
নিজস্ব প্রতিবেদক: তালায় পৈত্রিক, এজমালী ও দানপত্র সুত্রে পাওয়া তিন একর জমি নিয়ে এলাকার ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা প্রকাশ্য জীবন নাশের হুমকি এবং জমি দখল করে নেওয়ার বিষয়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। আতংঙ্কগ্রস্ত হয়ে আছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যবৃন্দ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করেছেন স্থানীয় প্রশাসন।
দিনভর ওই জমিতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অন্যদিকে একটি সুত্রে জানা গেছে সিরাজুল ও তার বাহিনীরা নতুন পরিকল্পনা নিয়ে আজ আবার লিয়াকতদের ভিটাবাড়ি দখল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তথ্য মতে প্রকাশ, তালার মোবারাকপুর গ্রামের মৃত লস্কর শেখের তিন পুত্র হাবিল শেখ,কাবিল শেখ ও আকিমুদ্দিন শেখ। এই তিন ছেলে মধ্য আকিমুদ্দিন শেখ দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে তালা মৌজার এস এ খতিয়ান- ১৪৩, বুজরাত খতিয়ান নং ২০৬৫, ডি পি খতিয়ান নং- ৩৫, সাবেক দাগ নং ২৭৭ বি এস দাগ নং- ২১৫০ এর ২.৯৩৭৫ একর জমি ও এস এ দাগ নং ২৭৫ এর ১৯ শতক মোট প্রায় তিন একর জমি ভোগ করে করে আসছেন। কিন্তু উক্ত জমি নিয়ে নি:স্বত্ববান বেদখলীয় শরিক কাদের শেখের পুত্র আলহাজ¦ সিরাজ উদ্দীন শেখ ও সোবাহান শেখ, সরফুদ্দিন শেখ এলাকার চিহ্নিত ভ‚মিদস্যু ও সন্ত্রাসী বাহিনী বারুইহাটি গ্রামের মো:নুরো সরদারে ছেলে গোলজার সরদার, মশিয়ার সরদার, মকছেদ সরদারের পুত্র শফি সরদার, মহান্দী দাউদ মোড়লের পুত্র সিরাজুল ইসলাম মোড়ল, ঘোষনগর গ্রামের অমল ঘোষের পুত্র অজয় ঘোষসহ ৩০-৩১ গনের নিকট জরিপের ৩৫ ডিবির আকিমুদ্দিন শেখের নামের একক দখ নোট থাকায় এই জমি আইনগত ভাবে রেজিঃ হবে না। কিন্তু ৩৫ ডিবির জালিয়াতি পর্চা তৈরী করে পরোশপর যোগসাজেছে তঞ্চকী দলিল সৃষ্টি করেন। উক্ত তঞ্চকী দলিল বুনিয়াদে তারা সহকারী কমিশনার ভ‚মি অফিস হতে নামপত্তন করেন। উক্ত সকল নামপত্তনের বিরুদ্ধে ১৫০ ধারায় সহকারী কমিশনার ভ‚মি আদালতে উক্ত নাম পত্তনের বাতিলের দাবিতে মামলা দায়ের করা হয়। যার নং ৪৫/২১২২। বিজ্ঞ তালা সহকারী জজ আদালত সাতক্ষীরায় দেওয়ানী- ৫৮/১৪ নং একটি বাটোয়ারা মামলা চলমান ও তালা সিনিয়র সহকারী জজ আদালত সাতক্ষীরায় দেওয়ানি- ১/২২(তালা) নং একটি সুট ফর ইনজাশন (নিষেধাজ্ঞা) মামলায় নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা না মজ্ঞুর হলে উক্ত না মজ্ঞুর আদেশের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ দায়েরা জর্জ আদালতের মিস আপিল মামলা যার নং ১৫/২২ মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি সাতক্ষীরার বিজ্ঞ যুগ্ম জজ দ্বিতীয় নং আদালতে ২১/০৮/২২২ তারিখে আপিল শুনানীর দিন ধার্য রহিয়াছে।
প্রকাশ থাকে যে, মৃত লস্কর শেখের প্রথম পেুত্র হাবিল শেখের ওয়ারেশ মো: জাকির হোসেন শেখ ও মো: ইকবল হোসেন শেখ জানান, তাহার এই জমির পরিবর্ততে এজমালী স‚ত্রে অনত্র দখল করেন। বিধায় তাদের এই জমিতে কোন দাবি নেই। এবং আরও প্রকাশ থাকে যে উক্ত জমি নিয়ে ২০১৪ সালে তালা সদর ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে দায়ের করা ৩৪/১৪ নং মামলায় তিন ভায়ের মধ্য তালা মৌজার জমি আকমুদ্দিন শেখেকে দানপত্র করে দেওয়া দলিল অথাৎ যে দলিল দীর্ঘদিন যাবৎ লুকিয়ে রেখেছিলেন কাদের শেখের শেখের পুত্র আলহাজ¦ সিরাজ উদ্দীন শেখ। সেই দলিল আলহাজ¦ সিরাজ উদ্দীন শেখ গ্রাম আদালতে জমা দেন ।
এবিষয় সাবেক চেয়ারম্যান সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম বলেন, আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই জমির দানপত্র দলিল আদালতে জমাদেন। তিনি এঘটনা সত্যতা স্বীকার করেন।
এছাড়া তালা মৌজার নালিশি জমি মৃত আকিমুদ্দীন শেখের নামে একক ভাবে রেকর্ড হওয়ার কথা থাকলেও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এস এ রেকর্ড অনুযায়ী শরিক গনের নামে মাঠ পর্চা তৈরী হয়। কিন্তু মাঠজরিপের আমিন মাঠপর্চার ৯ এর কলমে আবুল কাশেম শেখ গং দের নামে অত্র খতিয়ানে দখল নাই মর্মে রেকর্ড প্রস্তুত হয়।জরিপের ৩০ ধারায় দোতরফা শুনানী অন্তে অভিযোগকারী দের আপত্তি মামলাটি শুনানি অন্তে ৯ এর কলমে দখল নোট কর্তন প‚র্বক তার পিতা আকিমুদ্দীন শেখ এর ১ নং ক্রমিকের নামের নিচে গ্রুপ লাইন টানেন এবং খতিয়ানের এর ১০ ক্রমিকে নামের নিচে অত্র খতিয়ানে আবুল কাশেম শেখ গংদের দখলে নাই মর্মে এক রায় প্রদান করেন। হাবিল শেখ ও কাদের শেখ এর ওয়ারিশ গন উক্তরায়ের বিরুদ্ধে আপত্তি মামালা জরিপের কোন স্থরে দাখিল করেন নাই। পারিবারিক আপোষের এটি একটি বড়ধরনের প্রমান বহন করে।
কিন্তু এই জমির বৈধ মালিক থাকার সত্বেও নিস্বত্ববান শরিকদের কাছ হতে ভ‚মিদস্যুও সন্ত্রাসী সিরাজুল মোড়ল, গোলজার সরদার, মশিয়ার সরদার, শফি সরদার, অজয় ঘোষ সহ আর অনেকে ১৫ শতক জমি জমির জাল- জালিয়াতি কাগজপত্র সৃষ্টি করে প্রতিনিয়ত দখল ও অবৈধ ভাবে আকিমুদ্দিনের ছেলেদের প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান সহ বেশ কয়েকদিন বৈধ জমির মালিকদের পরিবারের সদস্য উপর হামলা চালানো হচ্ছে। মালিকদের বাড়ির স্ত্রীরা সহ অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এছাড়া প্রকাশ থাকে যে, উক্ত জমির মধ্য কিছু জমি উপজেলা নির্বাহী অফিসের অফিস সহকারী মনিরুজ্জামান মনির নামে ও শাশুড়ীর নামে জমির জাল দলিল তৈরী করে জমি দখল করা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন। সে ওই জমিতে সরকারী ভাবে মুক্তিযোদ্ধার জন্য প্রাপ্ত একটি ঘর নির্মাণ করার জন্য পায়াতারা করছে। সে ইউএনও অফিস কর্মরত থাকায় এহন কর্মকান্ড চালাচ্ছে সন্ত্রাসী বাহিনীদ্বারা।
জমি নিয়ে মঙ্গলবার (২ ই আগস্ট) জমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসা করতে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ^াস, তালা থানার অফিসার ইনর্চাজ(ওসি)আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান, তালা সদর ইউনিয়নের নায়েব আনিছুর রহমান এর সামনে উপরে প্রকাশকৃত নামধারী ভ‚মদস্যু ও সন্ত্রাসীরা বলেন, আগামীকাল (৩ই আগস্ট) উক্ত জমি দখল দিব। জমি দখল দেওয়ার সময় তোরা পারলে ঠেকাস, কালকে জমি দখলের সময় ঠেকাতে আসলে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে,যে কয়জন আসবি সবাইকে খুন করে ফেলব।
এমতাবস্থায় জমির মালিক মৃত আকিমুদ্দিন শেখের ৪ পুত্র তাদের জমি রক্ষার্থে পাল্টা উত্তরে বলেন, আমাদের জীবন দিয়ে হলেও উক্ত জমি রক্ষা করা হবে। এমন পাল্টাপাল্টি বক্তব্যর প্রেক্ষিতে তালা উপজেলা জুড়ে চলছে আতংকের পরিবেশ। অবস্থা নিয়ে মঙ্গলবার রাতে মৃত আকিমুদ্দিন শেখের ৪ পুত্ররা তালা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তাদের জমি রক্ষার্থে ও বুধবার সকালে ঘটনা স্থলে দৈনিক সাতনদী পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান ও তার টিম এসে ফেসবুক লাইভ প্রদান করেন। বর্তমান উক্ত জমি নিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হতে পরিত্রাণের জন্য বিশেষ পুলিশ টিম মোতায়ন করা হয়েছে।
এবিষয়ে মৃত আকিমুদ্দিন শেখের পুত্র আলাউদ্দীন শেখ বলেন, আমাদের বৈধ জমি নিয়ে বেস্বত্ববান শরিকদের কাছ হতে নামমাত্র ১৫ শতক জমি ক্রয় করেন এলাকার ভ‚মিদস্যু সিরাজুল মোড়ল, গোলজার সরদার, মশিয়ার সরদার, শফি সরদার, অজয় ঘোষ সহ আর অনেকে। তারা গতকালকে ইউএনও ও ওসি সামনে আমাদের জমিতে যেতে নিষেধ করেন। সেখানে প্রবেশ করলে লাশ ফেলে দেওয়ার হুমিক প্রদর্শন করেন। তাহার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা বুধবার(৩ আগস্ট) জমি দখল করতে চেয়েছিল। আমারও জমিতে অবস্থান করছিলাম। তখন তালা থানার এসআই আসাদ এসে বলেন, এই বিরোধ প‚র্ণ জমি নিয়ে কোন প্রকারের রণক্ষেত্র হতে দেওয়া হবে না। এই জমি নিয়ে যেহেতু আদালতে মামলা চলমান তাই এই জমি থানা হেফাজাতে থাকবে। এই জমিতে যেকোন সময় রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে অসীম আশংকা করছি। এবং আমাদের জীবনহানী ঘটতে পারে।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান জানান, উক্ত জমি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা অবস্থার অবনতি হলে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যাহারা এদের সহিত জড়িত থাকবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।