জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) ঃ আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অব্যাহতভাবে লবণ পানির অনুপ্রবেশ ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মমিছিল ও স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে।
লবণ পানির প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে আশাশুনি উপজেলার কৃষিজমি, বসতবাড়ি, মিঠাপানির উৎস এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন। ফলে বাড়ছে ভাঙন, জলাবদ্ধতা ও পরিবেশগত ঝুঁকি।
এই দুই সংকটের দ্রুত ও কার্যকর সমাধানের দাবিতে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১০.৩০ টায় উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের উদ্যোগে সচেতন নাগরিক, স্থানীয় সাংবাদিক, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, নারী-পুরুষ, যুবসমাজ ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।মানববন্ধন চলাকালে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান। বক্তব্য রাখেন, সুবিদার (অবঃ) হাবিবুর রহমান, আনুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউনুছ আলী, শিক্ষক কিংকর কুমার মল্লিক, বিমল কুমার মন্ডল ও সুমিত্রা রানী। বক্তারা বলেন, আশাশুনির উপকূলীয় এলাকা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বহুদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাঁধের দুর্বলতা, ড্রেজিংয়ের অভাব, অপরিকল্পিত মাছের ঘের এবং অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে লবণ পানির অনুপ্রবেশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে হাজারো বিঘা কৃষিজমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। মিঠাপানির উৎস নষ্ট হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়রা বিশুদ্ধ পানি সংকটে দিনযাপন করছেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, একের পর এক জমিতে লবণ পানি ঢুকে ধান, সবজি, গাছপালা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে বহু পরিবার ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বক্তারা অবিলম্বে লবণ পানি রোধে কার্যকর বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ, নদী-খাল পুনঃখনন এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসনসহ দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিশ্চিত করার দাবি জানান।