শেখ ইমরান হোসেন: অবশেষে ইলিশের স্বাদ পেলেন সেই অসহায় সুফিয়া বেগম। গত (১৮ সেপ্টেম্বর) "ইলিশ সে তো বড়লোকদের খাবার...! শেষ কবে ইলিশ খেয়েছে মনে করতে পারেনা সুফিয়া" এই শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয় । পরবর্তীতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি তাকে সহযোগিতা করেছেন। তার ধারাবাহিকতায় বুধবার (২১সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল ভোগ্যপন্য সুফিয়া বেগমের বাড়িতে পৌঁছায় দেওয়া হয়। এ সময়ে সুফিয়া বেগমকে ইলিশ, মুরগি, তেল, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, চাউলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল খাদ্যদ্রব্য উপহার দেওয়া হয়।
সুফিয়ার একাধীক প্রতিবেশীরা জানান, বৃদ্ধা সুফিয়া অনেক বছর পরে ইলিশ মাছ খাবে এটা জেনে তারা সকলে খুব আনন্দিত। মাংস সহ প্রয়োজনী সকল জিনিসপত্র তার অনেক উপকার হলো। যে ব্যক্তি এমন মহতী কাজ করেছে তার জন্য সকলে দোয়া করছেন।
অসহায় সুফিয়া বলেন, আমি ইলিশের স্বাদ পাবো, মাংসের স্বাদ পাবো এটা দেখে আনন্দে বুকটা ভরে গেছে। ইলিশের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছু পেয়েছি। এত খাবার আগে কখনো এক সাথে দেখিনি। অনেকদিন খেতে পারবো এগুলো। তিনি আরও জানান, যে ব্যক্তি খাবারগুলো দিয়েছে আল্লাহ তাকে সঠিক প্রতিদান দিবেন।
খলিলনগর ইউপি চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ জানান, সুফিয়ার বিষয়ে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, সুফিয়ার আইডি পৌঁছায় দিলে তার বয়স্ক ভাতার কার্ডেরর ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া তার সার্বিক অবস্থা বুঝে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গগত, বয়োবৃদ্ধা সুফিয়া বেগম (৬৫) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার গৌনালী বাজার সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী সরকারি ওয়াপদায় থাকেন। ছেলেরা দেখা শুনা করেনা তাই দীর্ঘ বছর যাবত একা বসবাস করেন। কখনো খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে জীবন কাটে সুফিয়ার।
ধানের মৌসুমে ধান তুলে নেওয়ার পরে জমিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধান কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। বাগানে জন্ম নেওয়া কচুশাক, কচুড়ি, থানকুনি সহ অন্যান্য শাকসবজি খেয়ে জীবন যাপন করেন। মাছ, মাংস তার কাছে সৌভাগ্যের ব্যাপার। কোরবানী ঈদ এলেই তার ভাগে আসে কয়েক টুকরো মাংস। তাছাড়া সারা বছর মাংস দু'চোখে দেখলেও সাধ্যের অভাবে খেতে পারেনা সুফিয়া বেগম। আবার সাধ থাকলেও সাধ্য হয়নি ইলিশ কিনে খাওয়ার। শেষ কত বছর আগে ইলিশ খেয়েছে সেটা মনে করতে পারেনা সুফিয়া বেগম।