আহাদুর রহমান: সাতক্ষীরায় হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত। করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্ট বা ইন্ডিয়ান যে রূপ সেটি অত্যন্ত শক্তিশালী ভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছে। সাতক্ষীরার করোনা পরিস্থিতি ভংকর রূপ নিয়েছে। করোনা সাতক্ষীরায় আগেও ছিল এবং আছে। কিন্তু এরকম আক্রন্ত বা মৃত্যু কোনটিই আপনারা দেখেননি। শনিবার (১৯ বেলা ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত করোনা সচেতনতামূলক প্রচারণা ও উদ্বুদ্ধকরণ শোভাযাত্রায় একথা বলেন সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রফেসর ডা. আ ফ ম রুহুল হক।
বেলা ১১টার দিকে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও শহরের খুলনার মোড় থেকে শুরু হয় এই শোভাযাত্রা। এতে আরও অংশ নেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ নজরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল, পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, আওয়ামী লীগ নেতা হারুনার রশিদ, ডা. সুব্রত কুমার ঘোষ, লায়লা পারভীন সেজুতি প্রমুখ।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ভয়ংকর রূপ নিয়ে ধরা পড়েছে। শতকরা ৯০ থেকে ৯৫ জন মানুষ অসচেতনতার কারণে একেকজনের মাধ্যমে আক্রান্ত হচ্ছেন। সবই প্রতিরোধ যোগ্য যদি আমরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলি। সর্ব প্রথম ও সর্বোত্তম পন্থা মাক্স পড়া। যেটি পড়লে ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস রোধ করা সম্ভব। এটি ১ নম্বর প্রতিরোধ ব্যবস্থা যা ভ্যাকসিনের চাইতেও শক্তিশালী।'[
আ ফ ম রুহল হক বলেন, ‘সাতক্ষীরায়ও করোনার ক্ষতিকর প্রভাবে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বহু মানুষ। বর্তমানের ডেল্টা ভ্যরিয়েন্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রথম ঢেউয়ে আমরা শিশুদের কম আক্রান্ত হতে দেখেছি। এবার শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। গতবার শুধু বয়জেষ্ট্যরা আক্রান্ত হয়েছে। এবং আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। এবার তারও নেই।’
কোভিড-১৯কে রুখতে সর্বস্তরের জনগনের সহায়তা চেয়ে আ ফ ম রুহল হক বলেন,‘আমরা দলীয়, সরকারি ও দলমত নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে প্রচেষ্টা চালাতে চাচ্ছি যে, ঘরে থাকতে হবে, হাত ধুতে হবে, মাক্স পড়তে হবে এবং যদি সন্দেহ হয় তাহলে ডাক্তারের কাছে আসতে হবে। আপনাদের সহযোগিতায় যদি না পাই তাহলে আমরা রোগটাকে প্রতিরোধ করতে পারবনা। একজন থেকে আরেকজনের কাছে ছড়িয়ে যাওয়া রোধে যদি আপনারা সহায়তা না করেন তাহলে আমরা এটাকে আটকাতে পারবনা। বর্তমানে যতগুলো দেশ করোনাকে নিয়ন্ত্রন করতে পেরেছে তারা জনগনের সহায়তা নিয়েই এটাকে আটকাতে পেরেছে। সুতরাং এটি পুলিশ, মিলিটারি বা গুলি বোমা ছুড়ে আটকানো যাবেনা। আটকাতে হবে আপনার সহযোগিতা নিয়ে। তাই আমরা আপনার আন্তরিক সহযোগিতা চাই।’
অপ্রয়োজনে বাসা থেকে বের হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘দয়া করে খুব দরকার ছাড়া বের হবেন না। যদি বের হতেই হয় তাহলে অবশ্যই মাক্স পড়ুন। বাইরে থেকে ঘরে আসার সময় পরিধেয় কাপড় পাল্টিয়ে ভালভাবে হাত ধুয়ে পরিবারের সাথে মিশুন। প্রয়োজনে দুটি মাক্স পড়ুন। আপনার পরিবারকে বাঁচান’
কোভিড-১৯ বা নোভেল করোনা ভাইরাসকে প্রতিহত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘সকলের সহযোগিতা নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। করোনা যে পর্যন্ত ছড়িয়েছে সে পর্যন্ত রুখতে চাই। দয়া করে আমাদের সহায়তা করুন। জননেত্রী শেখ হাসিনা করোনা রুখবার জন্য যে ডাক দিয়েছেন সেটি সফল করতে সহায়তা করন। দেশকে করোনা মুক্ত করুন।’
র্যালীতে জেলা প্রশাসনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা, জেলা পরিষদের সদস্য আল ফেরদাউস আলফাসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন অর রশিদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ সুব্রত ঘোষ, সদস্য এড. সেয়দ জিয়াউর রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রশিদ প্রমুখ।