সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি: আশাশুনিতে মাছের ঘেরের আইলে পতিত জমিতে অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন চাষী মহররম সরদার। বুধহাটা গ্রামের মৃত ছোরমান সরদারের ছেলে মহররম তরমুজ চাষ করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনে সক্ষম হওয়ায় খুবই আনন্দ বোধ করছেন। তার সফলতায় এলাকার চাষীরা তরমুজ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উপজেলার বুধহাটা গ্রামের মহররম সরদার তার ৬ বিঘা জমিতে সাদা মাছের চাষ করে আসছেন। মাছ চাষের পাশাপাশি ধানের মৌসুমে ধান আবাদ করে থাকেন। পতিত জমি (মাছের ঘেরের আইলে) তরমুজ চাষ করলে বাড়তি আয় হবে, এমন পরামর্শ ও চাষে উদ্বুদ্ধ করেন, উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা। মহররম সরদার তরমুজ চাষে আগ্রহী হলে তাকে ক্লাইমেট স্মার্ট প্রকল্পের মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় সহায়তা প্রদান করা হয়। তাকে অফসিজন বিগ ফ্যামিলি জাতের তরমুজ বীজ সরবরাহ করা হয়। কৃষি বিভাগের উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এসএম এনামুল ইসলাম ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের পরামর্শে মহররম তরমুজ চাষ শুরু করেন। এরপর থেকে তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে থাকেন কর্মকর্তাবৃন্দ। চাষী মহররম মাছ ও ধান চাষে যেমন মনোনিবেশ করে থাকেন, তেমনি তরমুজ চাষেও নিয়মিত পরিচর্চা করতে থাকেন। আস্তে আস্তে ক্ষেতে গাছের ব্যপ্তি ঘটতে থাকে। সবুজে ভরে ওঠে ঘেরের আইল জুড়ে। মাচা বা নেট জাল দিয়ে গাছের সুন্দর অবস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। চাষী মহররম সরদার জানান, দিনে দিনে তরমুজ গাছের চেহারা জলজল করতে থাকে। আস্তে আস্তে ফুল আসে। এরপর তরমুজ ধরতে লাগলো। মনের মধ্যে অনেক চিন্তা এবং আনন্দ দোল খাচ্ছিল। তরমুজ ধরনের পর দিনে দিনে বাড়তে বাড়তে অনেক বড় হয়ে ওঠে। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ মত ৭১ দিনের মাথায় ১ম বার তরমুজ উঠালাম। প্রত্যেকটা তরমুজের ওজন ৭ কেজি থেকে সাড়ে ৯ কেজি করে হয়েছে। ১ম দিনে ২৬০ কেজি তরমুজ বিক্রয় করি। প্রতি মন তরমুজের মূল্য পেয়েছি ১ হাজার ৮ শত টাকা করে। প্রথম দিনে ১১ হাজার ৭০০ টাকার তরমুজ বিক্রয় হয়েছে। চাষী মহররম আরও জানান, তার তরমুজ চাষে সর্বসাকুল্যে খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। প্রথম দিনেই খরচের টাকা উঠে এসেছে। এখনো তরমুজ উঠানো হচ্ছে। আগামী ৩ মাসে কমপক্ষে ৩ বার অনেকগুলো করে তরমুজ উঠানো সম্ভব হবে।