
সচ্চিদানন্দদেসদয় আশাশুনি প্রতিবেদক: নেশার রাজ্যে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে ঘুমের টাবলেট। ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, গাঁজা, ও মদের পর যুক্ত হয়েছে ঘুমের ট্যাবলেট। আশাশুনির ছোট বড় হাট বাজারে বিভিন্ন এলাকায় ইদানীং মাদক সেবীদের কাছে বেশ প্রিয় হয়ে উঠেছে এ ঘুমের ট্যাবলেট। বিভিন্ন নেশা সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধির কারনে মাদক সেবিরা এখন ঝুকে পড়েছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর ঘুমের ট্যাবলেটের দিকে। ঘুমের ট্যাবলেট সেবন আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় দিন দিন তরুন প্রজন্ম অন্ধকারে দিকে ধাবিত হচ্ছে। ফলে অভিভাবকরা তাদের উঠতি বয়সের সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
সূত্রেজানা যায়, আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন হাটা বাজারে ১৩৭ টি লাইসেন্স ধারি এবং অসংখ্যা লাইসেন্স বিহন ফার্ম্মেসি রয়েছে। নিয়মানুয়ায়ী সরকারি নিতীমালায় প্রত্যেক দোকানে একজন প্রশিক্ষিত ফার্ম্মাসিস্ট অবশ্যক। আশাশুনির হাতে গোনা কয়েক টি দোকানে ফার্ম্মিিসষ্ট রয়েছে। অধিকাংশ দোকানেই নেই কোন ফার্মাসিষ্ট। সরকারি নীতিমালায় যে কোন ওষুধ চিকিৎসকের ব্যবস্থা পত্র ছাড়া বিক্র করা নিষেধ রয়েছে। চিকিৎসকের ব্যাবস্থাপত্র ও ফার্মাসিষ্ট নিয়ন্ত্রনাধীন ওষুধ বিক্রির কথা থাকলেও মানা হচ্ছে না সে সব নিয়ম নিতী। কোন নিয়ম নীতি ছাড়াই লাইসেন্স ধারী ও লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসিগুলোতে অবাধে বিক্রয় হচ্ছে ঘুমের ট্যাবলেট। সেই সাঙ্গে পিছিয়ে নেই গ্রামাঞ্চলের মুদি দোকান গুলো। বিভিন্ন নামি দামী ও নামসর্বস্ব ওষুধ কোম্পানির ঘুমের ট্যাবলেট বাজার সয়লাব। নেশার উদ্দেশ্যে আসক্ত ব্যক্তিরা ক্রয় করে তা সেবন করছে। সূত্র জানায় সেবনকারিরা প্রতিদিন একই ফামের্¥সি থেকে ২/৩ পাতা ঘুমের ট্যাবলেট ক্রয় করছে। ফার্ম্মেসির লোকদের সঙ্গে তাদের সখ্য গড়ে ওঠায় ক্রয়ে কোন বিপত্তি ঘটেনা। অতি সহজেই তারা ঐসব ট্যাবলেট পাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশাশুনির কামালকাটি বাজার, বিছট বাজার, বদরতলা বাজার, কাটাখালি বাজার, শ্রীউলা বাজার, আশাশুনি বাজার, হাজরাখালি বাজার, বুধহাটা বাজার, নাকতাড়া বাজার, গোদাড়া বাজার, খাজরা বাজার, বিছট বাজার, তুয়ারডাঙ্গা বাজার, মহিষকুড় বাজার, গোয়ালডাঙ্গা বাজার, মাড়িয়ালা বাজার, কাঁকড়াবুনিয়া বাজার, প্রতাপনগর বাজার, আনুলিয়া, কাদাকাটি বাজার, বাইনতলা বাজার, মদ্যম একসরা বাজার, কাপসন্ডা বাজার, বসুখালি, কাকবাসিয়া বাজার, হাজরাখালি, পুঁইজালা, হেতালবুনিয়া, হিজলা, কালিবাড়ি, তেঁতুলিয়া, চেঁচুয়া, দক্ষিন একসরা, নাটানা, জামালনগর, তালতলা বাজার, কুল্যার মোড়, গুনাকরকাটি, সোনাতলা, বিছট, পাইথলী, খরিয়াটি, গাজিরহাট এ সমস্ত এলাকার লাইসেন্স প্রাপ্ত ও লাইসেন্স বিহীন দোকানে অবাধে ঘুমের ট্যাবলেট বিক্রয় হচ্ছে। অনেক ফার্ম্মেসির মালিক বলেছেন আমরা ব্যবস্থা পত্র ছাড়া কোন ঔষধ বিক্রয় করি না। ঘুমের ট্যাবলেটের মধ্যে রয়েছে ইজিয়াম, কেøাবাম, এমিট্রিপটাইলিন, ডরমিটল প্রভৃতি। আশাশুনি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা জানান, রেজিষ্ট্রেশন ও বিশেঞ্জ চিকিৎসকের ব্যবস্থা পত্র ছাড়া ঘুমের ট্যাবলেট বিক্রয় করা সম্পূর্ণ নিষেধ। তা ছাড়া ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন কোন ফার্মেসির মালিকের কাছে এ সকল্ ঔষধ বিক্রয় করা সম্পূর্ন নিষেধ।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন বলেন, এসব ট্যাবলেট ঘুম, ব্যথানাশক এবং শারীরিক উপশমের জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এক নাগাড়ে দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে তা তার জীবনের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সিভিল সার্জন আরও বলেন,ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ছাড়াই ওষুধ বিক্রি অপরাধ। তিনি ‘এ ব্যাপারে সরাসরি আমাদের নজরদারী করা জরুরি হয়ে পড়েছে’।