সচ্চিদানন্দদেসদয়: সেফ ইসলামী গ্রুপ লিঃ এর আশাশুনি অফিসে তালা ঝুলিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে কর্মকর্তারা উধাও হয়ে গেছে। এলাকার হাজার হাজার সেফ সদস্য তাদের সঞ্চিত টাকা খুইয়ে কর্মকর্তাদের পাগলের মত খুজে ফিরছেন।
সেফ ইসলামী গ্রুপ লিঃ (রেজিঃ নং- ১১৪৬/১২) খুলনা থেকে বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলে অফিস, শাখা কর্মকর্তা ও এজেন্ট নিয়োগ করে দীর্ঘদিন যাবৎ সদস্য ভর্তি করে কারবার চালিয়ে আসছে। সদস্যদেরকে বিনিয়োগ জমা বইয়ে জমাকৃত টাকা লিখে কোন প্রকার জমা রশিদ না দিয়ে টাকা আদায় করে আসছিল। তারা সদস্যদের থেকে মাসিক সর্বনি¤œ ৫০০ টাকা থেকে যে যা দিতে পারে জমা নিয়ে ৫ বছর মেয়াদী আদানতকারী ভর্তি করে থাকে। এবং সর্ব নি¤œ ৫০ হাজার টাকা থেকে যে যত দিতে পারে এককালীন জমা নিয়ে ফিক্টস ডিপোজিট সদস্য করে থাকে। টাকা জমা দিয়ে প্রতি লাখে মাসে ১১০০ থেকে ১৪০০ টাকা লভ্যাংশ প্রদান কিংবা মেয়াদান্তে লভ্যাংশসহ জমাকৃত টাকা প্রদানের চুক্তিতে টাকা জমা নেওয়া হয়েছে। উপজেলার কাদাাকাটি ইউনিয়নের তেতুলিয়া এলাকার এজেন্ট ৃত লতিফ সরদারের পুত্র আঃ কাদের, জাহেদ সরদারের পুত্র আজিজ সরদার, মিত্র তেতুলিয়া গ্রামের কামাল গাজীর পুত্র রাসেল, এলাকার বিল্লাল, রুস্তম, আবুল, আরিফুল, আঃ রহমান, ফকরাবাদ গ্রামের এছমাইল হোসেনসহ অন্য বহু এজেন্ট এবং উপজেলা কর্মকর্তা ফকরাবাদ গ্রামের মৃত শমছের আলির পুত্র এছহাক আলি আশাশুনি থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে জমাদানকারীদের একটি বড় অংশের ডিপোজিট এর মেয়াদ শেষ হয়েছে, এখন তাদের চুক্তিমত লভ্যাংশসহ জমাকৃত টাকা ফেরৎ দেওয়ার কথা। গ্রাহকরা যখন টাকা উত্তোলনের জন্য আবেদন করতে শুরু করেছে, ঠিক তখন উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন এবং উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা অফিস গুটিয়ে এবং এজেন্টরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। সদস্যরা এখন উপজেলা অফিস ও এজেন্টেদের অফিস বা বাড়িতে গিয়ে টাকা ফেরৎ পাওয়ার উপায় নিয়ে হন্যে হয়ে তাদেরকে খুজছেন। প্রতারিত সদস্যদের মধ্যে তেতুলিয়া গ্রামের আলহাজ¦ মরহুম নূর হোসেনের পুত্র ৬০ লাখ ও ৭০ হাজার টাকা দুটি বই করেছেন, আমিনুর রহমান ডাবলুর স্ত্রী রুকাইয়া নিজে ৫০ হাজার টাকা ও প্রতিবন্দ্বি কন্যা ফজিলার নামে ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন, শাহনগর গ্রামের গোলাম কাদেরের পুত্র মোহাম্মদ আলি শাহ ৫০ হাজার টাকা, তেতুলিয়ার আয়ুব আলির সরদারের স্ত্রী শাহিনা ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা, ফকরাবাদের মাকাস সরদারের পুত্র শহিদুল ২ লক্ষ টাকা, জামালনগর গ্রামের মৃত আঃ ছাত্তার সরদারের পুত্র আবু বক্কর ৮ লক্ষ টাকা জমা করেছেন। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ এভাবে কোটি কোটি টাকা জমা দিয়েছেন। এখন তারা অফিস বন্ধ দেখে এবং কর্মকর্তা ও এজেন্টদের না পেয়ে কেঁদে কেঁদে ফিরছে। এজেন্ট আঃ কাদের জানান, তাদের (সেফ) চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন (খুলনা), ভাইস চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন ও এমডি মামুন চিকিৎসার জন্য বিদেশে চলে গেছেন গত ১৫ অক্টোবর। এজন্য হেড অফিস বন্দ হয়ে হয়ে যাওয়ায় ২৪ অক্টোবর হতে সকল এলাকায় লেনদেন বন্ধ রয়েছে। আরেক এজেন্ট আজিজ সরদার জানান, তিনি ২ কোটি মত টাকা সদস্যদের থেকে আদায় করেছেন। তারা টাকা দাবী করতে থাকায় তিনি এলাকা ছেড়ে খুলনায় এসেছেন। টাকা পেলে এলাকায় ফিরবো। প্রতারনার শিকার গ্রাহকরা বলেন, একসাথে ৩ কর্মকর্তার বিদেশ যাত্রা অসুস্থতার জন্য নয়, বরং হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে তারা বিদেশে পালিয়েছেন। এজেন্ট ও উপজেলা অফিস বন্ধ করে সকলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাদের সঞ্চিত কোটি কোটি টাকা কিভাবে উদ্ধার হবে তা তারা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেননা। এব্যাপের প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন গ্রাহকরা।