
কূল্যা ইউনিয়নে পৃথক দুটি স্থানে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা
হাবিবুর রহমান, আশাশুনি থেকে ফিরে: মাদককারবারী ও ডলারপার্টির শিকড় উপড়ে ফেলা হবে। ডলারপার্টির সাথে যুক্তরা হয় স্যারেন্ডার করবা নতুবা জেলে যাবা। এদের শেল্টারদাতারাও রেহাই পাবে না। বুধবার পড়ন্ত বিকালে শুরু হয়ে বেশ রাত অবধি চলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক পৃথক মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যথাক্রমে সার্কেল এ,এস,পি (দেবহাটা-আশাশুনি) শেখ মোঃ ইয়াছিন আলী এবং আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম কবির উপরোক্ত বক্তব্য দেন।
দুটি সভায়ই সাধারণ জনসাধারণের উপচেপড়া ভীড় ছিল। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন দৈনিক সাতনদীর প্রকাশক ও সম্পাদক হাবিবুর রহমান। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বাছেত আল হারুন চৌধুরী। দ্বিতীয় ভাগে অনুষ্ঠিত মহাজনপুরে বাবলুর মোড়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সদস্য ইব্রাহিম সরদার, প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল, পান্না, বিশ্বনাথ সরকার।
প্রধান অতিথি শেখ মোঃ ইয়াছিন আলী তার বক্তব্যে আরও বলেন, অপরাধীর কোন দল নেই। তারা সুযোগ সন্ধানী। তাদের বেড়ে উঠতে দেয়া হবে না। আপনারা যে কোন বিষয়ে স্থানীয় আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জের শরনাপন্ন হবেন। তিনি আপনাদের সেবা দেবেন। প্রয়োজনে আমাকেও স্মরণ করবেন। সাড়া দিব তাৎক্ষণিক ভাবে- কথা দিলাম। মহাজনপুর বাবলুর মোড়ে অনেক শিশুদের দেখে তিনি আবেগে আপ্লুত হন। তাদের পড়াশুনার খবর নেন এবং তাৎক্ষণিক ভাবে তাদের সবার জন্য চকলেট আনেন। তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তোমাদের জন্য চকলেট না এনে আমি ভুল করেছি। এমন ভুল আর হবেনা। এবার তোমাদের জন্য চিপস নিয়ে আসবো। এরপর চকলেট বিতরনের সময় এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
তিনি স্থানীয় জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাদের জন্য যে সব সাহায্য পাঠান তা কড়ায় গন্ডায় বুঝে নেবেন। যাতে মাঝ পথে কেউ মেরে দিতে না পারে। তবে অচিরেই আপনাদের আইডির ঠিকানায় নতুন ব্যাংক একাউন্ট হবে এবং সে ক্ষেত্রে অনিয়ম দুর্নীতি নির্মূল হয়ে যাবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম কবির জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের যার যার কাজ তিনি নিজেই আমার কাছে সরাসরি যাবেন। কোন দালাল ধরবেন না। আমি ঘুষ খাই না। থানার মামলা-জিডি করতে কোন টাকা লাগে না। তবে কেউ মিথ্যা আবদার নিয়ে গেলে তাকে জেলে যেতে হবে। সঠিক কাজ নিয়ে যাবেন সেবা পাবেন। তিনি অপরাধীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, হয় ভাল হয়ে যেতে হবে নতুবা জেলে ঘানি টানতে হবে। কোন ভাবেই পার পাওয়া যাবে না।
বিশেষ অতিথি সাতনদীর সম্পাদক হাবিবুর রহমান পৃথক দুটি সভায় যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরাই হতে পার সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার। তোমরা মাদক থেকে দূরে থেকে সমাজ বিরোধীদের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তোল। তোমরা জয়ী হবেই এতে কোন সন্দেহ নেই।
পুলিশ বিভাগের ত্যাগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনাকালে পুলিশ বিভাগের সদস্যরা সম্মুখ যোদ্ধা। কোন কোন ক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্তদের স্বজনরা ফেলে গেলেও পুলিশ বিভাগের সদস্যরা ছুটে গেছেন পাশে। করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনেও অনেক ক্ষেত্রে স্বজনরা পিছু হঠছে। কিন্তু পুলিশের বিশেষ টিম দাফনে এগিয়ে এসেছে। পুলিশ বিভাগের আন্তরিকতা থাকলে অপরাধ নির্মূল সম্ভব বলে তিনি মতামত দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোঃ বাছেত আল হারুন চৌধুরী বলেন, মঞ্চের আশপাশের চেয়ারে বসাদের অনেকে ডলারপার্টির কাছ থেকে ছিনতাইয়ের টাকা ভাগ খান। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি আমি সুবিধা নেই না। নিবও না ভবিষ্যতে। এসব অপরাধীদের নির্মূল করতে হবে। সমাজের সব শ্রেণী পেশার মানুষকে তিনি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। সভা চলাকালে মহাজনপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আলী সার্কেল এ,এস,পি ও অফিসার ইনচার্জের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ডলারপার্টির বিস্তার লাভের জন্য আমরা ছেলে-মেয়েদের ভাল ঘরে বিয়ে দিতে পারি না। এই গ্রামের মানুষকে অন্য এলাকার মানুষ বাঁকা চোখে দেখে। তিনি ডলারপার্টি নিমূলের দাবি জানান।
ডলার পার্টির সাথে যুক্ত মহাজনপুর গ্রামের জনৈক মোক্তার বলেন, আমি ভাল হয়ে গেছি। ভ্যান চালাই তারপরও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে আয়োজকদের একটা ব্যানার দেখা গেলেও তাদের কোন ভ‚মিকা দেখা যায়নি। তাদের ভ‚মিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। স্থানীয় চেয়ারম্যানকেও পর্যন্ত আয়োজকরা এড়িয়ে গেছেন। পরে অফিসার ইনচার্জ তাকে ডেকে নেন অনুষ্ঠানে।