নিজস্ব প্রতিবেদক: একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক ও সাংবাদিক মাসুদুর রহমানকে মামলায় জড়ানো হলো। শুক্রবার দিনভর দু’পক্ষের মধ্যে মধ্যস্ততার পর পুলিশ বাদীর অমতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। ঘটনাটি নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
সরেজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, আশাশুনি ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক ও দৈনিক সাতনদী’র বার্তা সম্পাদক পেশাগত কাজ শেষে শ্রীউলা ব্রীজ থেকে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে ভুল রাস্তায় প্রবেশ করে রাস্তার ওপর দাঁড়ানো এক ক্লাস নাইন পড়–য়া কিশোরী মাসকুরার কাছে সঠিক পথের কথা জানতে চান। এত ওই কিশোরী ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। পার্শ্বেই ছিল ৫/৭ জন যুবক। তারা এগিয়ে এসে পরিচয় জানতে চাইলে মাসুদুর রহমান নিজেকে শিক্ষক এবং সাতনদী পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেন। তারা মাসুদুর রহমানকে শুয়োরের বাচ্চা গালি দিয়ে বলে, তোরাই সাতনদী পত্রিকায় আমাদের বিরুদ্ধে নিউজ করিস। এই বলেই তারা মাসুদুর রহমানের ওপর চড়াও হয়ে মারপিট করে। উল্লেখ্য, অতিসম্প্রতি শ্রীউলা ইউনিয়নের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে সাতনদী পত্রিকায় একাধিক খবর প্রকাশিত হয়। এ সময় সংক্ষুদ্ধ কিশোরী তার পিতা যাকির হোসেনকে মোবাইলে খবর দেয়। যাকির হোসেন ঘটনাস্থলে পৌছে আশাশুনি থানায় ফোন করলে এসআই মামুন ঘটনাস্থলে যায়। পরে উদ্ধার করে মাসুদুর রহমানকে থানা হাজতে রাখা হয়। এরই মধ্যে ঘটনাটি জানাজানি হলে আশাশুনি শহরের অর্ধশতাধিক গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ থানা গেটের সামনে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে কিশোরীর পিতা যাকির হোসেন, মাতা বানু এবং কিশোরীর কাছে গন্য মান্য ব্যাক্তিরা বিষয়টা জানতে চান। বিষয়টি জানা শোনার পর কিশোরীর পিতা যাকির হোসেন উপস্থিত গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে উদ্দেশ্য করে বলেন, থানায় আমরা কোন লিখিত এজাহার দেইনি এবং দেবও না। পরে উপস্থিত শ্রমিকলীগের সভাপতি ঢালী শামসুল আলম, আশাশুনি প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুখ হোসেনসহ ৪/৫ জনের একটি দল কিশোরীসহ তার পিতা যাকির হোসেন, মাতা বানুকে নিয়ে থানা ভবনের মধ্যে যান। তারা বিষয়টি ইন্সপেক্টর তদন্ত মোস্তাফিজুরকে জানান। এ সময় তিনি বিষয়টি নিয়ে সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে কথা বলার জন্য পরামর্শ দেন। পাশাপাশি তিনি কিশোরীসহ তার পিতা-মাতাকে এজাহার দেয়ার জন্য চাপ দেন।
এক পর্যায়ে ওসি তদন্ত মোস্তাফিজুর এস আই মামুনকে দিয়ে এজাহার তৈরী করে তাতে কিশোরীকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। আশাশুনি প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুখ সহ দু’জন সাংবাদিক ডিউটি অফিসার এসআই জাহাঙ্গীরের অনুমতি নিয়ে থানা হাজতে থাকা সাংবাদিক মাসুদুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে ওসি তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমান তাতেও বাধা প্রদান করেন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা সংসদ সদস্য রুহুল হককে জানান। আজ আশাশুনি প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে জরুরী সভার ডাক দেয়া হয়েছে। অপরদিকে খবর পাওয়ার পর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহম্মেদও বিষয়টি নিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।