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিজটি নির্মাণের কাজ পায়। তারা সঠিক সময়ে কাজটি শুরুও করে। কিন্তু পিলার নির্মাণ সহ আনুষঙ্গিক কিছু কাজ করতে করতে হঠাৎ তারা লাপাত্তা হয়ে যায়। দীর্ঘ তিন বছর অতিবাহিত হলেও ব্রিজ নির্মাণের আর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সরজমিন দেখা গেছে, নদের দুপারে অসম্পন্ন দুটি পিলার নির্মাণ করে রাখা হয়েছে। আর নদের নীচে কিছু বাঁশ খুঁটি পুতা হয়েছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। স্থানীয়রা জানান, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবীর মুখে বিগত সরকার এখানে একটি ব্রিজ করার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী ঢাকঢোল পিটিয়ে কাজও শুরু করা হয়। অনেক আশা ছিলো ব্রিজটি নির্মাণ হলে এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি ফিরে আসবে। কিন্তু কাজ ফেলে মাঝপথে ঠিকাদার লাপাত্তা হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে আবার হতাশা ফিরে এসেছে। বাঁশের সাঁকো পার হওয়ার সময় সুজনসাহা গ্রামের নিছার আলী বলেন, এই যুগেও যদি এতো বড় নদী সাঁকো দিয়ে পার হতে হয় তাহলে কত পিছিয়ে রয়েছি আমরা। বরাবরই এ অঞ্চলের মানুষ উন্নয়ন বঞ্চিত। তবে এ বিষয়ে জানতে বার বার চেষ্টা করেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তালা উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা রথীন্দ্র নাথ রায় এ প্রতিবেদক কে জানান, মাগুরার এই ব্রিজ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের ধীর গতির কারণে তাকে কয়েকবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তিনি কোনো গুরুত্ব দেয়নি। উপয়ান্তর না পেয়ে অবশেষে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কাজ বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। তিনি যদি কাজ না করেন তাহলে নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোঃ রাসেল বলেন, ব্রিজটি যেভাবে অস্পন্ন অবস্থায় পড়ে আছে সেটা আমি নিজ চোখে দেখেছি। এলজিইডি কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করে এখানে যেনো দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ সম্পন্ন হয় আমি তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করব।