আহাদুর রহমান:
চুরি করা এক প্যাকেট আমসহ শরিফুলকে আটক করতেই আচমকা হামলা। ইছাক ও তার লোকজন মূহুর্তের মধ্যে কলেজ ছাত্রী রুপাসহ ৪ জনকে পিটিয়ে-কুপিয়ে হাড়ভাঙ্গা জখম করে। ঘটনাটি ঘটে গত ১০ই মে সাতক্ষীরা সদর থানার ছয়ঘরিয়া গ্রামে। নির্দয় এ ঘটনার ইন্ধনদাতা বিএনপি নেতা ইউসুফ বাবু গংরা।
হাড়ভাঙ্গা জখমের শিকার সিরজুল ইসলাম জানায়, গত ১০ই মে সকাল ৬টায় ছয়ঘরিয়া গ্রামের ইছাকের পুত্র শরিফুলকে চুরি করে পাড়া এক প্যাকেট ন্যাংড়া আমসহ ধরে ফেলা হয়। শরিফুল চিৎকার করলে ঘটনাস্থলে শরিফুলের পিতা ইছাক (৫৫), ভাই আরিফুল (১৮), মাতা ফাতেমা, চাচা ইসলাম ঘটনাস্থলে আসে। তাদের হাতে ছিল শাবল, কুড়াল, দা ও কাস্তে।
শাবল দিয়ে সিরাজুলের বাম হাত, তার ভাইঝি কলেজ ছাত্রী রুপার বাম হাত ভেঙ্গে দেয়া হয়। সিরাজুলের ভাইবৌ মমতাজের মুখে কাঁচি দিয়ে পোঁচ মারা হয়। মমতাজের মুখে চারটি সেলাই দেয়া হয়েছে। সিরাজুলের ছোট ভাই রেজাউলের হাতেও লাগে দায়ের কোপ। এ ঘটনার পর সিরাজুল, রুপা, মমতাজ বেগম সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। এক্স-রে রিপোর্টে সিরাজুল ও রুপার বাম হাতের হাড়ভাঙ্গা জখম দেখা গেছে। মমতাজ বেগমের মুখে ৪টা সেলাই দেয়া হয়েছে। রেজাউল ইসলাম প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। তিনদিন হাসপাতালে থাকার পর সিরাজুল, রুপা ও মমতাজ বাড়ী ফিরে যায়। বাড়ী ফিরে গত ১৩ মে বুধবার সিরাজুল বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এর কাছে একটা এজাহার দেয়। তদন্তে যান এসআই হাবিবুর রহমান।
এ দিকে হামলার সময় সেম সাইড আঘাতে ইছাকের স্ত্রী ফতেমা বেগমের হাতে ফোলা জখম হয়। তিনি প্রাথমিক চিকিৎসাও নেন।
এ দিকে ইছাকের স্ত্রী ফতেমা বেগমের আহত হওয়া নিয়ে একটি এজাহার থানায় দেয়া হলে তদন্তে যান এসআই কালাম। এই কালাম দারোগাই দাড়িয়ে থেকে থানা লাগোয়া রাইটার সাইদের কম্পিউটারের দোকান থেকে এজাহার লিখে দেয় হামলাকারীদের। হামলাকারীদের দেয়া সাজানো এজাহার রেকর্ড করার জন্য প্রভাবশালী একটি মহল মাঠে নেমেছে।
এদিকে হামলার শিকার সিরাজুল ইসলাম কাউন্টার মামলা থেকে রেহাই পেতে প্রতিকার চেয়ে পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।
ইছাক গংদের বেপরোয়া হওয়ার নেপথ্য কারণ:
ছয়ঘরিয়া গ্রামের মৃত মোকছেদ আলীর পুত্র ইউসুপ বাবু জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা। তিনি ঘর জামাই থাকেন শহরের নিউমার্কেট মোড়ে। তার ইন্ধনেই তার ভাই ইছাক, ইসলাম ও ভাইপো শরিফুল-আরিফুল বেপরোয়া।
ইছাক গংদের অপরাধের চিত্র:
ছয়ঘরিয়া গ্রামের নাজমুলের বাড়ী থেকে ২০ হাজার টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নাজমুলের স্ত্রী বেতারার মাথা ফাটায় ইছাকের পুত্র শরিফুল গংরা। বেতারার মাথায় ৯টি সেলাই দেয় হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়। মামলাটি বর্তমানে কোর্টে বিচারাধীন। ইউসুফ এর ভাই ইসলাম একই গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালেবের স্ত্রী শাহানারার জমির আইল ঠেলে জমি দখল করে। এ ঘটনায় শাহানারা থানায় অভিযোগ দেয়। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তারা গায়ের জোরে জমি দখল করে ঘর নির্মান শুরু করে, যা বর্তমানে নির্মানাধীন। ইছাকের পুত্র শরিফুল ভিক্ষুকের এক কিশোরি কন্যাকে মারধোর করে। কিশোরির অপরাধ ছিল সে তৃষ্ণার্ত হয়ে শরিফুলের সেচ পাম্পে পানি পান করেছিল। পার্শ্ববর্তী বলাডাঙ্গা গ্রামের এক কিশোর যুবকে অকারণে কাঁচি দিয়ে কুপিয়েছিল শরিফুল। ছয়ঘরিয়া গ্রামের মজিদের লাগানো অসংখ্য মেহগনি গাছ কেটে সাবাড় করেছিল শরিফুল।