নিজস্ব প্রতিবেদক: ঋনের বোঝা সইতে না পেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করল পান ব্যবসায়ী আবু হাসান (৪০)। তার বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের পূর্ব দহাকুলা গ্রামে। সে মৃত নুর আলী সরদারের পুত্র।
জানা যায়, গত আমের মৌসুমে আবু হাসান কয়েকটি এনজিও, ঘরোয়া সুদে কয়েকজন ব্যক্তি ও সাতক্ষীরা শহরের কয়েকজন আম ব্যবসায়ীর নিকট থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকা নিয়ে বেশ কয়েকটি আমের (মুকুল থাকা অবস্থায়) বাগান ক্রয় করে। কিন্তু এসব আম বাগানে চলতি মৌসুমে ঝড় বৃষ্টিতে আশানুরুপ ফলন না পেয়ে চরম লোকসানের মুখে পড়ে আবু হাসান। এতেই সে ঋনে জর্জরিত হয়ে পড়ে। একদিকে এনজিও ঋনের কিস্তি, অন্যদিকে ঘরোয়া সুদের টাকার চাপ এবং শহরের আম ব্যবসায়ীদের ঘন ঘন তাগাদায় দিশেহারা হয়ে পড়ে হাসান। পাওনাদারদের টাকার চাপে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ব্রহ্মরাজপুর বাজারে পান ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে পালিয়ে জীবন-যাপন শুরু করে। এসবের হতাশার মধ্যে পড়ে শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে বাড়ির সবার অজান্তে নিজ ঘরের আড়ায় গলায় রশি দিয়ে ঝুলে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তার ছোট কন্যা মিম (৮) টের পেয়ে চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দড়ি কেটে নিচে নামিয়ে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রোববার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবু হাসান মারা যায় বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রোববার সন্ধ্যায় তাকে দাফন করা হয়েছে।
হাসানের প্রতিবেশীরা জানায়, ঋনের জ্বালায় অতি কষ্টে তার সংসার চলতো। আম ব্যবসায় লস খেয়ে তার এ পরিনতি। ২ কাঠা ভিটে-বাড়ি ছাড়া আর কোন সম্বল নেই। তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে সোনিয়া খাতুন সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। ছোট মেয়ে মিম স্থানীয় ডিবি ইউনাইটেড প্রি-ক্যাডেট স্কুলে কেজি-১ পড়াশুনা করে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পুরো পরিবার এখন ঘোর আমানিশা দেখছে। এতিম পরিবারকে দেখে সবাই যেন নির্বাক।