নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহাকে ঘিরে সাতক্ষীরার গার্মেন্টস সামগ্রীর মার্কেটগুলোতে নেই ক্রেতাদের ভিড়। ঈদ কেনাকাটায় আগ্রহ নেই মানুষের। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনায় অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নতুন জামা-কাপড় ক্রয়ের দিকে আগ্রহ নেই মানুষের। করোনায় গার্মেন্টেস দোকানীদের ক্ষতি ২০ কোটি টাকা। এদিকে, বেচাকেনা না থাকায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সাতক্ষীরা শহরে গার্মেন্টস সামগ্রী ও শপিং মল মিলে ২৫০টি দোকান রয়েছে। তবে এসব দোকানগুলোতে নেই আগের পরিস্থিতি। স্বাভাবিক বেচাবিক্রিও হচ্ছে না দোকানীদের। ঈদকে ঘিরে নতুন জামাকাপড় ক্রয়ের যে বাড়তি উৎসাহ উদ্দীপনা সেটিও নেই। অনেক দোকানী দোকানভাড়া দিতে পারছেন না। কর্মচারিরা দোকান ছেড়ে বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পেশা।
শহরের মল্লিকা গার্মেন্টস সামগ্রীর সত্ত¦াধিকারী মদন মোহন বিশ^াস বলেন, দোকানে কোন ক্রেতা নেই। ৩০০-৪০০ টাকার বেচাকেনা হচ্ছে। আবার কোনদিন হচ্ছেও না। দোকান খুলে বসলে, দোকানভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারি খরচ সব মিলিয়ে ২-৩ হাজার টাকা খরচ। খরচের টাকাও জোগাড় হচ্ছে না। আবার ব্যাংকের ঋণ রয়েছে। সবমিলিয়ে গার্মেন্টেসের ব্যবসা এখন খুব খারাপ।
শহরের বিক্রমপুর গার্মেন্টেসের মালিক ইসমাইল হোসেন জানান, ঈদ কেনাকটায় বাড়তি কোন চাপ নেই। স্বাভাবিক নিয়মে বেচাকেনা হচ্ছে। ঈদের আগের বেচাবিক্রির একটু বাড়তি চাপ থাকে। তবে এখন মনেই হচ্ছে না ঈদ আসছে। এখন ২০-২৫ হাজার টাকা বেচাবিক্রি হচ্ছে। তবে এমন সময়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকারও বেশী বেচাবিক্রি হওয়ার কথা ছিল।
সাতক্ষীরা জেলা গার্মেন্টস মালিক সমিতির সভাপতি শেখ গোলাম রসুল জানান, করোনার প্রভাবে রোজার ঈদেও আশানুরুপ বেচাকেনা হয়নি। এবার কুরবানী ঈদে তার থেকেও অবস্থা খারাপ। ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপর্যয়ে। করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা ২০ কোটি টাকার বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অনেকে দোকানভাড়া, কর্মচারিদের বেতন দিতে পারছে না। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে অনেক দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাবে। বেচাবিক্রি নেই, যেটুকু হচ্ছে সেটি উল্লেখযোগ্য নয়।
বেচাবিক্রি না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্তমানে করোনার কারণে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের আয় রোজগার কমে গেছে। যার কারণে বাড়তি খরচের বাজেট নেই। ফলে নতুন জামা কাপড় কিনতেও চাইছেন না অনেকে।
সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু বলেন, করোনার প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। মানুষ চলার স্বাভাবিক গতি হারিয়েছে। প্রভাব পড়েছে সকল ব্যবসা-বানিজ্যে। শুধু গার্মেন্টস ব্যবসা নয় সব শ্রেণির ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ। টাকার অংকে সেই ক্ষতি নিরুপণ করা কঠিন।