
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) : আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের আগরদাড়ী দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের নামে ওয়াকফকৃত সম্পত্তির উপর সরকারী আইন ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পাকা ঘর নির্মান কাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগরদাড়ী গ্রামের লুৎফর রহমান ও তার পুত্র মাস্টার মনিরুল ইসলাম দালিলীক প্রমাণ ছাড়া দখল করে পাকা কনক্রিটের বাড়ি নির্মানের কাজ শুরু করেছেন।
জানাগেছে, রাস্তা ও লুৎফর রহমানের বাড়ির মাঝে ৩৭ শতক সম্পত্তির মালিক মৃত রহমান সরদার গং। লুৎফর রহমান ঐ সম্পত্তি ক্রয়ের জন্য নানাভাবে প্রস্তাব দিতেও মৃত রহমান সরদার গং জমি বিক্রিতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা সম্পত্তিতে মলত্যাগ, আবর্জনা ফেলা সহ আবাদি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করতে থাকলে দু’পক্ষের মধ্যে গোলোযোগ চলতে থাকে। পরবর্তীতে অতিষ্ঠ হয়ে রহমান সরদার গং জমি আগরদাড়ী জামে মসজিদের নামে দান দলিল করে দেন। যার খতিয়ান নং ৩১৪ এবং দলিল নং ৫৫৪০। কিন্তু সম্পত্তির নেশায় মত্ত্ব লুৎফর রহমান মসজিদের সম্পত্তি কোনোভাবে হস্তান্তর হয়না জানার পরেও অত্যন্ত চাতুরতার সাথে কুট কৌশল করে মসজীদের মুসল্লী ও সভাপতির আস্থাভাজন হওয়ার জন্য এলাকায় ধর্মীয় কাজে ব্যাপক দানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচার করতে থাকে। মসজিদ পুন:নির্মাণ করলে অর্থ সংস্থান করা সহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তৎকালীন সভাপতি অত্যন্ত সরল সাদামনের মানুষ ধার্মিক ও সমাজসেবক ঈমান আলী সরদারকে যেকোনো উপায়ে ম্যানেজ করে। লুৎফর রহমানের প্ৰকৃত উদ্দেশ্য সরল সহজ সভাপতি বুঝতে না পেরে মসজিদের ঐ ৩৭ শতক সম্পত্তি থেকে লিজ, বর্গা বা অন্য উপায়ে অর্থ আয়ের পথ খোজেন। তৎকালীন মোতাওয়াল্লী বা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ ঢালী সহ অধিকাংশ মুসল্লী দীর্ঘদিনের জন্য লীজ প্রদানে অমত থাকলেও সভাপতির সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মৌখিকভাবে লুৎফর রহমানের কাছে লিজ প্রদান করেন। লুৎফর রহমান সম্পত্তি ভোগ করতে থাকেন এবং কিছুদিন পরে তিনি সম্পত্তি মৌখিকভাবে কিনেছি বলে প্রচার করতে থাকেন। তার ভ্রাতুষপুত্র সহ প্রতিবেশি আওয়ামীলীগের দাপুটে নেতাদের সাথে মাস্টার মনিরুলের সম্পর্ক থাকায় ক্ষমতার দাপটে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কোনরূপ কাগজপত্র ছাড়া জমিটি নিজের দখলে রাখেন। পরবর্তীতে পাকা বাড়ির কাজ শুরু করলে গ্রামবাসীর অমত থাকলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাইনি। পিতা-পুত্র মিলে মসজিদের সম্পত্তি বে -আইনিভাবে দখল করে স্থায়ীভাবে ভোগ করার অসৎ উদ্দেশ্য ও মুখোস এখন উন্মোচিত হচ্ছে। কোনোরূপ দলীলিক প্রমাণ ছাড়া ধর্মীয় স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিতে শুধুমাত্র গায়ের জোরে পাকা বাড়ির চলমান কাজ ও অবৈধভাবে ভোগ দখলকারীর বিরুদ্ধে গ্রামবাসী এখন সোচ্চার। মুসল্লীদের কথায় ঘটনাটি সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। সরকার ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি বর্গের কাছে তাদের দাবি মসজিদের উক্ত ৩৭ শতক সম্পত্তি যার দলিল নং-৫৫৪০, খতিয়ান নং-৩১৪ এবং দাগ নং-১০১৩ এর বে-আইনিভাবে ভোগ দখল মুক্ত করে মসিজদের দখলে পুনরুদ্ধার করা হোক। এব্যাপারে ১৪৫ ধারায় পি-১০৪১/২৫ নং মামলা করা হলে বিজ্ঞ আদালত নিমার্ণ ও আনুসঙ্গীক কাজ বন্ধ রেখে তদন্ত করার রায় দিয়েছেন। মুসল্লীদের দাবী অভিযোগ সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক। এব্যাপারে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানার জন্য চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।