
সচ্চিদানন্দদে সদয়, আশাশুনি: আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকটসহ বিভিন্ন দুরবস্থার কারণে স্বাস্থ্য সেবার মান ভেঙ্গে পড়েছে। বাধ্য হয়ে রোগীরা হাসপাতালে না গিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিক ও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে। ফলে রোগীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত আশাশুনি উপজেলা। অধিকাংশ এলাকা প্রত্যন্ত ও যাতায়াত ব্যবস্থা অনুন্নত। অনেক ইউনিয়নে প্রধান প্রধান সড়ক নির্মিত হলেও অভ্যন্তরীন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা যথেষ্ট অনুন্নত। এলাকার মানুষ সাধারণ অসুখ বিসুখে হাসপাতাল মুখো হতে চায়না। অধিকাংশ মানুষ পল্লী চিকিৎসকদের কাছেই চিকিৎসা নেন। আবার অনেকে হাসপাতালে আসতে চাইলেও ডাক্তার, ওষুধ এবং সর্বোপরি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না থাকায় একবার গেলে দ্বিতীয়বার আর না যাওয়ার চেষ্টা করেন। আশাশুনি হাসপাতালে এখন নেই আর নেই শব্দ ব্যবহার হচ্ছে। তিন লাখ জনসাধারনের জন্য মাত্র তিন জন ডাক্তার দিয়ে কোন রকমে চলছে।নেই ডিজিটাল এস্করে। প্যাথলজি বিভাগ থাকলে টেকনোশিয়ান এর অভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা কাগজে কলমে। নেই ষ্টোর কিপার।সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এ হাসপাতালে ২১টি পদের বিপরীতে টিএইচএ সহ মাত্র ৩ জন এমবিবিএস ডাক্তার কর্মরত আছেন। আয়ুর্বেদ চিকিৎসার ডাক্তার থাকলেও নেই ডেন্টাল সার্জন। নার্সের ১৬টি পদের বিপরীতে আছেন ১৩ জন, যার মধ্যে ৩ জন ডেপুটেশানে অন্যত্র কর্মরত আছেন। দ্বিতীয় শ্রেনির ১৯ টি পদেও মধ্যে ১৩ জন কমরত আছেন। তৃতীয শ্রেনির ১৪১ টি পদের বিপরীতে কর্মস্থলে আছেন ১০৮ জন। ৪র্থ শ্রেনির চার জনের মধ্যে ৩ জন কর্মরত আছেন। ওয়ার্ড বয় শূন্য অবস্থায় আছে। নেই কোন নিরাপত্তা রক্ষী ও আয়া। হাসপাতালের এম্ব্যুলেন্স বিকল হয়ে পড়ে আছে। নেই চিকিৎসার জন্য ডিজিটাল এক্সরে,ডেন্টাল মেশিন। হাসপাতালে দীর্ঘদিন সিজার করা না হলেও বর্তমানে হচ্ছে। এ্যানেথেসিয়া ডাক্তারের পদটি দীর্ঘদিনেও পূরন হয়নি।
আইপিএস দীর্ঘদিন বিকল হয়ে পড়ে আছে। জেনারেটর থাকলেও ব্যবহার করা হয় না। এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ওষুধ স্বল্পতা, চিকিৎসকের অভাবে ঠিকমত চিকিৎসা সেবা না পাওয়াসহ রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। তারপরেও এলাকার অসহায় মানুষ চিকিৎসা পেতে হাসপাতালে আসছেন। হাসপাতলের বেডে প্রতিদিন গড়ে ২০/৩০ জন করে রোগী থাকেন। আউটডোরে (জরুরী ও বহিঃ বিভাগ) প্রতিমাসে গড়ে ৩০০০ থেকে ৫০০০ রোগী আসেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অরুন কুমার ব্যানার্জী বলেন, চিকিৎসক সংকট বরাবর এ হাসপাতালে রয়েছে। জনবল চেয়ে ইতি মধ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট অবকাঠামো থাকলেও ৩১ শয্যার নিয়মে চলছে।ঔষধ ও আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্রের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই এর সমাধান হবে। বর্তমানে ডেঙ্গু প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের এখানে ডেঙ্গুর ব্যাপকতা নেই। কোন রোগির সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। আমাদের ডেঙ্গু মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত পরিমান ব্যবস্থা আছে। এছাড়া অনেক সমস্যা আছে। অসুবিধা ও সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে।