
সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনি: আশাশুনির বিভিন্ন এলাকায় সাদা ফুলে ভরে গেছে সজিনা গাছ। আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সজিনা গাছের ডালের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত ফুল আর ফুল। এ সময় সজিনা গাছের পাতা ঝরে পড়তে শুরু করছে। তাই পাতাশূন্য ডালে থোকা থোকা সাদা ফুলের শোভা দেখে সকলে মোহিত হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন বসত বাড়ির উঠান, রাস্তার ধারে, আনাচে কানাচে ও পতিত জমির আইলে সজিনা গাছ আছে। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে কমপক্ষে ১/২টি সজিনা গাছ রয়েছে। যত্ন ছাড়াই এসব গাছ বেড়ে উঠেছে। গাছে ফলনও ভালো হয়। প্রতি বছর সজিনার শাখা বা ডাল রোপণ করা হয়। তবে রোপণকৃত ডালের প্রায় ৩০ শতাংশ মারা যায়। এ উপজেলায় সজিনার ২টি জাত রয়েছে একটি হালো সিজিনাল এবং আরেকটি বারোমাসি সজিনা। সজিনার ফুল জানুয়ারির শেষ থেকে আসা শুরু করে এবং বারো মাসি সজিনার গাছে বছরে কয়েক বার ফুল আসে। তবে সব ফুল থেকে ফল হয় না। একটি বড় গাছে ৪ শত থেকে ৫ শত ফল ধরে। দেশে সাধারণ ডাল কেটে ডাল রোপণ করে সজিনা গাছ লাগানো হয়।কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সজিনার মৌসুম শেষে এ বছরও ডাল রোপণ করা হবে। এ উপজেলার সব ধরনের মাটিতে সজিনা আবাদ ভালো হচ্ছে। সজিনা অতি পুষ্টি ও ভেজষ গুনে ভরা সবজি হিসেবে খুব দামি এবং এটিকে সুপার ফুড বলা হয়ে থাকে। সজিনা ও তার পাতা খাওয়া বাদেও গাছের শেকড় ও ছাল ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যাপক কাজে লাগে। সজিনার ব্যাপক চাহিদা ও উচ্চ মূল্যে বিক্রি হওয়ায় উপজেলার কৃষকরা এখন পতিত জমিতে পরিকল্পিতভাবে সজিনা গাছ লাগিয়ে লাভবান হচ্ছে। উচ্চ মূল্য পাওয়ায় অনেকে বানিজ্যিকভাবে সজিনার চাষ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।উপজেলা কর্মকর্তা কৃষিবিদ সূত্রে জানান, ঠান্ডা-গরম, খরা সহিষ্ণু এ গাছ বাংলাদেশের সর্বত্রই জন্ম নেয়। এ বছর সজিনা গাছে ব্যাপক ফুল ধরেছে। সজিনা গাছের পাতা, ফুল, বাকল, শিকড় ইত্যাদি শরীরের জন্য উপকারী। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে সজিনা ক্ষেত গড়ে তোলার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ বছর প্রাকৃতিক বড় ধরণের দুর্যোগ না হলে সজিনার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা যায়। চাষী দেবব্রত বসাক জানান, জলবায়ু সহনশীলতা এটি শুষ্ক এবং কম উর্বর মৃত্তিকাতেও ভালোভাবে জন্মাতে পারে।সজিনার স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে এর পুষ্টিগুণের জন্য চাহিদা রয়েছে।সজিনা চাষের মাধ্যমে আশাশুনির কৃষকরা তাদের আয় বৃদ্ধি করতে পারবেন এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবেন। এছাড়াও, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করা হলে সজিনা চাষ আরও সম্প্রসারিত হতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যাক্ত করেন।