সাতনদী ডেস্ক: অস্থির তীব্র তাপদাহ্ শুরু হয়েছে। কয়েকদিন ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে তাপমাত্রার পারদ। প্রতিদিনই তাপমাত্রা বেড়েই। অসহনীয় অগ্নিদহনে প্রানহীন হচ্ছে চারপাশের প্রকৃতি। অস্থির গরমে নাজেহাল জীব-বৈচিত্র, মানুষ-জীবকূল। দিনে মাথার উপর তপ্ত সূর্য, আর রাতের বেলায় ঘরের ভেতর গরম বাতাসের ভ্যাপসা অনুভূতি। স্বস্তি নেই দিনে বা রাতে, নেই ঘরে বা বাইরে, কোথাও। তীব্র এই গরমের মধ্যে আবার শুরু হয়েছে ঘন ঘন বিদ্যুৎতের লুকোচুরি। দুপুর, সন্ধ্যা বা গভীর রাতে প্রচন্ড গরমের মধ্যে দফায় দফায় লোডশেডিংয়ে পড়ে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে শুরু করেছে খুলনার জনজীবন। একদিকে গরম, অন্যদিক লোডশেডিং, সীমাহীন দুই কষ্টের মধ্যে সময় কাটাচ্ছে সাতক্ষীরা ও খুলনার মানুষ। খুলনা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, সিলেট বিভাগসহ দেশের অনেক জায়গায় মৃদু হতে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহের কারনে এবং সূর্যের কিরণের তীব্রতার কারণে, সাথে সাথে বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্ষের কারণে গরমের তীব্রতা অনুভুত হচ্ছে। আগামী ৪/৫দিন পর বৃষ্টি হলে গরমের তীব্রতা কমে যাবে। রবিবার (০৪ জুন) খুলনয় প্রচন্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে এই অঞ্চলের মানুষের। বাইরে বের হলে আগুনের ফুলকি যেন সোজা চোখে মুখে আঘাত করছে। তীব্র গরম পেরিয়ে কর্মজীবিরা তাদের কর্মস্থল হতে বাড়ীতে ফিরে স্বস্তি খুজলেও , বিদ্যুৎতের লুকোচুরির কারণে গরমে সম্পূর্ন কুপোকাত। নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা আনাস জানান, কয়েকদিন আগে বৃষ্টি হলেও, আবারও ব্যপক গরম পড়া শুরু করেছে। এর মধ্যে আবার দিনরাত জুড়ে কয়েক দফায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। সকাল ৯টা বাজতেই সোজা অফিসে চলে যেতে হয়, আসি রাতে। রাতের বেলায় দু’ এক বার বিদ্যুৎ যাবেই। গরমে অস্থির হয়ে উঠি। প্রচন্ড এই গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ ছাড়া থাকা দায় হয়ে পড়েছে। অস্থির গরমে ফ্যান চালিয়েও ঘরে থাকা যায় না। এর মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকলে মনে হয় আজাব যেন শুরু হলো।
ইজিবাইক চালক জানান, বর্তমানে বাইরে সূর্যের অনেক তাপ। রোদে সারা শরীর পুড়ে যায়। ভোর থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত আর বিকালে ৫টার পর থেকে গরম কিছুটা কম থাকে। সকাল ১০টার পর থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রচ- তাপদাহ থাকে। মনে হয় যেন চামড়া পুড়ে যাবে। শরীর ঘেমে যায়, শরীর দূর্বল হয়ে আসে। গাড়ি চালাতে অনেক কষ্ট হয়। দুপুরে খাবার সময় বাড়ীতে গিয়ে দেখি কারেন্ট নেই। যায় আর আসে। কারেন্ট চলে গেলে বাচ্চা-কাচ্চা ঘেমে একাকার হয়ে যায়। নগরীর মধ্যডাঙ্গা এলাকা বাসিন্দা শেখ মোস্তাক আহমেদ জানান, বর্তমানে এতো গরম যেন বাতাসে যেন আগুন উড়ছে। গরমের সাথে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় কারনে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই গরমে বাইরে যেমন বের হওয়া যাচ্ছে না, তেমনই ঘরেও অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারনে। নগরীর মুজগুন্নী উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা গৃহিনী রুমানা আক্তার রানু জানান, বয়স হয়ে গিয়েছে। গরম সহ্য করতে পারিনা। বার বার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছ্ে বাইরে বাতাসও নেই, যে বাতাসে গিয়ে বসে থাকবো। গরমে জীবন বের হয়ে আসে। কোথাও স্বস্তি নেই।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনাসহ কয়েকটি বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু ও মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তাপমাত্রা আরও কিছু দিন অব্যাহত থাকবে। এরপর বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমে যাবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট