রুবেল হোসেন: আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের অন্তর্গত গাজীপুর কুড়িগ্রাম সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে অত্র মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মিজানুর রহমান। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মাদ্রাসাটির উন্নয়নে নানান উদ্যোগ নেয়। সম্প্রতি এলাকার কিছু ষড়যন্ত্রকারী মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানকে অধ্যক্ষ পদ থেকে সরাতে পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে চক্রটি। একরে পর এক মিথ্যা মামলা, বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের, মানববন্ধনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে তারা। সোমবার (১৫ মে) সকাল ১১ টায় গাজীপুর কুড়িগ্রাম সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক মিলনায়তনে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান এমন অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, “কাকড়াবুনিয়া গ্রামের জামাল সরদারের পুত্র সিরাজুল ইসলাম, ১৫১ নং তালিকাভুক্ত রাজাকার আব্দুর রহমানের পুত্র খলিলুর রহমান গাজী, আব্দুল আজিজের পুত্র মাসুম বিল্লাহ গং আমার প্রতিবেশি। তাদের সাথে আমার পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত। আমি গাজীপুর শিশু সদন এতিমখানা থেকে ২৮ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছি, গাজিপুর কুড়িগ্রাম সিনিয়র আলিম মাদ্রাসায় নিয়োগের নামে অর্থ বাণিজ্য করেছি, মর্মে যেসব অভিযোগ আমার প্রতিপক্ষরা প্রচার করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে কুচক্রী মহলটি প্রভাবশালীদের সহযোগীতায় আমার বিরুদ্ধে হেন অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে আমি কোন অন্যায় ও দুর্নীতির সাথে যুক্ত না। আমার এতিমখানায় এতিমদের জন্য যা বরাদ্দ আসে তার বহুগুন অর্থ এতিমদের ভোরন পোষন ও প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কাজে ব্যয় হয়। আমরা সরকারি বরাদ্দ ছাড়াও ধার দেনা ও অনুদান নির্ভর হয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করি। আর মাদ্রাসায় নিয়োগের এখতিয়ার সম্পূর্ণ ম্যানেজিং কমিটির উপর। আমি যোগদানের পর থেকে এই মাদ্রাসায় যেগুলো নিয়োগ হয়েছে সবটাই যথাযথ প্রক্রিয়ায় হয়েছে। এখানে আমি কোন হস্তক্ষেপ করিনি বা কোন অবৈধ আর্থিক সুবিধা নেই নি। আমি আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই।” সংবাদ সম্মেলনে মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সিনিয়র লেকচারার হুমায়ুন কবীর, সহকারী শিক্ষক হাফেজ মোঃ জুবায়ের আলম, ইংরেজী বিভাগের লেকচারার তানজির আরাফাতসহ মাদ্রাসার শিক্ষকবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন। সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, “ করোনা পরবর্তী সময়ে ৩ মেয়াদে অত্র মাদ্রাসায় এডহক কমিটি ছিল। জনৈক শাহিন হোসেন সুরাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর ২০২২ সালে মাদ্রাসার কমিটি স্থগিত করে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। যে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয় একই বছরের ২৬ ডিসেম্বর। কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়ার ৪ দিন পর উপাধ্যক্ষ, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, অফিস সহকারী, আয়া, নিরাপত্তাকর্মী পদে নিয়োগের জন্য ইউএনও, ডিজি প্রতিনিধির উপস্থিতিতে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা চলাকালে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আদেশে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৮ মার্চ উপাধ্যাক্ষ, আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে লিখিত পরীক্ষার নিয়োগ সম্পন্ন হয়। অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক দীপঙ্কর বাছাড় দীপু জানান, “মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান একজন সজ্জন ব্যক্তিত্ব। তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা সবাই তার গ্রামের এমনকি তার প্রতিবেশী। ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে এভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার আমার জানামতে তিনি অর্থ আত্মসাৎ ও নিয়োগ বানিজ্যের সাথে যুক্ত নয়।