সাতনদী অনলাইন ডেস্ক:স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, যেসব এলাকায় সংক্রমণ বেশি ওইসব এলাকায় আংশিক লকডাউন বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আগামী দু'একদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আসতে পারে।
আজ সোমবার দুপুরে অনলাইনে যুক্ত হয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দক্ষিণ ব্লকের সম্প্রসারিত ভবনের উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের করোনা সংক্রমণ যাতে বৃদ্ধি না পায় তাই আমরা সরকারকে কিছু পরামর্শ দিয়েছি।
এরমধ্যে বিনোদন কেন্দ্রগুলো আপাতত বন্ধ করতে বলা হয়েছে। বিয়ে-শাদী, সামাজিক অনুষ্ঠান, যেসব অনুষ্ঠানে লোক সমাগম হয় সেগুলো বন্ধ করার জন্য সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।
রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়াও যাতে কম হয় সেটাও বলেছি। যানবাহনে চলাচলেও যাত্রী সংখ্যা অর্ধেক কিংবা তার কমে নামিয়ে আনার জন্য আমরা পরামর্শ দিয়েছি।
অফিস আদালতে কাজকর্ম কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছি। মাস্ক ছাড়া বাইরে ঘোরাঘুরি করলে জরিমানা করার পরামর্শ দিয়েছি। আমাদের পরামর্শগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। এটি তিনি অনুমোদন দিলে বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। মার্চ মাসের শুরুর দিকে সংক্রমণের দুই শতাংশে নেমে এসেছিল।
সেটা এখন ১৮ শতাংশে পৌঁছেছে। এটা খুবই আশঙ্কাজনক। গত এক সপ্তাহে আক্তান্তের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এভাবেই বাড়লে একটা অংশ যদি হাসপাতালে আসে আমাদের পক্ষে সেবা দেওয়াটা দুরূহ হয়ে যাবে।
এরই মধ্যে সব সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ খালি নেই। বেসরকারি হাসপাতালে কিছু আইসিইউ খালি আছে। আমরা আইসিইউ বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ৪০ টি আইসিইউ বিভিন্ন হাসপাতালে যুক্ত হবে। এছাড়া দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি এইচডিইউ সেন্টার চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেভাবে রোগী বাড়ছে, আমরা যদি আরও আইসিইউ সেন্টার চালু করি, তারপরও সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না।
সংক্রমণের হার যদি একই হারে বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের শুধু আইসিইউ বাড়ালেই হবে না। আমাদের দক্ষ জনবলের অভাব আছে। আইসিইউ চালানোর জন্য দক্ষ টেকনিশিয়ান, চিকিৎসক তৈরি করাও একটি চ্যালেঞ্জের কাজ।
করোনা টিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের করোনার টিকা কর্মসূচি চলছে। আমাদের এ মাসের টিকার চালানটি আসার কথা ছিল। আমরা সেটি পাইনি। এটা পাওয়ার জন্যে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা জুনের আগে টিকা দিতে পারবে না। আমরা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।
এ সময় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান।
এদিকে বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জরুরি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা প্রজ্ঞাপনে জারি করা নির্দেশাবলী পালন করার আহবান জানিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রয়োজনে করোনার পরীক্ষার জন্য বন্ধ বুথ পুনরায় খুলে দেয়া হবে। টিকা প্রসঙ্গে বলেন,৪২ লাখ টিকা হাতে আছে। কিছু টিকা আগামী মাসে আসবে। দ্বিতীয় ডোজে সমস্যা হবে না। দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর সনদ পাবেন। অনুষ্ঠানে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এবং বেপরোয়া চলাফেরার কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। একক কোন দেশের নতুন স্ট্রেইন এর জন্য দায়ী নয়। বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলা যাবে করোনার কোন ধরন দায়ী। এজন্য সময় ও জনবল লাগবে।