
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বুধবার সতর্ক করে বলেছেন, কয়েক মাসের তীব্র লড়াইয়ের পর পূর্ব ইউক্রেনের বিধ্বস্ত শহর বাখমুত আগামী দিনে রাশিয়ার হাতে চলে যেতে পারে।
ইইউ প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের ফাঁকে স্টকহোমে স্টলটেনবার্গ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যা দেখতে পাচ্ছি তা হলো রাশিয়া আরো সেনা ও আরো সৈন্যদল পাঠাচ্ছ। রাশিয়ার গুণমানের যে অভাব রয়েছে তা তারা পরিমাণ দিয়ে পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।’
ন্যাট প্রধান বলেন, ‘রাশিয়া বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, কিন্তু একই সঙ্গে আমরা এটা উড়িয়ে দিতে পারি না যে বাখমুত শেষ পর্যন্ত আগামী দিনে পড়ে যেতে পারে।’
ইউক্রেনকে সমর্থন করা পশ্চিমা সামরিক জোটের প্রধান জোর দিয়ে বলেছেন, ‘এটি খেয়াল করাও গুরুত্বপূর্ণ যে এর মাধ্যমে যুদ্ধের কোনো বাঁক প্রতিফলিত হয় না। এটি কেবল গুরুত্ব আরোপ করে যে আমাদের রাশিয়াকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। আমাদের অবশ্যই ইউক্রেনকে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে।’
এদিকে রাশিয়ার ওয়াগনার ভাড়াটে গোষ্ঠী বুধবার দাবি করেছে, তারা বাখমুতের পূর্ব অংশের শিল্প শহর, যেখানে রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে কয়েক মাস ধরে লড়াই চলছে সেটি তারা দখল করেছে। তার এই ঘোষণার আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করেছিলেন, বাখমুতের পতন হলে মস্কো তার দেশের গভীরে আক্রমণের জন্য ‘উন্মুক্ত রাস্তা’ পাবে।
বাখমুতের চারপাশে তীব্র লড়াইটি রাশিয়ার এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ এবং রক্তক্ষয়ী ছিল, যা ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশকে ধ্বংস করেছে এবং লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মন্ত্রীরা প্রতিরক্ষা উৎপাদন বাড়ানো এবং ইউক্রেনে দ্রুত গোলাবারুদ পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কারণ দেশটি প্রতিদিন হাজার হাজার হাউইৎজার শেল পোড়াচ্ছে।
স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘এটি এখন ক্ষয়ক্ষতির যুদ্ধ, রসদ সরবরাহের যুদ্ধ। গোলাবারুদ উৎপাদনের বর্তমান হারের তুলনায় ব্যবহারের বর্তমান হার উপযুক্ত নয়। তাই আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে।’
ন্যাটো মহাসচিব প্রতিরক্ষা সরবরাহ বাড়ানোর জন্য ন্যাটোর সঙ্গে ২১টি সদস্য রাষ্ট্রের ইইউর চাপকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘এটি এমন একটি বিষয়, যা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া দেখেছি। তবে আমাদের আরো কিছু করতে হবে। কারণ আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ পায়। আমাদের নিজেদের মজুদ পূরণ করতে হবে।’
সূত্র : এএফপি