
নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে পাওয়া গেল ইয়াছিন আলীর মাথা। হত্যার ৫ দিনের মাথায় ঘাতক জাকির হোসেনকে আটকের পর তারই দেয়া তথ্যে তার হাত দিয়েই উদ্ধার করা হলো মাথাটি। মাত্র ২০ হাজার টাকার জন্য জবাই করে হত্যা করায় সাতক্ষীরার আলোচিত চা দোকানী ইয়াছিন আলীকে। এর আগে ৩১ আগস্ট বুধবার সকালে নিহত ইয়াছিন আলীর মাথা উদ্ধার করা হয়।
আটক হওয়া হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী জাকির হোসেন(৪৫) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা কথা র্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন। আটক জাকির হোসেন খুলনা শহরের বাচ্চু শেখের পুত্র। সাতক্ষীরা শহরের গড়েরকান্দা এলাকার বিয়ে করে দীর্ঘদিন ধরে সেখানেই বসবাস করে আসছিল।
র্যাবের বরাতে জানা যায়, ভিকটিম খুনির পূর্ব ব্যবসায়িক পার্টনা। ব্যবসার সুবাদে খুনি ভিকটিমের কাছে ২০ হাজার টাকা পাওনা ছিলো। কয়েকবার তাগিদ দেওয়া সত্বেও টাকা পরিশোধ করে নাই। যে কারণে অভিযুক্ত জাকির হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩০ আগষ্ট রাত ৯টার দিকে বাইপাস সড়কে ঘর উঠানোর কাজ করার কথা বলে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কে নিয়ে আসে ইয়াছিন আলীকে। রাত গভীর হলে সুযোগ বুঝে রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে ইয়াছিনের গলায় দা দিয়ে কোপ মারে। ইয়াছিন আলী মাটিতে পড়ে গেলে তখন এলোপাতাড়ী কুপিয়ে ইয়াছিনের শরীর হতে মাথা আলাদা করে অভিযুক্ত জাকির হোসেন। পরবর্তীতে মাথাবিহীন মৃত দেহ টেনে রাস্তার পার্শ্বে পানিতে ফেলে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক ১ কিলোমিটার দুরে ব্রিজের নীচে ডোবার মধ্যে মাথা ফেলে যায়। পরের দিন ৩১ আগষ্ট এলাকার লোকজন রাস্তায় পার্শ্বে পানিতে লাশ পড়ে আছে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এই সংক্রান্তে ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে সাতক্ষীরাসদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারের পর জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এর প্রেক্ষিতে র্যাবের একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের জানতে পারেযে মাথাবিহীন লাশের হত্যাকারীকে সাতক্ষীরা জেলার সদর থানাধীন আলীপুর এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ০৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা জেলার সদর থানাধীন আলীপুরের খালচরে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে সে এই হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাকে নিয়ে র্যাব-৬ এর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে খণ্ডিত মস্তকটি জলাশয় থেকে তুলে আনে।
ঘাতক জাকিরের দেওয়া জবানবন্দীর বরাত দিয়ে র্যাব-৬ এর খুলনাস্থ কমান্ডার লে. কর্নেল মোঃ মোশতাক আহমেদ বলেন, সে একাই এই হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে। সে আরও জানিয়েছে, শহরের সুলতানপুর এলাকার চা বিক্রেতা ইয়াসিন আলীর কাছে সে ২০ হাজার টাকা পেতো। দীর্ঘদিন ধরে এই টাকা না দেওয়ায় সে তাকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে। এরই জের হিসাবে ৩০ আগস্ট দিবাগত রাতে জাকির হোসেন বন্ধু ইয়াছিন কে একটি ভ্যানে করে কাজের কথা বলে বকচারা বাইপাস সড়কে ডেকে নিয়ে যায়। পরে সুযোগ বুঝে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করে। এসময় লাশটি জলাশয়ে ফেলে দিয়ে ১ কি.মি দূরে কামালনগর বাইপাসের কালভার্টের নিচে বস্তায় মুড়ে পানিতে ফেলে দেয়। তবে এই হত্যার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে র্যাব।