সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনি থেকে: আশাশুনি উপজেলার অসহায় গরীব মহিলা নিলিমা মন্ডলের ভিজিডি কার্ডের চাউল তার অজ্ঞাতে দীর্ঘ ১৪ মাস গোপনে উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে প্রতিকার প্রার্থনা করে জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও ওসি আশাশুনি বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া গ্রামের কিশোরী মন্ডলের স্ত্রী নিলিমা মন্ডল একজন অসহায় গরীব পরিবারের স্ত্রী। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটনের দায়িত্বকালীন সময়ে তার নামে ভিজিডির কার্ড করা হয়। তার নামে যথারীতি চাউল আসে। কিন্তু চেয়ারম্যানের সাথে সুসম্পর্ক থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে একই গ্রামের নিতাই দেবনাথের ছেলে সুজন দেবনাথ কার্ডধারীর অজ্ঞাতে প্রতারনা করে তার প্রতিমাসের চাউল উঠিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করতে থাকে। এভাবে ১৪ মাস তার চাউল উঠিয়ে নেয়া হয়। এসময় নির্বাচনে নতুন চেয়ারম্যান হিসাবে রুহুল কুদ্দুছ নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন মেম্বার মোক্তার আলী সহযোগিতায় নিলিমা বিষয়টি জানতে পেরে চেয়ারম্যানের কাছে চাউল আত্মসাতের বিষয়টি উত্থাপন করেন। কিন্তু পূর্বের ন্যায় যথারীতি সুজন দেবনাথ গত ২৯ মার্চ বেলা ১২ টার সময় ইউনিয়ন পরিষদে কার্ডের চাউল উঠাতে গেলে মেম্বার মোক্তার আলী সানা চাউল বন্দ করে দেন এবং কার্ড নিয়ে নেন। ধুরন্ধর সুজন তখন মেম্বারকে গালিগালাজ ও হুমকী প্রদান করে চলে যায়। চাউল বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদে জমা রয়েছে।
অসহায় নিলিমা মন্ডলের অশ্রæঝরা আকুতি দীর্ঘ ১৪ মাসে তার সরকার প্রদত্ত¡ সহায়তা আত্মসাৎকারী হাতিয়ে নিয়ে অসহায় পরিবারটিকে সরকারের আনুকুল্য হতে বঞ্চিত করেছে। তাদেরকে দারিদ্রতার করাল যাতনায় নিষ্পেষিত করেছে। তাদের প্রাপ্য দীর্ঘ ১৪ মাসের সমুদয় চাউল উদ্ধার পূর্বক তাকে ফেরৎ দেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং অপরাধের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহরে জন্য তিনি কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অপরদিকে বিষয়টি জানতে শুক্রবার (১ এপ্রিল) এলাকায় গমন করলে, বেরিয়ে আসে সুজনের আরো বহু কেলেঙ্কারীর তথ্য। এলাকার অসংখ্য মানুষ জানান, সুজন নিজেকে অনেক শক্তিশালী হিসাবে এলাকার জাহির করে এসেছে। সে সাবেক চেয়ারম্যানকে পুজি করে দাপটের সাথে চলে এসেছে। এমনকি সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক এমপি’র নাম ভাঙ্গিয়ে মানুষকে কতকিছু পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ আদায় করে ধোকা দিয়ে এসেছে। তার কর্মকান্ডে বাধার সৃষ্টি করায় নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য মোক্তার আলীর বিরুদ্ধে টিসিবি’র কার্ড দেওয়ার কথা বলে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ খাড়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে এলাকার অসংখ্য মানুষ এবং টিসিবি’র সহায়তা প্রাপ্ত উকারভোগিরা অভিযোগ করেছেন। টিসিবির কার্ডধারী আনুলিয়া গ্রামের মৃত শামছুর রহমান ঢালীর কন্যা পাখি, আব্দুল্লাহ ঢালীর স্ত্রী আয়শা, মইরদ্দিন ঢালীর স্ত্রী শেফালী, মান্নান সানার স্ত্রী নারগিস, মৃত আঃ করিমের ছেলে ছোট্টু, আবুল কাশেম কারিকরের স্ত্রী হাসিনা, মৃত আমজেদ ঢালীর স্ত্রী হাসিনা, মৃত ইউনুছ কারিকরের ছেলে রফিকুল জানান, তাদের সহ এলাকার যত পরিবারের টিসিবির কার্ড হয়েছে তাদের কারো অতিরিক্ত একটি টাকাও লাগেনি। কারো কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে এমন কথাও তারা শোনেনি বা জানেনা। এব্যাপারে তারা অভিযোগকারীদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।