সাতনদী অনলাইন ডেস্ক: উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে যাচ্ছে, যার নাম 'ইয়াস'। উপগ্রহ ছবি পর্যবেক্ষণ করে সবার আগে গত ১৫ মে এমন পূর্বাভাস দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ নাথ।
সেই থেকে প্রতিনিয়ত ঝড়টির গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে আসছেন এই দূর্যোগ গবেষক। শনিবার (২২ মে) ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন বিশ্বজিৎ নাথ। যেখানে নানান বৈজ্ঞানিক তথ্য ও চিত্র দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টিকে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
ড. বিশ্বজিৎ নাথ জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস প্রতিনিয়ত মোড় নিচ্ছে। এটি সবসময় ঘূর্ণিমান গতিতে এগুবে। যার কারণে সেটি বেশি অঞ্চলজুড়ে ধংসযজ্ঞ চালাতে পারবে। এখন পর্যন্ত ইয়াস-এর যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে বুঝা যাচ্ছে এর বিস্তৃতি হবে পুরো বঙ্গোপসাগরজুড়ে। তাই এর জোয়ার এবং অত্যধিক গতিও থাকবে ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের উপকূলে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ২৬ মে উপকূলে আঘাত হানার কথা রয়েছে। সেদিনই আবার সুপারমুন বা চন্দ্রগ্রহণ হবে। সুপারমুনের সময় এমনিতেই জোয়ারের উচ্চতা বেশি হয়। এর সংগে মিলিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় ৪-৬ মিটারের বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
ড. বিশ্বজিৎ বলেন, উপকূলে আঘাত হানার আগে এই ঘূর্ণিঝড়ের ঘূর্ণীয়মান বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ১২০-১৬০ হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি অবশেষে ভারতের বালাসোর এরং দিঘার মধ্যবর্তী অঞ্চলের চান্দিপুর ও বাছাফাল উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঝড় এগিয়ে এলে উপকূলে হতে পারে ভারিবর্ষণ। সরাসরি আঘাত না হানলেও ঘূর্ণিঝড়টির বিস্তৃতি পুরো বঙ্গোপসাগরে থাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বাংলাদেশ উপকূলে। যা পৌঁছাতে পারে চট্রগ্রাম ও মিয়ানমার পর্যন্ত।
তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়টি মূল ভূখণ্ডে প্রবেশের পরও তাণ্ডব চালাবে। আঘাতের পরদিনও ভারতের বিভিন্ন স্থানে এর ক্ষয়ক্ষতি অব্যাহত থাকবে।
২৭ মে ইয়াস-এর প্রভাব বাংলাদেশের খুলনা বিভাগ, রাজশাহী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও দিনাজপুর পর্যন্ত তাণ্ডব অব্যহত রাখবে। পরবর্তীতে ভারতের গয়া ও রাঁচি হয়ে এলাহবাদের কাছাকাছি গিয়ে এর শক্তি ২৯ মে দুপুরে নিস্ক্রিয় হবে। এর প্রভাব নেপালের মধ্যভাগ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। ঝড়ের দু'দিন পরও বাড়তি জোয়ার হতে পারে এবং এর প্রভাব মিয়ানমার উপকূল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলেও জানান তিনি।