
জাতীয় ডেস্ক:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রীদের আবাসিক হলগুলোতে মানসিক বিকারগ্রস্থ এক চোরের উৎপাত দিন দিন বেড়েই চলেছে। শুধুমাত্র চুরির চেষ্টা করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না এই চোর। ছাত্রীদের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অকথ্য ভাষায় অশ্লীল গালাগালিও করছে এই চোর।
শনিবার দিবাগত রাত ৩টায় সুফিয়া কামাল হলে, রবিবার ভোর ৪টায় বেগম খালেদা জিয়া হলে এবং সাড়ে ৪ টার দিকে শেখ হাসিনা হলে এই ঘটনা ঘটে।
প্রসঙ্গত, কিছু দিন পর পরই ছাত্রী হলগুলোতে চুরি এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এদিকে মাত্র ৫ দিনের ব্যবধানে ওই মানসিক বিকারগ্রস্থ চোরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আরো একবার শঙ্কা প্রকাশ করেছে আবাসিক হলের ছাত্রীরা।
বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রীরা জানান, ভোর ৪টা নাগাদ ১১৭ নম্বর রুমের জানালায় দাঁড়িয়ে একজন লোক অনেকক্ষণ যাবৎ গালিগালাজ করেছে, আমাদের হেনস্থা করেছে। জানালা দিয়ে মাথা আর হাত ঢুকিয়েছে। চিৎকার করা শর্তেও সেখানেই দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন তিনি। চোর নিজেই বলছে হল সুপার কি করবে, হল সুপারকে ডাকেন। এতো চিল্লাচিল্লি শুনেও কিভাবে এসব বলে। তাকে একটুও বিচলিত মনে হয়নি।
ভোর সাড়ে চারটা নাগাদ শেখ হাসিনা হলেও এরকম ঘটনা ঘটে, প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রীরা জানান, রাত আনুমানিক সাড়ে চারটা। ১১৮ নং রুমের সকলেই ঘুমাচ্ছিলো। জানালায় কারো নক করার আওয়াজে সবার ঘুম ভাঙে। একজন লোক এক নাগাড়ে অত্যন্ত বিশ্রী ভাষায় কথা বলেই যাচ্ছে। সবাই চিৎকার করে হল সুপার ও খালাদের ডাকতে যায়। এতো চিৎকারের পরও লোকটির কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিলো না। সে তখনও ওখানে দাঁড়িয়ে অকথ্য ভাষায় বাজে কথাগুলো বারবার বলে যাচ্ছিল। পরে গার্ডদের জানানো হলেও তারা আর কাউকে খুঁজে পায়নি।
এ বিষয়ে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্রী কামরুন নাহার বলেন, ভোর ৪টায় রুমের আপুর ‘চোর-চোর’ চিৎকার শুনে জেগে উঠি। তখন আমার পাশের আপুকে ডাকি। ভয় পেয়ে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। চোর হাত এবং মাথা জানালা দিয়ে ঢুকানোর চেষ্টা করেছে। রুমের জানালার কাছে দাঁড়িয়ে চোর অকথ্য ভাষায় কথা বলতে থাকে অনেকক্ষণ। তবে কিছু নিতে পারেনি।
তিনি আরো বলেন, এই ভোর বেলা আমাদের গালিগালাজ করে গেল, হেনস্থা করল, হলের গার্ডরা কি তখন ঘুমিয়ে ছিল? নাকি তারাই এর সঙ্গে জড়িত? এই হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা কোথায়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট তিনটি হলের প্রাধ্যক্ষদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, ঘটনাটি শোনা মাত্রই হল সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছেন তারা। তাৎক্ষণিক হলের গার্ডরা সেখানে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে কাউকে তারা দেখতে পায়নি। তবে এমন ঘটনা যেহেতু ঘটেছে আমরা হলের নিরাপত্তা আরো জোরদার করবো।