
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাবা চেয়েছিলেন ছেলে বড় সরকারি চাকরি করবে। মা চেয়েছিলেন বাড়িতেই থাকবে। শরিফুল আসিয়া দম্পতির দেখভাল করবে। কিন্তু বিধিবাম। স্বপ্ন পূরণ হলোনা তাদের। সুন্দর পৃথিবীর আলো দেখা হলো না তার। মায়ের গর্ভ থেকেই অভিমানে চলে গেলো পেশাচিক ঘৃনিত ধরাধাম থেকে।
ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন: https://fb.watch/dlRBmVsnr4/
শরিফুল ইসলামের বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পূর্ব কৈখালী গ্রামে। তার সহধর্মীনি আসিয়া। আসিয়া অন্তঃস্বত্ত্বা। এই দম্পতির বারো বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। তাদের কোল আলো করে আসছিলো আরো এক পুত্র সন্তান। কিন্তু মে’র ২৭ তারিখ মানুষ রুপি একদল অমানুষ এই দম্পতির বাড়িতে পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলা করে। এসময় তারা শরিফুলের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী আসিয়াকে বে-ধড়ক পেটায়। লাথি মারতে ভোলেনি তার গর্ভের সন্তানকেও। শুধু তাই নয়। অবরুদ্ধ করে রাখা হয় কয়েকঘন্টা। জরুরী চিকিৎসা সেবাও নিতে পারেননি তারা। কিন্তু ৯৯৯এ ফোন দিলে কয়েকজন পুলিশ সদস্য গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তারা আসেন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে। দফায় দফায় টেস্ট, মেডিসিনের কড়া নিয়ম মানলেও বাঁচেনি আসিয়ার গর্ভের পুত্র সন্তানটি। চারদিন লড়াই করে অবশেষে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ছেড়ে গেল সকল মায়া।
শরিফুল ইসলাম বলেন, পূর্বের কিছু বিষয় নিয়ে আমার মামা অজিবর সরদারের সাথে ইস্রাফিল কয়াল ও জাহাঙ্গির কয়ালদের সাথে বিরোধ আছে। তাদের অপকর্মের বিষয়ে আমি নানা ভাবে আজিবর সরদারকে সহায়তা করার অপরাধে একাধিক মিথ্যা মামলায় আমাকে জড়িয়েছে পর্যন্ত। অথচ তাদের সাথে আমার কোন বিরোধ ছিলো না। শুক্রবার কোনরকম উষ্কানি ছাড়াই আমার বাড়িতে হামলা করে পূর্ব কৈখালীর হোসেন কয়ালের ছেলে ইস্রাফিলের নেতৃত্বে তার ছেলে আশিক কয়াল, জলিল সরদার ও তার ছেলে জাহিদুল সরদার, রহমত উল্লাহ সরদার, হোসেন কয়ালের ছেলে জাহাঙ্গীর কয়াল ও মিকাইল কয়াল, মোরশেদ কয়ালের ছেলে মিজান কয়াল, আবুল হোসেনের ছেলে মিয়ারাজ, আনোয়ার হোসেন, আনারুল, আজাদ গাজী। এসময় ইস্রাফিল কায়ল আমার অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীকে লাথি দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। বাকিরা সবাই মিলে আমার স্ত্রীর পেটে ও বুকে লাথি মারতে থাকে। এসময় আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা আমার স্ত্রীর ভাগ্নে আব্দুল কাদের ঘটনাস্থলে পৌছে তার ফুফুকে বাচাতে গেলে তাকেও সন্ত্রাসী বাহিনীর সবাই মিলে মারতে থাকে। একপর্যায়ে ইস্রাফিল বাড়ি থেকে চাপাতি নিয়ে এসে কাদেরর মাথায় কোপ দেয়। কাদেরের মাথা কেটে রক্ত ঝরতে থাকে। খবর পেয়ে আজিবর মামা আমাদের বাঁচাতে গেলে তাকেও মারপিট করে তারা। তাদের লাঠির বারিতে মামার ডান হাত ফুলে গেছে, ভেঙ্গেও যেতে পারে। পরে পুলিশ যেয়ে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়। হামলার ঘটনায় শরিফুল শ্যমনগর থানায় ২৮/০৫/২০২২খ্রিঃ ৪৬/১৯৬নং একটি মামলা দায়ের করেন। অবশ্য হামলাকারীরা শরিফুল ও তার নিকটাত্মীয়দের
অবশ্য এসব বিষয়ে হামলাকারীদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা কে এম রেজাউল করীম জানান, উভয় পক্ষের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। তবে এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। ভ্রুণ হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন মেডিকেল রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে কোন তথ্য দেয়া যাবে না।