
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মধ্যে কাটিয়া জেলখানার দক্ষিন পার্শ্বের এলাকাটি প্রায় ৩মাস যাবত জলাবদ্ধ হয়ে আছে। প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হওয়া স্বত্ত্বেও এ এলাকাটি যেন পৌর অভিভাবকহীন। জলাবদ্ধতার কথা এ ওয়ার্ডের কমিশনারকে একাধিক বার জানানোর পর তিনি এলাকার সাধারণ জনগণকে নানাবিধ আশ্বাস ও ভিত্তিহীন কাল্পনিক গল্প বলে রীতিমত তামাশা শুরু করছেন। সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা গেলো বর্ষা মৌসুম থেকে অদ্যবধি অত্র এলাকার ৫০টি পরিবার পানিবন্ধি হয়ে আছে। বর্তমানে পানি দুষিত হয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে এলাকার বৃদ্ধ থেকে শুরু করে শিশুরা। এলাকাবাসীরা প্রতিবেদককে জানান বেতনা নদীর আগেই ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মাছের ঘের থাকার কারনে এই এলাকার পানি সরানোর কোন উপায় নেই। এলাকাবাসীরা একত্রিত হয়ে কয়েকবার পৌরসভাকে অবহিত করা হয়েছে কিন্তুু পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি পানি নিষ্কাশনের আশ্বাস দিলেও কাল হয়ে দাড়িয়েছে কাউন্সিলর সেলিমের মাছের ঘের। এই জলাবদ্ধতা নিষ্কাশন করতে হলে কাউন্সিলরের মাছের ঘেরের উপর দিয়ে পানি সরাতে হবে কিন্তুু কাউন্সিলর কোনমতেই তার মাছের ঘেরের মধ্যে দিয়ে পানি সরাতে চাইছেনা বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এদিকে এলাকাবাসীদের চলাচলের জন্য জেলখানার পার্শ্বের রাস্তা দিয়ে চলাচল করার জন্য যে রাস্তাটি আছে সেই রাস্তা ছাড়া স্থানীয় আব্দুল আলিমের পৈতৃক সম্পতির উপর জোরপূর্বক ইট খোয়া ফেলিয়ে রাস্তা বানানোর পায়তারা চালাচ্ছে পৌরসভা। স্থানীয় ব্যাক্তি আব্দুল আলিম বলেন এই দূষিত পানি ১নং কাউন্সিলর সেলিমের মাছের ঘেরের কারনে আটকে আছে, মাছের ঘেরের মধ্যে দিয়ে পানি না সরিয়ে আমার ও আমার পারিবারিক সুত্রে পাওয়া পৈতৃক সম্পতির উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা তৈরী করছে পৌরসভা, আমি এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়রকে মৌখিক ভাবে জানালে তিনি আমার জমির উপর দিয়ে রাস্তা হবেনা বলে জানালেও মেয়রের নির্দেশ উপেক্ষা করে সেখানে রাস্তা হবে বলে হুমকি প্রদর্শন করছে কাউন্সিলর সেলিম, আব্দুল আলিম আরও জানান আমার জমি নিয়ে শরিকদের সাথে সাতক্ষীরা যুগ্ন জেলা জজ আদালতে মামলা চলছে, যেখানে আদালতে মামলা চলমান (মামলা নং দেওয়ানী ১৩১৭) আছে আদালতে মামলার কার্যক্রম নিষ্পতি না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কেউ চলাচল করতে পারবেনা বলে আদেশ থাকলেও আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে সেখানে কিভাবে রাস্তা তৈরী হয় সেই প্রশ্ন আব্দুল আলিমের ও তার পরিবারের।
উল্লেখ্য গত ১৭ আগস্টের প্রবল বর্ষণে শহরের অধিকাংশ এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়ীঘরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ডুবে যায়। কিছু এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল থাকায় পানি দ্রুত সরে গেলেও পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের জেলখানার দক্ষিন পার্শের এলাকাটি
এখনও ডুবে আছে।বারবার উক্ত এলাকার পৌর কাউন্সিলর সেলিমকে জানানোর পরও কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
এলাকায় জনশ্রুতি আছে উক্ত কাউন্সিলরের নিজের ঘেরের কারনে এই জলাবদ্ধতার মূল কারন এবিষয়ে এলাকাবাসীরা ভয়ে নাম বলতে রাজি হয়নি।
এদিকে দীর্ঘ দিন জলাবদ্ধ থাকায় এ এলাকার স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশার লার্ভার অস্তিত্ব দেখা যাচ্ছে যা রীতিমত মারাত্বক ক্ষতিকর। একদিকে জেলা প্রশাসন ডেঙ্গু প্রতিরোধে হার্ড লাইনে কাজ করছে আর অন্যদিকে ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উদাসীনতায় অত্র এলাকা এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যাবসায়ী জানান, এই দুষিত, কালো ঘোলা জল
বারবার পাড়ি দেওয়ার কারনে আমার পায়ে খোস পাঁচড়া দেখা দিয়েছে বলে তিনি তার পায়ের ক্ষতচিহ্ন দেখান। এলাকার শিশুরা এই পানি পার হয়ে স্কুলে যাতায়াতের কারণে অনেক শিশু চুলকানী ও খোস পাঁচড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাছাড়া পঁচা পানির দুর্গন্ধ এতোই প্রকট যে অনেকে বমি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন।এসব বিষয়গুলো ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বার বার জানানো হলেও তিনি কাল্পনিক গল্প সাজিয়ে নিজের মাছের ঘের রক্ষার স্বার্থে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করছেন প্রতিনিয়ত। ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচলের নামে একাধিক গল্প বানিয়ে সাধারণ জনগণের সাথে রীতিমত তামাশা করছেন এই কাউন্সিলর।এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে একাধিক বার কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত ফোনে কল করে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।