
শ্যামনগর: জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের একটি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা। এই এলাকার দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত জীবিকার অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছে। এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে British High Commission–এর আর্থিক সহযোগিতায় CARE Bangladesh-এর Consortium Partner হিসেবে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা Cordaid -এর “নবপল্লব প্রকল্প” উদ্যোগ নিয়েছে টেকসই জীবিকা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার।
এরই অংশ হিসেবে ৩০ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে উপকূলীয় অঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের টেকসই জীবিকায়ন নিশ্চিত করতে Cordaid-এর সহযোগিতায় “নবপল্লব প্রকল্প” এর আওতায় শ্যামনগর উপজেলায় ৪০ জন উপকারভোগীর মাঝে ভেড়া বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রত্যেককে ২টি করে মোট ৮০ টি ভেড়া প্রদান করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ৫৬০ জন দরিদ্র পরিবারগুলোকে এই সহায়তা প্রদান করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, যিনি বলেন—“নবপল্লব প্রকল্পের এই উদ্যোগ উপকূলীয় অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবিকায়ন ব্যবস্থাকে আরও টেকসই ও লাভজনক করে তুলবে। গবাদিপশু পালন শুধু আয়ের উৎস নয়, এটি নারী ও পরিবারের ক্ষমতায়নেরও একটি কার্যকর মাধ্যম।”
Cordaid -এর নবপল্লব প্রকল্পের কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু সম্পদ বিতরণ নয়, বরং মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ভেড়া পালন উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবারের জন্য একটি কার্যকর ও টেকসই জীবিকার মাধ্যম হতে পারে। আমরা আশা করি, এই উদ্যোগের মাধ্যমে উপকারভোগীরা ধীরে ধীরে স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে যাবে।”
প্রধান অতিথি ছাড়াও অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, নবপল্লব প্রকল্পের কর্মকর্তা, মাঠকর্মী এবং উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন। উপকারভোগীরা বলেন, এই ভেড়া পেয়ে তারা নতুনভাবে জীবিকা গড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এতে তাদের পারিবারিক আয় বাড়বে এবং খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
Cordaid এর নবপল্লব প্রকল্প মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। প্রকল্পের আওতায় ভেড়া বিতরণের পাশাপাশি কৃষি প্রশিক্ষণ, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ব্যবসা সহায়তা এবং সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রমও বাস্তবায়িত হচ্ছে।
Cordaid বিশ্বাস করে, এই ধরনের জীবিকা সহায়তা কার্যক্রম শুধু উপকূলীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নই নয়, বরং তাদের জলবায়ু সহনশীলতা ও সামাজিক স্থিতিশীলতাও বৃদ্ধি করবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে নবপল্লব প্রকল্প ধীরে ধীরে উপকূলের প্রান্তিক মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে — যা টেকসই উন্নয়নের পথে একটি বাস্তব পদক্ষেপ।

