নিজস্ব প্রতিবেদক: অহেতুক কথাবার্তা বলে নির্বাচনি সংস্কার ও নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত না করে যথাসময়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অন্তবর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা। তারা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠা ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার সংগ্রাম অগ্রসর করার সুযোগ সৃষ্টি হলেও তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তিভবনের সামনে এক সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন।
২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে সিপিবির মহাসমাবেশে বোমা হামলার ঘটনা স্মরণে এই সমাবেশ আয়োজিত হয়। শোকাবহ দিনটি উপলক্ষে মুক্তিভবনের সামনে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে সিপিবিসহ বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ। পল্টনের সেই হত্যাকা-ের ঘটনার ২৪ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও পূর্ণাঙ্গ বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সিপিবি নেতারা। তারা অবিলম্বে হত্যাকারীদের চিহ্নিত, গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।
কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘লাল পতাকার হাজার হাজার মানুষের উত্থান ঠেকাতে সাম্প্রদায়িক, অগণতান্ত্রিক, লুটেরা শাসকগোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে। আজও এর সঙ্গে জড়িতদের ও নেপথ্যের হোতাদের গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকার জনজীবনের সংকট দূর করতে পারছে না। আগের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বহাল রেখেই আরও ভ্যাট-ট্যাক্স চাপিয়ে দিয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে।’
রুহিন হোসেন প্রিন্স সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অহেতুক কথাবার্তা বলে নির্বাচনি সংস্কার ও নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।’
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি এই সরকারের অনেকেই ছবি নামাতে, বিশেষ ঘোষণা তৈরিতে যত ব্যস্ত- জনজীবনের সংকট সমাধানে তারা ততটা ব্যস্ত নয়। সব কাজ করার দায়িত্ব এই সরকারের নয়। বরং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।’
কমরেড মিহির ঘোষ বলেন, ‘জনজীবনের সংকট দূর করতে না পারলে সরকারের প্রতি জনগণের যে আস্থা ছিল তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে।’
আজ থেকে গণতন্ত্র অভিযাত্রা শুরু
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের হত্যাকা-ের বিচার, আহতদের চিকিৎসা, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, বর্ধিত ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার, জান-মালের নিরাপত্তা দেওয়া, চাঁদাবাজি-দখলদারিত্ব-দুর্নীতি-হামলা বন্ধ, জাতীয় সংসদের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার দাবিতে অজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দেশব্যাপী ‘গণতন্ত্র অভিযাত্রা’ শুরু করবে সিপিবি।
গণতন্ত্র অভিযাত্রার প্রথম দিন মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত পদযাত্রা ও গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হবে।
অহেতুক কথা বলে নির্বাচন-সংস্কার বাধাগ্রস্ত করা যাবে না: সিপিবি
পূর্ববর্তী পোস্ট