
নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৯ নভেম্বর শুক্রবার কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরী হলেও জেলা আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপে বিবাদমান দু’গ্রুপের মধ্যে বরফ হলেছে। হতে যাচ্ছে শান্তিপূর্ণ সম্মেলন। সমঝোতার মাধ্যমে ভারসম্যপূর্ণ নেতৃত্ব তৈরীর পরিকল্পনা করেছেন শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা।
বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টু আনারস প্রতিক নিয়ে দ্বিগুণভোট পেয়ে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনকে পরাজিত করেন। এরপর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পৃথক দু’টি গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচী পালন করতে থাকে। সর্বশেষ দলীয় সম্মেলন কাছে আসলে সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের দলীয় সম্মেলনে প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যায়।
এরপর পুরাতন কাউন্সিলরকে দিয়ে সম্মেলন করার প্রকাশ্য বিরোধীতায় নামে সাধারণ
সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টুর গ্রুপ। তারা দাবী তোলেন, নতুন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কাউন্সিলর তৈরী করে সম্মেলনের। এ নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে উপ্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরী হয়। মুখোমুখি অবস্থান নেয় দু’গ্রুপ।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাটে নেমে দ্বন্দ্বের বিষয়টি উপরি মহলের নজরে আনেন। এতে করে জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা দফায় দফায় দু’নেতাকে নিয়ে বসেন। তারা দু’পক্ষের মধ্যে সমন্বয় করে ফেলেছেন ইতোমধ্যে। ফলে উত্তপ্ত পরিস্থিতির উন্নতি হয়ে এখন বরফ গলতে শুরু করেছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানিয়েছেন, কোনভাবেই এক পেশে কমিটি মানবো না। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চায় কিন ইমেজের নেতৃত্ব। নিজে প্রার্থী না হতে পারার বিষয়টি মেনে নিয়েছি বলে তিনি জানান, কমিটি হতে হবে ভারসম্যপূর্ণ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন বলেন, তিনি দলের পরীক্ষিত। সম্মেলনে তিনি সভাপতি প্রার্থী। সম্মেলন হবে শান্তিপূর্ণ। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ নেই। দলের কাউন্সিলররা তাকে পুনরায় সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করবেন।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক স.ম মোরশেদ আলী জানান, স্বচ্ছতার সহিত তিনি রাজনীতি করেন। সম্মেলনে এক পেশে কমিটি করার চেষ্টা করা হলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তা মানবে না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জেলা পরিষদের সদস্য শেখ আমজাদ হোসেন জানান, ছাত্ররাজনীতি থেকে উটে আসা তার। তিনি রাজনীতির নামে ব্যবসা পছন্দ করেন না। স্বচ্ছতার সাথে রাজনীতি করে মানুষের সেবা করতে চান তিনি। এই মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা চান তৃণমূলে কিন ইমেজের নেতৃত্ব। তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে ত্যাগী প্রকৃত আওয়ামীলীগার এবং সাবেক ছাত্রনেতাদের উপজেলা আওয়ামী লীগের জায়গা করে দেবেন।
অপর সাধারণ স্মপাদক প্রার্থী আরাফাত হোসেন জানান, সন্ত্রাস, দূর্ণীতি ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে তিনি আপোষহীন। সম্মেলনে তিনি কাউন্সিলরদের সমর্থনে জয়ী হবেন।
কে হচ্ছেন সভাপতি ও সম্পাদক:
বৃহস্পতিবার কলারোয়া উপজেলাজুড়ে গুজ্ঞন উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্বে আসছেন কারা তা নিয়ে। বিবাদমান দু’গ্রুপই চাচ্ছেন তাদের পক্ষের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বঅচিত করতে। কিন্তু নেতৃত্ব নির্বাচনে এই উপজেলাতে কাউন্সিলরদের ভোট হচ্ছে না এটা মোটামুটি নিশ্চিত। সমঝোতার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা উপজেলার নেতৃত্ব ঠিক করে দেবেন এটিই অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে। তবে দুই গ্রুপের মধ্য থেকে সমঝোতার মাধ্যমে দুইজনকে শীর্ষ পদে নির্বাচিত করা হচ্ছে এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে। সেক্ষেত্রে ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন পুনরায় সভাপতি আর আমিনুল ইসলাম লাল্টু গ্রুপের মধ্য থেকে মোরশেদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। জেলা নেতৃবৃন্দরা কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতাকে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা আলোচনা করে সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি গঠণের পক্রিয়া ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করে ফেলেছেন। যার ফলে উপজেলাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবে আগামী তিন বছরের জন্য কারা হবেন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কা-ারী আজ সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ঘোষনা করা হবে।
সম্মেলনে অতিথি থাকছেন যারা:
কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা.আ.ফ.ম রুহুল হক এমপি, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নজরুল ইসলামসহ আরও অনেকে।