
সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনি: আশাশুনি উপজেলাগুলোর হাট-বাজার জুড়ে কতিপয় সার ও বীজ ব্যবসায়ীরা উচ্চ মূল্যে আমদানীকৃত ভেজাল সার-বীজ ও কীটনাশকের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলাগুলোর স্থানীয় কৃষি বিভাগ, বীজ দপ্তর ও বিএডিসিসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরের বাজার মনিটরিং না করায় ওইসব অসাধু কৃষি উপকরণ ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে প্রতারনার মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।স্থানীয় কৃষকদের একাধিক সূত্র জানায়, আশাশুনির হাট-বাজারগুলোর বীজ ও কীট নাশক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নানান কৃষিপণ্য কিনে প্রতিনিয়ত নানাও ভাবে প্রতারিত হচ্ছেন তারা। ভেজাল বীজ ও কীটনাশক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী উঠেছে সর্বত্র। ওইসব অসাধু কৃষিপন্য ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পরে আগামীদিনে কৃষিখাত অলাভজনক পেশায় পরিনত কিংবা এলাকার কৃষকরা নানান ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদন বিমুখ হয়ে উঠতে পারে বলে ধারনা করছেন কেউ কেউ। সংশ্লিষ্ট বাজার পরিচালনা কমিটি এবং স্থানীয় কৃষি দপ্তরের মনিটরিং কমিটি এ ব্যাপারে তাদের দায়িত্ব ভূমিকা নিয়ে এলাকার কৃষকদের মাঝে এখন প্রশ্নবিদ্দ। হাট-বাজারগুলোতে দেশী-বিদেশী বীজ-কীটনাশক প্রস্তুতকারক এবং ঠিকানা বিহীন নানান কৃষিপন্য যত্রতত্র বিক্রি হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষকরা ফসল উৎপাদনে দূর্ভোগসহ নানাহ ভাবে প্রতারিত হচ্ছেন।সূত্রগুলো আরও জানায়, আসন্ন ইরি-বোরো মৌসুম ঘিরে অসাধূ কৃষিপণ্য ব্যবসায়ীরা আগে ভাগে নিত্য নতুন ব্রান্ডের বীজ-কীটনাশক মওজুদের পাশাপাশি ভেজাল বীজ ও কীটনাশক সরবরাহের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে। এ অঞ্চলে সারের তেমন সংকট না থাকলেও সরকারী -বেসরকারী সার ডিলারগণ স্থানীয় ভাবে বিক্রির পাশাপাশি চোরা পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে সার পাচারের অভিযোগ উঠেছে। আসন্ন ইরি-বোরো মৌসুম ঘিরে এ অঞ্চলে ব্যাপক সারের চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের কাছে দেশীয় উৎপাদিত সারের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে সারসহ কৃষিপন্য পাইকারী-খুচরা বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি ভাবে কিংবা অসাধু কৃষিপন্য ব্যবসায়ীরা ওইসব পন্যের বাজার মূল্য অনেকটা গোপনীয়তা রক্ষা করে যাচ্ছে।ফলে অনেক ক্ষেত্রে না জেনে না বুঝে স্থানীয় কৃষকরা নানাও ভাবে প্রতারনার শিকার হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছে পন্য অনুযায়ী যা দাম চাচ্ছে সে দামেই কিনতে বাধ্য হচ্ছে কৃষকদের কিন্তু ক্রেতাকে পন্য বিক্রির রশিদ দেয়া হচ্ছে না।এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘ভেজাল কীটনাশকের বিষয়ে আমাদের সজাগ দৃষ্টি আছে। আপনারাও আমাদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন। কোনভাবেই ভেজাল কীটনাশক বিক্রি করতে দেওয়া হবে না।’কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কৃষি অফিসের কীটনাশক লাইসেন্স ১৬টি শর্ত রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শর্ত হলো লাইসেন্সপ্রাপ্ত ডিলারেরা সরকারি অনুমোদিত কোম্পানির ছাড়া কীটনাশক বিক্রি করতে পারবে না। আর যদি কেউ শর্ত ভঙ্গ করে তবে তার লাইসেন্স বাতিল বলে গণ্য হবে। কিন্তু এমন শর্ত মানছে না ডিলারেরা। তারা কোম্পানির অনুমোদন ছাড়াই বেশি লাভের আশায় নকল ও ভেজাল কীটনাশক বিক্রিতে উৎসাহিত হচ্ছে। প্রতি বছর ব্যবসায়ীদের কৃষি অফিস থেকে লাইসেন্স দেয়া ও নবায়ন করা হলেও হলেও অবৈধ পন্থা অবলম্বন কারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয় না কোন ব্যবস্থা।প্রতি তিন মাস পর পর কীটনাশক টেষ্ট করার কথা বলা হলেও মন্ত্রনালয়ের এ আদেশ কউে সঠিক ভাবে পালন করছে না। সচেতন মহন মনে করেন যেহেতু বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর দেশ, তাই এদেশের কৃষিকে রক্ষা করতে হলে সকল ধরনের নকল কীটনাশক, অসাধু ব্যবসায়ী ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া অত্যান্ত জরুরি।