
মেহেদী হাসান, খুলনা থেকে: পেছনের দুই পা বিছিন্ন অবস্থায় সুন্দরবন থেকে একটি বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। বন বিভাগের দাবি, কুমিরের কামড়ে মারা পড়েছে বাঘটি। শুক্রবার সকালে সুন্দরবনের আন্ধারমানিক বন ফাঁড়ির কাছ থেকে বেঙ্গল টাইগারের মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।
বাঘটির পেছনের দুই পা বিচ্ছিন্ন, সামনে একটি পায়ে পচন ধরেছিলো। রোববার মৃত বাঘটির ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে খুলনা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের দুইজন ভেটেনারি চিকিৎসক ও একজন প্রাণী সম্পদ কমকর্তা।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও মো. মাহমুদুল হাসান জানান, বনপ্রহরীরা তাদের নিয়মিত টহলের সময় কটকা অভয়ারণ্যের ছাপড়াখালী এলাকায় বাঘের মৃতদেহটি পড়ে থাকতে দেখেন। পরে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কার্যালয়ে আনা হয়। এটি স্ত্রী বাঘ (বাঘিনী)। এর দৈর্ঘ্য সাত ফুট ও উচ্চতা তিন ফুট। যৌথভাবে বাঘটির ময়নাতদন্ত করেছেন বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সাতক্ষীরার শরণখোলার প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. আলাউদ্দিন মাসুদ। ময়নাতদন্ত শেষে চামড়া সংরক্ষণ করে লাশটি মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
মাহমুদুল হাসান বলেন, “একটি বাঘ বন্য পরিবেশে খুব বেশি হলেও ১২ থেকে ১৪ বছর বাঁচে। বাঘটির আনুমানিক বয়স ১০ বছর। বাঘটির শরীরে কোনো গুলি বা আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাই প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করাছি, বার্ধক্যজনিত কারণেই বাঘটির মৃত্যু হয়েছে।”
বাঘ শিকারিদের দেওয়া বিষটোপ খাওয়ার কারণে বাঘটির মৃত্যু হতে পারে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুল হাসান বলেন, “বিষ খেয়ে মৃত্যু হলে বাঘের জিহ্বা নষ্ট হয়ে যায়। বাঘটির ক্ষেত্রে তেমন কোনো চিহ্ন পাননি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকেরা। তবে মৃত্যুর বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য স্যাম্পল হিসেবে জিহ্বাটি সংগ্রহ করা হয়েছে। এটি ঢাকায় বন বিভাগের ফরেনসিক ল্যাবে (আগারগাঁও) পাঠানো হবে। সেই রিপোর্ট পেলেই বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
এদিকে, বাঘের এমন মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে পাঁচ মাসের ব্যবধানে দুটি বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। গত ৩ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জের কাছ থেকে আরেকটি বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল বন বিভাগ। সেই বাঘটির এক পা বিচ্ছিন্ন ছিল। এর আগে গত বছরের আগস্টে আরেকটি বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সেটির গায়ে অবশ্য কোনো আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না।