
হাফিজুর রহমান:- আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচনে সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কুশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী এর নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগীরা।
অগঠনতান্ত্রিক ভাবে কোন চিঠি ছাড়া মোবাইল এর মাধ্যমে ডেকে নিয়ে গত ৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত ৮টার সময় মন গড়া নির্বাচনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান প্রার্থী তালিকা তৈরি করে। উক্ত তালিকার বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এডভোকেট মোজাহার হোসেন কান্টু, থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জি এম সিরাজুল ইসলাম এবং থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য শেখ নুর জামান জামু সভানেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকা এবং সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড ঢাকা বরাবর গত ৯ অক্টোবর এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগপত্রটি নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো
মাননীয় সভানেত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকা, এবং সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড ঢাকা। বিষয় ঃ ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিগত নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীকে প্রতিহত করার মানষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৫ নাম্বার কুশুলিয়া ইউনিয়ন (কালিগঞ্জ সাতক্ষীরা) শাখার সভাপতি কর্তৃক নিয়মবহির্ভূত ভাবে, স্বজনপ্রীতি ও প্রতারণার অভিযোগ।
জনাব যথাবিহিত সম্মান পূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমি অ্যাডভোকেট শেখ মোজাহার হোসেন কান্টু সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা ধীণ ৫ নং কুশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বিগত ২০১৯ সালের উপনির্বাচনে কেউ মনোনয়ন প্রার্থনা না করার কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার তৎকালীন সভাপতি (সাবেক) জনাব মনসুর আহমেদের নির্দেশে একক দলীয় প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করি এবং পরাজিত হই।
এক্ষণে ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উক্ত ৫ নং কুশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (কালিগঞ্জ সাতক্ষীরা) চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রার্থনা করিয়াছি বিধায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পাঁচ নাম্বার কুশুলিয়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি কাজী কাহা ফি ল আরা সজল নিজের স্বার্থে এবং নিজের আপন ভাগ্নে আবুল কাশেম মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এর স্বার্থে নিয়মবহির্ভূতভাবে স্বজনপ্রীতি কোরিয়া আমাকে প্রতিহত করার জন্য প্রতারণা করিয়াছে উক্ত অভিযোগ সমূহের বিষয় নিম্নে উল্লেখ করিয়া প্রতিকার প্রার্থনা করিতেছি। ১। ২০০২ সালের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার ৩ (তিন) বার ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশন হলেও অত্র উপজেলার ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড সমূহের কোন কমিটি গঠন হয় নাই। ২। ২০০৩ সালে এবং ২০১২ সালে অত্র উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন মরহুম শেখ অহেদুজ্জামান, যিনি বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী কাউ ফিলওরা সজল এর আপন ভগ্নিপতি ছিলেন। উক্ত ওয়াহেদুজ্জামান নিজ স্বার্থে নিজের সালোক কাজী কাউফিল ওরা সজলকে ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি এবং নিজের ভাইরা মরহুম কামরুল ইসলাম সর্দার কে ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক করিয়াছিলেন। ৩। বিগত ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উক্ত ওয়াহিদুজ্জামান নিজে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকার সুবাদে, নিজের অল্প বয়সী পুত্র মেহেদি হাসান সুমন কে অত্র ৫ নং কুশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পদে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করাইয়া কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করেন। ৪। উক্ত ওয়াহেদুজ্জামান ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে মৃত্যুবরণ করিলে তাহার পুত্র ৫ নাম্বার কুশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেহেদী হাসান সুমন, ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রার্থনা কোরিয়া মনোনয়ন প্রাপ্ত না হওয়ায় ৫ নম্বর কুশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ ত্যাগ (পদত্যাগ) করিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা কোরিয়া পরাজিত হয় এবং যার কারণে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আতাউর রহমান পরাজিত হয়। ৫। পরবর্তী উক্ত ৫ নাম্বার কুশলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচনে উক্ত মেহেদী হাসান সুমন, তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা আবুল কাশেম মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (বর্তমান প্রার্থী) এবং তাহার আপন মামা কাজীকাউ ফিল আরা সজল কেউ শত অনুরোধেও প্রার্থী হয় নাই। যার কারণে প্রার্থী সংকট নিরসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মরহুম মনসুর আহমেদের নির্দেশে আমাকে ওই দুঃসময়ে কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে হয়। ৬। এক্ষণে ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা প্রস্তুতির জন্য ইউনিয়ন শাখার বর্ধিত সভায় আলোচনার মাধ্যমে কমপক্ষে ৩ তিন জনের একটি প্রার্থী প্যানেল প্রস্তুত করার নির্দেশনা থাকলেও, ইউনিয়ন শাখা কমিটির সভাপতি কাউফিল আরা সজল কোন নোটিশ দ্বারা আলোচ্য সূচী উল্লেখ পূর্বক কোন মিটিং আহবান করে নাই ৭। ইউনিয়ন শাখা কমিটির সভাপতি জনাব কাউ ফিল আরা সজল তাঁর পছন্দনীয় ব্যক্তিবর্গ কে মোবাইল ফোনে আমন্ত্রণ জানিয়ে গত ইংরেজি ৭/ ১০/২০২১ তারিখ বৃহস্পতিবার রাত্র আটটার সময় ৫ নাম্বার কুশলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় কিছু লোকজন সমাবেত করে। ৮। বিভিন্ন লোকমুখে সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে উক্ত সভা স্থলে উপস্থিত হয়ে জানতে পারি ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি জনাব কাজী কাউ ফিল আরা সজল ঘোষণা করেন যে পাঁচ নং কুশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে মোট সাতজন প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেছেন আবেদনকারী গণ হইলেন ১। কাজী কাউ ফিল আরা সজল, ২। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মেহেদী হাসান সুমনের কনিষ্ঠ ভ্রাতা এবং কাজী কাউফিল আরা সজল এর আপন ভাগ্নে আবুল কাশেম মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। ৩। বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগ কালিগঞ্জ শাখা সাধারণ সম্পাদক তানভির আহমদ উজ্জল। ৪। কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের (দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন তার এপিএস ছাত্র শিবির ক্যাডার) সাজেদুল ইসলাম সাজু। ৫। মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম ৬। বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবকলীগ কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি নুরুজ্জামান জামু।
৭। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার নির্বাহী সদস্য এবং সাতক্ষীরা জেলা শাখার নির্বাহী সদস্য এডভোকেট শেখ মোজাহার হোসেন কান্টু। ৯। ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি কাজী কাউ ফিল আরা সজল, আরো ঘোষণা করেন যে এখন এখানে ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। ১০। আমি প্রশ্ন উত্থাপন করেছে ভোটের বিধান নাই কেন ভোটাভুটির মাধ্যমে দলকে বিভক্ত করা হবে ? এছাড়া কিসের ভিত্তিতে ভোট হবে ? ভোটার তালিকা কোথায় ? কাদের দ্বারা ভোট হবে ? ভোট যদি হবে তাহলে কেন এজেন্ডা দিয়ে নোটিশ করা হয় নাই। একটি সাধারন নোটিশ ও কেন করা হয়নি ? আমাদেরকে কেন ভোটার তালিকা সরবরাহ করা হয় নাই ? কোন নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সাথে আমাদের সামান্যতম শুভেচ্ছা বিনিময়ের সুযোগ কেন দেওয়া হয় নাই ? ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি এ সকল প্রশ্নের কোন প্রকার উত্তর না দিয়ে সে নির্বাচনের জন্য ব্যালট পেপার তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করে। ১১। ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি কাজী কাউফিল ওরা সজলের ভগ্নিপতি ইউনিয়ন কমিটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সরদার, ইতিপূর্বে মৃত্যুবরণ করি আছে যুগ্ম সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন সাত বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছে, এখন ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কে ? কত তারিখে কোন সভার মাধ্যমে কাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে ? কোন কমিটির কোন পদমর্যাদার নেতার স্বাক্ষরের মাধ্যমে উক্ত সিদ্ধান্ত অনুমোদন করানো হয়েছে ? এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী কাউ ফিল আরা সজল কোন উত্তর প্রদান করেন নাই। ১২। উপরে উল্লেখিত সমস্যা ত্রæটি উল্লেখ করে আমি নির্বাচন-প্রক্রিয়া বিধিবহির্ভূত উল্লেখ করে উক্ত সভা স্থল পরিতাগ করি বিষয়টি উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে মোবাইল ফোনে অবহিত করি এবং নিজ বাড়িতে ফিরে যায়। ১৩। পরদিন জানতে পারি আমার সহিত প্রতারণা করে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে, নিয়মবহির্ভূতভাবে ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি কাজী কাউ ফিল আরা সজল তার মন গড়া ব্যক্তিদের দ্বারা একটি প্রহসনের নির্বাচন করেছে। উক্ত নির্বাচনে শিবির ক্যাডার সাজেদুল ইসলাম সাজু, কাজীকাউ ফিল আরা সজলকে নাটকীয় ভাবে সমর্থন করে এবং তানভির আহাম্মেদ উজ্জ্বল একইভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে কাজী কাউ ফিল ওরা সজলের ভাগ্নে আবুল কাশেম মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ কে সমর্থন করে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দিতা থেকে সরে দাঁড়ায়। ১৪ উক্ত প্রতারণা স্বজনপ্রীতি এবং নিয়মবহির্ভূতভাবে সম্পাদিত প্রহসনের নির্বাচনে কাজী কাউফিল্ সজল ১৫ টি ভোট এবং তার আপন ভাগ্নে আবুল কাশেম আব্দুল্লাহ (দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর ছোট ভাই) ৩৪ ভোট পেয়েছে। ১৫। নির্বাচনের প্রক্রিয়া আপত্তিকারী সিরাজুল ইসলাম ০ ভোট নুরুজ্জামান ১ এবং আমি অ্যাডভোকেট মোজাহার হোসেন কান্টু ১ ভোট পেয়েছি মর্মে পত্রিকায় প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে বিষয়টি দলের গঠনতন্ত্র এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশ পরিপন্থী কার্যক্রম বিবেচনা করিয়া উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার মহান সমীপে আবেদন করিতেছি।
অতএব মহোদয় সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে বর্ধিত করিতে মর্জি হয়।
বিনীত নিবেদক,অ্যাডভোকেট মোজাহার হোসেন কান্টু, নির্বাহী সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখা সাতক্ষীরা। ৫ নম্বর কুশলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (কালিগঞ্জ সাতক্ষীরা) বিগত নির্বাচনে ২০১৯ সালের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ২। সিরাজুল ইসলাম ৩। নুরুজ্জামান জামু। (সবই স্বাক্ষরি)।