সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনি থেকে: আজ (বুধবার) আশাশুনি উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে পাড়া মহল্লায়। তবে অনেকেই বলছেন ইউপি নির্বাচন উৎসবের আমেজ ছড়ালেও ভোট গ্রহণের সময় এগিয়ে আসার সাথে সাথে বাড়ছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। ভোটারদের মধ্যে চলছে উত্তেজন আর চরম হিসাব-নিকাশ পাওয়া-না পাওয়ার সমীকরণ। ইতোমধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষে নির্বাচন কমিশন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেশ তৎপর। ইতিমধ্যে উপজেলা জুড়ে পুলিশি টহলও বেশ জোরদার। বিশৃঙ্খলা আর অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর স্বার্থে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। পুলিশের কর্মকর্তারা প্রত্যেক প্রার্থীর উপর সতর্ক নজরদারিসহ আইন ভঙ্গকরা হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার হুশিয়ারী বার্তাও পৌঁছে দিচ্ছে বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের কাছে। পাশাপাশি ম্যাজিষ্ট্রেট ও গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরাও রয়েছেন মাঠে। প্রশাসনের কড়া নজর রয়েছে প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের উপর।
সোমবার রাত ৮ পর নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এলাকার আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়িয়ে থাকায় কে কাকে ভোট দিবে তা নির্নয় করতে পারছে না অনেক সাধারন ভোটার। আশাশুনির বুধহাটা ইউনিয়নে ছয়জন, কুল্যা ইউনিয়নে চারজন, দরগাহপুর ইউনিয়নে ছয়জন, বড়দলে সাতজন, আশাশুনি সদরে তিনজন, শ্রীউলায় তিনজন, খাজরায় সাতজন, আনুলিয়ায় তিনজন, প্রতাপনগরে ছয়জন ও কাদাকাটিতে চারজন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছে। এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ছাড়াও জাতীয় পার্টি দুইটি ইউনিয়নে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চারটি ইউনিয়নে ও জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল (জাসদ) একটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। উপজেলার গড় হিসাবে প্রতি ইউনিয়নে আ.লীগের দলীয় প্রার্থীর (নৌকা প্রতীক) বিপক্ষে ৩ জন করে প্রার্থী জয়ের জন্য লড়াই করছেন বলে জানা গেছে। এলাকার ভোটারা জানান, নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীদের মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আশাশুনির ১ নং শোভনালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী ও জামায়ত সমর্থিত প্রার্থীর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে ভোটাররা জানান। ২ নং বুধহাটা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বিএনপি (স্বতন্ত্র) প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে। ৩ নং কুল্যা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে, ৪ নং দরগাপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে, ৫ নং বড়দল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীর মধ্যে, ৬ নং আশাশুনি সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে, ৭নং শ্রীউলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে লড়াই, ৮নং খাজরা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে, ৯ নং আনূলিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীর মধ্যে লড়াই, ১০ নং প্রতাপনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হতে পারে বলে জানা গেছে। ১১ নং কাদাকাটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে বলে জানা গেছে।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুজ্জামান শিকদার জানান, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলায় এই প্রথম ১ টি ইউনিয়নে (বুধহাটা) ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট নেয়া হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রতিটি কেন্দ্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ আনুষঙ্গিক সব ব্যবস্থা নেয় হয়েছে। নির্বাচনে কোন প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।